বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক : মোটোরোলা কোম্পানিতে কর্মরত ড. মার্টিন কুপার এবং জন ফ্রান্সিস মিচেলকে প্রথম মোবাইল ফোনের উদ্ভাবকের মর্যাদা দেওয়া হয়। তারা ১৯৭৩ সালের এপ্রিলে প্রথম সফলভাবে প্রায় ২ কেজি ওজনের হাতে ধরা ফোনের মাধ্যমে কল করতে সক্ষম হন। মোবাইল ফোনের প্রথম বাণিজ্যিক সংস্করণ বাজারে আসে ১৯৮৩ সালে। বাংলাদেশে আসে ১৯৯৩ সালে। তখনকার সময়ে মোবাইল দ্বারা দিয়ে কেবল কল করা এবং রিসিভ করা যেত। এখন আসছে নতুন নতুন প্রযুক্তি। ভবিষ্যতে মোবাইল ফোনের প্রযুক্তি কেমন হতে পারে তাই নিয়েই আজকের প্রতিবেদন।
ডিসপ্লের নিচে ক্যামেরা: বর্তমান সময়ে স্মার্টফোন গুলোর ডিসপ্লের ওপরেই ক্যামেরা। তবে গবেষণা চলছে আরও উন্নত প্রযুক্তির জন্য। চেষ্টা করা হচ্ছে ফোনের স্ক্রিনের নিচে সেলফি ক্যামেরা রাখার। তবে এখনো পর্যন্ত পুরোপুরি সফল হওয়া সম্ভব হয়নি। এখনো ডিসপ্লেতে ত্রুটি রয়েছে। তবে গবেষকরা আশাবাদী যে ফোন নির্মাতারা স্মার্টফোনের সামনের ক্যামেরাটিকে সম্পূর্ণরূপে আড়াল করতে সক্ষম হবেন, যা আমাদের একটি সম্পূর্ণ পরিষ্কার ডিসপ্লে দেবে যা ফোনের প্রতিটি প্রান্তে পৌঁছে যাবে।
তারবিহীন চার্জ: এখনকার দিনে স্মার্টফোনের গুলোর চার্জ কয়েক ঘণ্টা ব্যবহারেই শেষ হয়ে যায়। ক্যাবলের মাধ্যমে চার্জ দিতে হয়। ভ্রমনে বের হলে সাথে চার্জার বহন করতে হয়। কিন্তু কয়েক বছরের মধ্যে আসছে ওয়ারলেস চার্জিং সিস্টেম। তার দিয়ে আর মোবাইল চার্জ দিতে হবে না। থাকবেনা চার্জিং পোর্ট ও। মার্টিন কুপার তো বলেছেন, মানুষের শরীর থেকে মোবাইলে চার্জ দেওয়া নিয়ে গবেষণা চলছে। অদূর ভবিষ্যতে হয়তো এটা বাস্তবায়ন হবে। ওভার দ্য এয়ার চার্জিং থাকলে, আপনাকে আর ফোন চার্জ করার জন্য ফেলে রাখতে হবে না। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতেই গবেষণা। যদিও ব্যপারটা অনেকটায় অদ্ভুত। তার ছাড়া ইন্ডাকশন উপায়ে হয়তো আমরা ওয়্যারলেস পড দিয়ে চার্জ করতে পারি। তবে বাতাসের মাধ্যমে চার্জ ব্যপারটা যেন অবিশ্বাস্য!
স্ট্রেচেবল ডিসপ্লে: এই ফোনের স্ক্রিন টানলে বড় হবে। এটাকে বলা হয় স্ট্রেচেবল ডিসপ্লে। স্মার্টফোনের পরবর্তী পরিবর্তন হবে ডিসপ্লের ক্ষেত্রে, যা ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। কানাডার কুইন্স ইউনিভার্সিটি এ নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছে। কুইন্স ইউনিভার্সিটির গবেষকদের দ্বারা প্রদর্শিত হলোফ্লেক্স প্রোটোটাইপটি দেখার মতো কিছু হতে যাচ্ছে। হোলোফ্লেক্স হলোগ্রাফিক এবং নমনীয় উভয়ই ব্যবহারকারীদের হ্যান্ডসেটটিকে বিভিন্ন কোণ থেকে থ্রি ডি ডিসপ্লে দেখতে এবং স্ক্রিনে থাকা চিত্রগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করার অনুমতি দেবে।
চিন্তা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ফোন: আগেকার সময়ে কী বোর্ড দিয়ে, এখন টাচ স্ক্রিন দিয়ে মোবাইল ব্যবহার করি। ভয়েসের মাধ্যমেও মোবাইল নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে। কিন্তু ভবিষ্যতে এমন ফোন আসতেছে যে আপনি কিছু চিন্তা করলে সেটাই মোবাইলে এসে যাবে। এর মাধ্যমে যেগুলো আমরা টাচ বা ভয়েস দিয়ে করি সেগুলো চিন্তা দিয়ে করতে পারব। আপনার চিন্তাই ফোনে দেখতে পাবেন। আবার চশমার মতো এক প্রকার প্রযুক্তি আসছে যা দিয়ে আপনি চাইলে অনেক কিছু করতে পারবেন। আপনি সিনেমা দেখতে চাইলে তাই দেখা যাবে। আপনি কিছু চিন্তা করলে তা আপনার সামনে ভেসে উঠবে। ইউটিউবে গান শোনার কথা ভাববেন, আর সেই গান চালু হয়ে যাবে। আপনি চিন্তা দিয়েই একটি বার্তা লিখতে পারবেন, পর্দার উজ্জ্বলতা কম বেশি করতে পারবেন। কেউ কল করলে আপনি ভাবার সঙ্গে তা চোখের সামনে ভেসে উঠবে। ফলে বিশ্বে স্মার্টফোন থাকবে কিনা তাই সন্দেহের।
ইচ্ছেমত রং পরিবর্তন: বিভিন্ন রঙের মধ্যে থেকে নিজের প্রিয় রং খুঁজে নিতে কষ্ট হয়। একই রং প্রায়ই বিরক্তিকর। ভবিষ্যতে স্মার্টফোন কেনার ক্ষেত্রে আপনাকে হয়তো আর রং পছন্দ করতে হবে না। ফোনের পেছনের অংশ গ্লাসের মতো স্বচ্ছ উপাদান থেকে তৈরি হবে। আপনি ফোনের সেটিংস থেকে রং পরিবর্তন করতে পারবেন।
পরিবেশবান্ধব ফোন: ইকোফোনের মতো পরিবেশবান্ধব ফোনের জনপ্রিয়তা বাড়ছে। বিশ্বের প্রায় কোম্পানিই এখন পরিবেশবান্ধব জিনিস তৈরিতে ব্যস্ত। মোবাইল ফোন কোম্পানিগুলোও এর বাইরে নয়। ২০৫০ সালের মধ্যে নির্মাতারা নেট জিরো স্ট্যাটাসের মতো ফোন বাজারে আনতে গবেষণা চালাচ্ছে। এখন যেমন পুরোনো মোবাইল ফোনই বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে। এর ফলে পরিবেশের কম ক্ষতি হচ্ছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।