নিজস্ব প্রতিবেদক : অনার্স পাসের জাল সার্টিফিকেট ব্যবহার করে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার বাহাদুরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি হওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক সাংবাদিকের বিরুদ্ধে। রাশেদুল হক রায়হান নামের ওই সাংবাদিক দেশের প্রথমসারির জনপ্রিয় একটি জাতীয় পত্রিকার গোয়ালন্দ উপজেলা প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। তিনি একইসাথে উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সদস্য।
জানা যায়, ২০২৩ সালের ৩১ অক্টোবর ওই স্কুলের ব্যবস্থাপনা কমিটির সিদ্ধান্তে সভাপতি নির্বাচিত করা হয় মো. রাশেদুল হক রায়হানকে। সভাপতি হওয়ার পর উপজেলা শিক্ষা অফিসের অনুমোদনের জন্য তিনি “দি ইউনিভার্সিটি অব কুমিল্লা, বাংলাদেশ” নামের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চার বছর মেয়াদী গণমাধ্যম ও সাংবাদিকতা পাসের সনদ দাখিল করেন। গত ৩১ অক্টোবর অনুষ্ঠিত বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক ১ নভেম্বর হতে নতুন কমিটি কার্যকর হওয়ার কথা ছিল। নবগঠিত কমিটির সভাপতি মো. রাশেদুল হক রায়হানের শিক্ষা সনদ নিয়ে সন্দেহ হওয়ায় উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ওই কমিটির অনুমোদন দেননি।
গোয়ালন্দ উপজেলা শিক্ষা অফিস সুত্র জানায়, কমিটির অনুমোদনের জন্য মো. রাশেদুল হক রায়হান “দি ইউনিভার্সিটি অব কুমিল্লা, বাংলাদেশ” থেকে ইস্যুকৃত অনার্স পাসের সার্টিফিকেট দাখিল করেছেন। সেখানে পাসের সন দেয়া আছে ২০২২ সাল। কিন্তু শিক্ষা সনদে অর্জিত ফলাফল (সিজিপিএ) উল্লেখ না থাকায় সন্দেহ হলে বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির অনুমোদন দেয়া হয়নি।
গোয়ালন্দ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. কবির হোসেন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) ওয়েবসাইটে দি ইউনিভার্সিটি অব কুমিল্লা বাংলাদেশের নাম খুজে পাওয়া যায়নি। তাই সনদটি নিয়ে আমাদের সন্দেহ রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ইউজিসির নির্দেশনা মোতাবেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্জিত ডিগ্রির মূল সার্টিফিকেট-এ স্বাক্ষরকারী হবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য কর্তৃক নিয়োগকৃত ভাইস-চ্যান্সেলর এবং পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক। প্রায় দুই বছর আগে পাস করেও তিনি মূল সনদ জমা না দিয়ে প্রভিশনাল সনদ জমা দিয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) কর্তৃপক্ষ জানায়, অবৈধ ক্যাম্পাস ও অবৈধ ভাবে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনাকারী ৩টি বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিতে রেড এলার্ট জারি করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হলো: ইবাইস ইউনিভার্সিটি, আমেরিকা বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি, দি ইউনিভার্সিটি অব কুমিল্লা। এই তিন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাময়িক অনুমতি পত্রের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০-এর ১২(১) ধারা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়টির কার্যক্রমের আর কোনো আইনগত ভিত্তি নেই।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালক ওমর ফারুক বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শুধু নামটা আছে আর কিছু নাই। ২০২২ সালে কিভাবে ওই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সনদ ইস্যু করা হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই সনদ অবৈধ। তাদের সনদ ইস্যু করার এখতিয়ার নাই। তাদের ভিসি নাই, অনুমোদন নাই, সনদ দেয় কিভাবে। তারা যে সনদ দিয়েছে তা সম্পূর্ণ অবৈধ।
বিষয়টি নিয়ে মো. রাশেদুল হক রায়হানের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।