আন্তর্জাতিক ডেস্ক : জীবাশ্মজাত জ্বালানি উৎপাদনে যেসব অঞ্চল এগিয়ে তার মধ্যে অন্যতম মধ্যপ্রাচ্য। সেই মধ্যপ্রাচ্যই এখন ঝুঁকছে ভবিষ্যতের নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে। পরিবেশের ক্ষতি কমাতে তারা বেছে নিয়েছে এ নতুন প্রযুক্তি। নবায়নযোগ্য জ্বালানির এই প্রযুক্তির নাম ‘গ্রিন হাইড্রোজেন’। সূত্র: ডেইলি সাবাহ
এই নতুন প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ করছে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ওমান।অপরিশোধিত তেল বা গ্যাসের ব্যবহার কমিয়ে জলবায়ুবান্ধব জ্বালানি তৈরির লক্ষ্যে তারা এ পথ বেছে নিয়েছে। গ্রিন হাইড্রোজেন বা সবুজ হাইড্রোজেন প্রযুক্তিতে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার করে তড়িৎ বিশ্লেষণের মাধ্যমে পানি থেকে হাইড্রোজেন তৈরি করা হয়।
এখানে নবায়নযোগ্য জ্বালানি হিসেবে বায়ুবিদ্যুৎ, সৌরবিদ্যুৎ ও পানিবিদ্যুৎ ব্যবহার করা হয়। এসব বিদ্যুৎ উৎস থেকে শক্তি ব্যবহার করে যে হাইড্রোজেন পাওয়া যায়, তা পরবর্তী সময়ে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। আধুনিক এই প্রযুক্তির ব্যবহারের ফলে কার্বন নিঃসরণ শূন্যের কোঠায় নেমে আসে। ফলে পরিবেশ দূষণ কমে আসে।
নতুন এই প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে শিগগিরই সফলতা আসবে, এমনটা ধারণা করছেন না বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, এই প্রক্রিয়ায় জ্বালানি পেতে আরও কয়েক বছর সময় লাগতে পারে। এরপরও আরব দেশগুলো সেই পথেই হাঁটছে। বিশেষজ্ঞরা আরও বলছেন, বর্তমানে তারা তেল উৎপাদনে অন্যতম। তবে এই খাতে লভ্যাংশ কমে আসছে দিন দিন। ভবিষ্যতেও জ্বালানি খাতে নিজেদের অবস্থান ধরে রাখতে সবুজ হাইড্রোজেন প্রযুক্তি অবলম্বন করছে তারা।
এ প্রসঙ্গে যুক্তরাজ্যের খিংকট্যাঙ্ক চ্যাথাম হাউসের ফেলো করিম এলজেন্ডি বলেন, বৈশ্বিক হাইড্রোজেন বাজারে নিজের সুসংহত অবস্থান গড়ে তুলতে এই পথে অগ্রসর হয়েছে উপসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলো। তিনি আরও বলেন, জীবাশ্ম জ্বালানি বাজার ধরার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে তারা। এরপরও এই অঞ্চলের দেশগুলো দেখতে পাচ্ছে, ভবিষ্যতে হাইড্রোজেন হবে গুরুত্বপূর্ণ জ্বালানি।
সবুজ হাইড্রোজেন উৎপাদনে বড় বিনিয়োগ করছে সৌদি আরব। হাইড্রোজেন উৎপাদনে বিশ্বের সবচেয়ে বড় কেন্দ্রটি স্থাপনের কাজ শুরু করেছে তারা। লোহিত সাগরপারে এই কেন্দ্র স্থাপন করা হচ্ছে। এর জন্য বিনিয়োগ করা হচ্ছে ৮৪০ কোটি মার্কিন ডলার। ২০২৬ সাল নাগাদ এই কেন্দ্র থেকে প্রতিদিন ৬০০ টন হাইড্রোজেন পাওয়া যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। নতুন এই হাইড্রোজেন কেন্দ্রের সঙ্গে সৌরবিদ্যুৎ ও বায়ুবিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা হচ্ছে। এই বিদ্যুৎ ব্যবহার করেই হাইড্রোজেন উৎপাদন করা হবে।
সবুজ হাইড্রোজেন উৎপাদনের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাতও। তারা জানিয়েছে, ২০৩১ সালের মধ্যে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি হাইড্রোজেন উৎপাদনকারী ১০ দেশের তালিকায় থাকবে তারা। সবুজ জ্বালানি উৎপাদনে ওমানও রয়েছে এগিয়ে। ২০২৩ সাল নাগাদ তারা ১০ লাখ টন হাইড্রোজেন উৎপাদন করতে চায় ওমান। আর ২০৫০ সাল নাগাদ ৮৫ লাখ টন হাইড্রোজেন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা হাতে নিয়েছে দেশটি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।