জুমবাংলা ডেস্ক : মৌসুমের শেষভাগে রসালো ও সুস্বাদু ফজলি আর আশ্বিনা আমের মিষ্টি সুগন্ধে এখন ভরে উঠেছে আমের রাজধানী চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাজারগুলোতে। তারা বলছেন দাম বেশি হলেও বাজারে আমের চাহিদা অনেক, বাজারে ক্রেতা থাকায় বেচাকেনাও ভাল হচ্ছে। যেখানে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলছে আমের বেচাকেনা।
আরও এক থেকে দেড় মাস পর্যন্ত আম পাওয়া যাবে জেলার বৃহৎ কানসাট আমবাজারসহ অন্যান্য স্থানে। আর পাওয়া যাচ্ছে ফ্রুটব্যাগিংয়ের ফজলি আম, আশ্বিনা, বারি-৪ ও কাটিমন জাতের আম। চলতি মৌসুম জুড়ে আমের বিক্রির পরিমাণ দাঁড়াবে ২ থেকে ২ হাজার ৫শো কোটি টাকা বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
কৃষি বিভাগ জানায়, প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে এবার আমের উৎপাদন কম হলেও আশ্বিনা, বাড়ি-৪ ও কাটিমন জাতের আমের উৎপাদন ভাল হয়েছে। কয়েক বছরের তুলনায় চলতি মৌসুমে মুকুল দেরিতে আসার পাশাপাশি ফলন কম হয়েছে। তবে সে তুলনায় বড় গাছের চেয়ে ছোট গাছে আমের ফলন ভালো হওয়ায় আমচাষীসহ বাগান মালিকরা ক্ষতি পুষিয়ে নিয়েছে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, গোলাপভোগ, ল্যাংড়া, ক্ষিরসাপাতহ গুটি জাতের আম দিয়েই মৌসুম শুরু হলেও শেষ পর্যায়ে ফ্রুটব্যাগিংয়ের ফজলী আমসহ আশ্বিনা, বাড়ি-৪ ও কাটিমন জাতের আম বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। যা বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। জেলায় এবার আম উৎপাদন কম হলেও দাম ভাল থাকায় আমচাষি ও বাগান মালিকরা লাভবান হয়েছেন।
আমচাষি ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, এ বছর উপযুক্ত বাজার ব্যবস্থাপনা, নায্য দাম ও বাইরে থেকে ব্যবসায়ীরা আসার পাশাপাশি লনলাইনে বিক্রি হওয়ায় বিক্রেতারা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেছেন। এবার মৌসুমের শুরুতেই গোপাল ভোগ, ক্ষিরসাপাত, লক্ষণভোগ, ল্যাংড়া ৩ হাজার-৩৫শো টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। আর বর্তমানে ফজলি আম ৫৪শো টাকা মণ, আশ্বিনা আম সাড়ে ৩ হাজার টাকা মণ, বারি-৪ ও কাটিমন আম ৫২শো থেকে ৬ হাজার টাকা মণ দরে বেচা কেনা চলছে।
এদিকে, আম মৌসুমে চাঙ্গা হয়ে উঠেছে জেলার অর্থনীতি। বর্তমানে জেলা জুড়ে প্রতিদিন বেচা-কেনা হচ্ছে প্রায় ৭০-৮০ কোটি টাকার আম। তহাবাজারের আম ব্যবসায়ী আব্দুর রাকিব ও কাইউম জানান, শুরু থেকেই আমের দাম ভাল থাকায় গতবারের তুলনায় এবার তারা বেশ লাভবান হয়েছেন। কানসাটের পাশাপাশি বর্তমানে ফ্রুটব্যাগিং আশ্বিনা, বারি-৪ ও কাটিমন জাতের আম এই বাজারেও বিক্রি হচ্ছে। ক্রেতাদের আগ্রহ থাকায় চাহিদানুযায়ী আম ভালই বিক্রি হচ্ছে।
বাগান মালিক ছত্রাজিতপুরের হারুনুর রশিদ জানান, তার ১৫ বিঘার আমবাগানে বারি-৪, কাটিমন ও ফজলি আম রয়েছে। গত বছর দাম ভাল না পাওয়ায় এবার আমের শুরুতেই দাম ভাল পেয়েছেন। তাই এবার পুষিয়ে নিতে পারবেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত পর্যন্ত আমের দাম কৃষকদের অনুকূলেই রয়েছে।
এদিকে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম জানান, প্রাকৃতিক নিয়মে আম পাকার কারণে এবার আম পাড়ার কোনো সময়সীমা নির্ধারণ না করায় এবার বাজারে পরিপক্ক আম বাজারজাত হয়েছে। তুলনামুলক এবার আমচাষি ও ব্যবসায়ীরা দাম ভাল পাওয়ায় তারা আগামীতে আরও উৎসাহিত হবেন।
তবে এবার বিক্রির লক্ষমাত্রা ২হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবার সম্ভাবনা রয়েছে। জেলায় চলতি মৌসুমে ৩৮ হাজার হেক্টর জমির বাগান থেকে ৩ লাখ ১৫ হাজার মেট্রিক টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি বিভাগ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।