বিনোদন ডেস্ক: বিবেক অগ্নিহোত্রীর(Vivek Agnihotri) ছবি ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস'(The Kashmir Files) নিয়ে সরগরম ভারত। এই ছবি প্রশংসা ও সমালোচনায় বিভক্ত সিনেপ্রেমীরা। কারোর মতে এটি নেহাতই বিজেপির প্রচারমূলক ছবি কারোর মতে আবার এই ছবি সাহসী কারণ কাশ্মীর(Kashmir) থেকে হিন্দু(Hindu) পন্ডিতদের উৎখাত নিয়ে সেভাবে কখনই ছবি তৈরি করেনি বলিউড। বিধু বিনোদ চোপড়া এই ঘটনা নিয়েই বানিয়েছিলেন শিকারা। কিন্তু প্রচারের আলো পায়নি সেই ছবি। আপাতত অনুপম খের(Anupam Kher), মিঠুন চক্রবর্তী(Mithun Chakraborty), পল্লবী যোশী(Pallabi Joshi), দর্শন কুমার(Darshan Kumar) অভিনীত এই ছবি নিয়ে উত্তাল গোটা দেশ। ছবি দেখে সোশ্যাল মিডিয়ায়(Social Media) নিজের প্রতিক্রিয়া জানালেন সাহিত্যিক তসলিমা নাসরিন(Taslima Nasrin)।
তসলিমা লেখেন, ‘বিবেক অগ্নিহোত্রী লোকটিকে আমি বিভিন্ন কারণে পছন্দ করি না। আমি তাঁর কোনও ছবি দেখিনি। দেখার ইচ্ছেও কোনওদিন হয়নি। আমার ভাইপোকে অভিনব একটি সিনেপ্লেক্স দেখাতে নিয়েই দ্য কাশ্মীর ফাইলস ছবিটি দেখা হয়েছে আমার। ছবির এক পর্যায়ে এসে আমার ভয় হলো, হলে যদি কোনও মুসলমান দর্শক থাকে, তাহলে হয়তো হলের ভেতরেই তাকে পিটিয়ে মেরে ফেলবে হিন্দুরা।
এই ছবি হিন্দুদের উত্তেজিত করবে, ক্রোধান্বিত করবে, প্রচণ্ড মুসলিম-বিদ্বেষ তৈরি করবে। কাশ্মীরের হিন্দুদের ওপর কাশ্মীরি মুসলমানদের ভয়াবহ অত্যাচারের গ্রাফিক চিত্র দেখানো হয়েছে ছবিটিতে। একবার নয়, বার বার, বার বার। ইহুদিদের বিরুদ্ধে নাৎসি বাহিনীর নৃশংসতার কথা সকলেই জানে। কিন্তু কাশ্মীরি পন্ডিত বা কাশ্মীরি হিন্দুদের বিরুদ্ধে কাশ্মীরি মুসলমানদের অত্যাচারের কাহিনী দুনিয়ার বেশি লোক জানে না। ছবি দেখতে দেখতে দর্শকদের আর্তস্বর শুনেছি। যদি যা দেখানো হয়েছে, তা সত্যি হয়, কোনও অর্ধ-সত্য না থাকে গল্পে, যদি অতিরঞ্জিত না হয় বর্ণনা, তাহলে বলবো কাশ্মীরি পন্ডিতদের ওপর অত্যন্ত অন্যায় হয়েছে, কাশ্মীরে বাস করার অধিকার তাদের অচিরে ফেরত পাওয়া উচিত।”
দ্য কাশ্মীর ফাইলস দেখে ভীত তসলিমা আস্থাও রেখেছেন হিন্দুদের উপর। তিনি লেখেন,”এই ছবি, আগেই বলেছি, হিন্দু দর্শকদের মধ্যে মুসলিম(Muslim) বিদ্বেষ বাড়াবে। মুসলিমরা তাদের হিন্দু-বিদ্বেষ নিয়ে যত দূর যেতে পারে, হিন্দুরা তাদের মুসলিম- বিদ্বেষ নিয়ে তত দূর কি যেতে পারে? ভায়োলেন্স কে কার চেয়ে বেশি পারে, তার একটা প্রতিযোগিতা হোক চাইনা। দেশভাগের সময় কী করে হিন্দু মুসলমান একে অপরকে কচুকাটা করেছে –আমরা সব গল্প শুনেছি, পড়েছি, তথ্যচিত্রও দেখেছি। পরস্পরের প্রতি তাদের ঘৃণা এত বেশি ছিল যে ১০ লক্ষ লোককে জীবন দিতে হয়েছিল। হিন্দুরা ক’টা মুসলমান মেরেছিল, মুসলমানরা ক’টা হিন্দু মেরেছিল তার হিসেব আমার কাছে নেই। সব কিছুর পরও গোপনে বিশ্বাস জন্ম নেয় যে হিন্দুরা মুসলিম নিধন করবে না। মুসলিমদের মধ্যে অনেকে নানা রাজনৈতিক কারণে জেহাদি হয়ে উঠেছে, কিন্তু হিন্দুরা সন্ত্রাসী হওয়ার সুযোগ তেমন পায়নি। কোনও এক কালে কিছু মুসলিম অন্যায় করেছিল, তার মানে এই নয় যে সকল মুসলিম অপরাধী। অপরাধী এবং নিরপরাধের মধ্যে হিন্দুরা পার্থক্য করবে। নিরপরাধ কারওর গায়ে হাত তুলবে না তারা, এ আমার বিশ্বাস।”
সুইমিং পুলের ধারে বসেই উত্তাপ ছড়ালেন নেহা, ছবি দেখেই ঘুম উড়েছে তরুণদের
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।