সাইফুল ইসলাম, মানিকগঞ্জ : মানিকগঞ্জে বেসরকারি ক্লিনিক বলাকা জেনারেল হাসপাতালে সিজার অপারেশনের মাধ্যমে জন্মের পরপরই পায়ের হাড় ভেঙ্গে দি-খণ্ডিত হয়েছে এক নবজাতকের।
জানা গেছে, শুক্রবার সন্ধ্যার পর বলাকা জেনারেল হাসপাতালে সিজার অপারেশনের মাধ্যমে জন্ম হয় ওই নবজাতকের। জন্মের পর শিশুটির পা স্বাভাবিক অবস্থায় নেই বলে শিশুটির বাবাকে জানায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এরপর শিশুটিকে দ্রুত শিশু বিশেষজ্ঞ কোন চিকিৎসককে দেখাতে বলেন তারা। ওই দিন রাত বেশি হয়ে যাওয়ায় শিশু বিশেষজ্ঞ কোন চিকিৎসক না পেয়ে পর দিন শনিবার দুপুরে মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায় নবজাতকের বাবা। সেখানেও শিশু বিশেষজ্ঞ কোন চিকিৎসক না পেয়ে রবিবার অন্য একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ওই নবজাতককে। সেখানকার চিকিৎসক শিশুটির পায়ের এক্স-রে পরীক্ষা করে জানান শিশুটির পায়ের হাড় ভেঙ্গে হয়ে গেছে।
শিশুটির বাবা জাহিদ হোসেন দাবি করেন, জন্মের সময় তার বাচ্চার পা একটু বাকা ছিল, তবে ভাঙ্গা ছিলনা। তিনি বলেন, অপারেশনের পর একজন নার্স এসে আমাকে বলেছে, আপনার বাচ্চার পা অ্যাবনরমাল (অস্বাভাবিকরকম বাঁকা) ছিল, তাই ডাক্তার একটু টেনে সেটা ঠিক করার চেষ্টা করেছে। আপনার বাচ্চাকে দ্রুত শিশু ডাক্তার দেখান।
তিনি আরোও বলেন, বাচ্চা জন্মের পর থেকেই অস্বাভাকিবভাবে কান্না করছিল, আমরা বাচ্চার গায়ে তেল বা অন্য কিছু মালিশ করিনি যে আমাদের কাছ থেকে সমস্যা হবে। শিশু ডাক্তার কবিরুল আলম স্যারের কাছে যাওয়ার পর তিনি এক্স-রে করে বলেছেন বাচ্চার পা ভেঙ্গে গেছে। অপারেশনের পর কোন সমস্যা না থাকলে হাসপাতালের লোকজন কেন বার বার শিশু ডাক্তার দেখাতে বলেছে? তারা নিশ্চয়ই জানতো বাচ্চার কোন সমস্যা হয়েছে, তাই আমাকে বার বার শিশু ডাক্তারের কাছে যেতে বলেছে। তারা আমাদের বলেনি যে বাচ্চার পা ভেঙ্গে গেছে, আজকে পরীক্ষা নিরীক্ষার পর সেটা জানতে পেরেছি।
তবে নবাজতক শিশুর পা ভেঙ্গে যাওয়ার বিষয়ে দায় এড়িয়ে বলাকা জেনারেল হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো: সাজমুল হক বাবু বলেন, অপারেশনের সময় আমরা সেখানে ছিলাম না। কার কাছ থেকে পা ভেঙ্গেছে জানিনা। ডাক্তারের কাছ থেকেও ভাঙতে পারে, আবার বাচ্চার পরিবারের লোকজনের কাছ থেকেও ভাঙতে পারে।
সিজার অপারেশনের সময় চিকিৎসকদের সহযোগী হিসেবে উপস্থিত থাকা হাবিব (ম্যাটস) বলেন, বাচ্চার পা ভাঙ্গার বিষয়টি জানলাম আজকে। জন্মের সময়ই বাচ্চাটির পা অ্যাবনরমাল ছিল, এরপর তাকে শিশু ডাক্তার দেখাতে বলেছিলাম, কিন্ত তারা দেখায়নি। তবে বাচ্চার পা কিভাবে ভেঙ্গেছে সেটা আমার জানা নেই।
এ নিয়ে সিজার অপারেশন করা সার্জন ডা: শ্যামলী আক্তারের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমি অপারেশন করার সময় সবকিছু ঠিকঠাক ছিল। আমি সুস্থ বাচ্চা রোগীর লোকজনকে বুঝিয়ে দিয়েছি। পরে কিভাবে পা ভেঙ্গেছে আমি জানিনা।
এ বিষয়ে মানিকগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা: মোয়াজ্জেম আলী খান চৌধুরী বলেন, নবজাতকের পা ভাঙ্গার বিষয়ে আপনার কাছ থেকে শুনলাম। তবে ভুক্তভোগী পরিবার আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ জানালে আমরা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।