জুমবাংলা ডেস্ক : উত্তরে হাওয়ার দাপটের সঙ্গে দ্রুত নামছে তাপমাত্রার পারদ। উত্তরের জেলাগুলো ছাপিয়ে দেশের মধ্যভাগে ক্রমে বাড়ছে শীতের তীব্রতা। জেঁকে বসছে কনকনে ঠাণ্ডা। মাত্র এক দিনের ব্যবধানে রাজধানী ঢাকাসহ প্রায় সারাদেশে ৪ থেকে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা হ্রাস পেয়েছে। আবহাওয়া বিশ্লেষকরা বলছেন, আগামী পরশু (বৃহস্পতিবার) থেকে বছরের প্রথম শৈত্য প্রবাহ শুরু হতে পারে। বৃহস্পতি ও শুক্রবার তাপমাত্রা ৯ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আজ মঙ্গলবার থেকে রাতের তাপমাত্রা আরও কমতে শুরু করবে। আগামীকাল বুধবার রাতের তাপমাত্রা এক থেকে তিন ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত কমে যেতে পারে। তবে দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম আজাদ বলেন, ডিসেম্বরের শুরুতেই শীত নামার কথা থাকলেও ঘূর্ণিঝড়ের কারণে তা দেরি হয়েছে। আগামী ১৪ ডিসেম্বর থেকে দেশের উত্তরাঞ্চলসহ বেশ কিছু এলাকার ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ প্রবাহিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বিশেষ করে রাজশাহী, রংপুর, খুলনা বিভাগের যশোর, কুষ্টিয়া, সিলেটের শ্রীমঙ্গল, দিনাজপুর, লালমনিরহাট, ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড় জেলার কোথাও কোথাও তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে যেতে পারে। তিনি জানান, গতকাল দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে নওগাঁর বদলগাছিতে ১১ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়া ও জলবায়ু গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ও আমেরিকান আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল বিশ্লেষণ করে বলেন, রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের জেলাগুলোর ওপরে আজ মঙ্গলবার থেকে তাপমাত্রা দ্রুত কমতে থাকবে। আজ সকাল ৬ টার দিকে দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১২ থেকে ১৩ ডিগ্রির মধ্যে নেমে আসতে পারে। আগামী পরশু রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের কোন কোন জেলায় শুরু হতে যাচ্ছে বছরের প্রথম শৈত্য প্রবাহ। বৃহস্পতি ও শুক্রবার তাপমাত্রা ৯ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা যাচ্ছে আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেলগুলোতে। তিনি বলেন, গতকাল সোমবার সকাল বেলায় রংপুর,ময়মনসিংহ,সিলেট, ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের বেশীরভাগ জেলা মাঝারি থেকে ভারি কুয়াশার চাদরে ঢাকা ছিল। রংপুর,ময়মনসিংহ,সিলেট বিভাগের জেলাগুলোতে সকাল ১০ টা পর্যন্ত সূর্যের আলো দেখা যায়নি। রাস্তায় লোকজন কম ছিল। হেডলাইট জ্বালিয়ে সড়কে গাড়ি চলাতে হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকাল ১০ টার মধ্যে রংপুর,ময়মনসিংহ,সিলেট, ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলোর উপরে ঘন থেকে খুবই ঘন কুয়াশায় আবৃত থাকার প্রবল আশঙ্কা রয়েছে। তিনি বলেন,আজ রাতে মহাসড়কগুলোতে দৃষ্টিসীমা ১০০ থেকে ৩০০ মিটারের নীচে নেমে আসার আশঙ্কা রয়েছে। ফলে দুর্ঘটনার প্রচণ্ড ঝুঁকি রয়েছে।
এদিকে গতকাল ঘনকুয়াশার কারণে ফেরি চলাচল মধ্যরাত থেকে দুপুর পর্যন্ত বন্ধ ছিল। ঢাকায় বিকালেও কুয়াশা ছিল। গতকাল ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৬ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটিও চলতি মৌসুমে ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা।
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আজ মঙ্গলবার অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের উত্তরাঞ্চলে ও নদী অববাহিকায় মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা এবং দেশের অন্য এলাকায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
আগামীকাল বুধবারের পূর্বাভাসে বলা হয়, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের উত্তরাঞ্চলে ও নদী অববাহিকায় মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা এবং দেশের অন্যত্র হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা ১-৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস হ্রাস পেতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।