আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মিয়ানমারের নারী-পুরুষদের সেনাবাহিনীতে যোগদান বাধ্যতামূলক করেছে জান্তা সরকার। জাতিগত বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর কাছে একের পর এক যুদ্ধে পরাজয়ের মুখে গতকাল শনিবার মিয়ানমার জান্তা এই ঘোষণা দিয়েছে। দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের বরাতে খবরটি দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
ঘোষণায় বলা হয়েছে যে, ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সী সকল পুরুষ এবং ১৮ থেকে ২৭ বছর বয়সী নারীদের অবশ্যই দুই বছর পর্যন্ত সামরিক পরিষেবা দিতে হবে। এ ছাড়া, অনূর্ধ্ব ৪৫ বছর বয়সী বিশেষজ্ঞ যেমন, চিকিৎসকদেরও অবশ্যই তিন বছর সামরিক পরিষেবা দিতে হবে।
চলমান জরুরি অবস্থায় পরিষেবাটি পাঁচ বছর বাড়ানো যেতে পারে বলেও জানিয়েছে রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম। যারা এই আদেশ উপেক্ষা করবে, তাদের ৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হবে বলেও জানান হয়েছে এই আইনে।
জান্তার মুখপাত্র জাও মিন তুন রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমকে বলেন, ‘জাতিকে রক্ষা করার দায়িত্ব সৈন্যদের ছাড়িয়ে সকল নাগরিকের জন্যই প্রসারিত করা হয়েছে। তাই আমি গর্বিতভাবে জনগণকে সামরিক পরিষেবা আইন অনুসরণ করার কথা বলতে চাই।’
মিয়ানমারে ২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করে সামরিক বাহিনী। এরপর থেকেই দেশটির বিদ্রোহী গোষ্ঠী ও জান্তা বাহিনীর মধ্যে চলছে সংঘাত। গত তিন বছরে গৃহযুদ্ধ মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে দেশটির অর্থনীতি ও সমাজব্যবস্থায়।
এরই মধ্যে দেশের বহু এলাকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে জান্তা সরকার। ক্রমেই বিদ্রোহী জোট শক্তিশালী হয়ে উঠছে। ২০২৩ সালে সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে ঐক্য হলে যুদ্ধ গতি পায়। জান্তা বাহিনীর স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কাউন্সিল (এসএসি) বিভিন্ন এলাকায় ধারাবাহিক পরাজয়ের স্বাদ পেতে থাকে। এতে জান্তা বাহিনী বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। সেনাবাহিনীর মধ্যে শৃঙ্খলা এবং মনোবল ভেঙে পড়েছে, অভিজাত বিভাগগুলোর মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য বিনষ্ট হয়েছে।
১৯৬২ সালে ব্রিটিশ উপনিবেশের কাছ থেকে ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে এবারই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে জান্তা সরকার। বাধ্যতামূলক সেনা নিয়োগের এই আইনটি ২০১০ সালে প্রণয়ন করা হলেও তাই এবারের আগে তা কার্যকর করা হয়নি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, নতুন সেনা নিয়োগের ব্যাপারে হিমশিম খেয়ে যাচ্ছে মিয়ানমার সরকার। বেসামরিক কর্মীদের ফ্রন্টলাইনে যুদ্ধ করতে বাধ্য করা শুরু হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।