বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক : পৃথিবীর উপর কী কী রয়েছে তা আমরা দেখতে পাই। কিন্তু ভূভাগের তলায় পৃথিবীর কেন্দ্র পর্যন্ত রয়েছে যে বিরাট জগত তার কতটুকুই বা আজ পর্যন্ত জানতে পেরেছেন বিজ্ঞানীরা?
কিন্তু সম্প্রতি গবেষণায় উঠে আসা একটি তথ্য চমকে দিয়েছে সবাইকে। ইউনিভার্সিটি অফ সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়ার বিজ্ঞানীরা একটি যুগান্তকারী আবিষ্কার করেছেন। জানা গিয়েছে, প্রায় ২০১০ সাল থেকে গ্রহের পৃষ্ঠের সঙ্গে পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ কোর বা কেন্দ্রের ঘুর্ণন ধীর হয়ে আসছে। নেচার জার্নালে এই তথ্যটি প্রকাশিত হয়েছে।
কয়েকদিন আগেই বিজ্ঞানীরা জানিয়েছিলেন যে, পৃথিবীর উপরিভাগ যে অভিমুখে ঘুরছে, তার কেন্দ্র ঘুরছে ঠিক বিপরীত অভিমুখে। শুধু তাই নয়, কিছুদিন আগেই পৃথিবীর কেন্দ্র ঘোরা থমিয়ে দিয়েছিল। তারপর থেকেই নাকি এটি ঘুরছে উলটো মুখে।
গবেষকরা জানিয়েছেন, এই স্তরটির একটি সমৃদ্ধ অভ্যন্তরীণ কাঠামো রয়েছএ এবং এটি বাইরের মূল পরিচলনের প্যাটার্কে প্রভাবিত করে এবং তাই জন্যই পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্রকে প্রভাবিত করে।
পৃথিবীর চারটি প্রধান স্তর রয়েছে। কঠিন অভ্যন্তরীণ লোহা এবং নিকেল দিয়ে গঠিত। বাইরের কোরটি তরল, যা চৌম্বক ক্ষেত্র তৈরি করে। এছাড়াও রয়েছএ সান্দ্র আবরণ, প্লেট টেকটোনিক্স ড্রাইভিং পরিচলন স্রোত সহ পাতলা-কঠিন ভূত্বক। যেখানে দীবন বিদ্যমান রয়েছে। সেখানে ভূতাত্বিক কার্যকলাপও ঘটে।
ভেতরের কোরটি বাইরের তরল দ্বারা পরিবেষ্টিত একটি কঠিন লোহা-নিকেলের গোলকের মতো। এটির আকার অনেকটা চাঁদের মতো। যদিও এটা সরাসরি দেখা যায় না। গবেষকরা ভূমিকম্প এবং পারমাণবিক পরীক্ষার দ্বারা উৎপন্ন সিসমিক তরঙ্গ বিশ্লেষণ করে এর আচরণ জানতে পারেন।
বিজ্ঞানীরা কী খুঁজে পেয়েছেন?
১৯৯১ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে দক্ষিণ স্যান্ডউইচ দ্বীপপুঞ্জের আশেপাশে ১২১টি পুনরাবৃত্তিমূলক ভূমিকম্পের ডেটা এবং সেই সঙ্গে সোভিয়েত, ফরাসি এবং আমেরিকান পারমাণবিক পরীক্ষার ডেটা বিশ্লেষণ করা হয়েছে।
বিজ্ঞানী ভিডাল জানিয়েছেন, ‘যখন আমি প্রথম সিসমোগ্রামগুলি দেখেছিলাম যা থেকে এই পরিবর্তনের ইঙ্গিত পেয়েছিলাম, তখন আমি স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু যখন আমরা একই প্যাটার্নের সংকেত আরো দুই ডজন পর্যবেক্ষণ খুঁজে পাই তখন এর ফলাফলটি অনিবার্য ছিল। জানা গিয়েছে বহু দশকের মধ্যে প্রথমবারের মতো ভিতরের কোরটি ধীর হয়ে গিয়েছিল।’
কী কারণে এমনটা হয়েছে?
বিজ্ঞানীদের মতে, অভ্যন্তরীণ কোরের স্লো বা ধীর গতির হওয়ার কারণে পৃতিবীর চৌম্বক ক্ষেত্র তৈরি করে এবং ওভারলাইন পাথুরে আবরণের ঘন অঞ্চল থেকে মহাকর্ষীয় টাগ তৈরি করে।
যদিও পৃথিবী পৃষ্ঠের উপর এর প্রভাব খুব কম হবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।