বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক : আমাদের গ্যালাক্সি, মিল্কিওয়ে যার নাম, এর কেন্দ্রে আছে এক দানবীয় ব্ল্যাকহোল। নাম স্যাজিটেরিয়োস এ*। এই দানবীয় ব্ল্যাকহোলের ভর ৪৫০ কোটি সূর্যের সমান! বিশাল এই দানব আবার ঘুরছে নিজ অক্ষের ওপর দাঁড়িয়ে। একে কেন্দ্র করেই ঘুরছে গোটা মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সি।
অর্থাৎ আমাদের গ্যালাক্সিতে যত গ্রহ-নক্ষত্র আছে, যত ধূমকেতু, যত নুড়ি-পাথর সবাই ঘুরছে এই দাবনের টানে। ইদানিং বড্ড ভয়ানক হয়ে উঠেছে দানবটা।
নাসার চন্দ্র এক্স-রে অবজারভেটরির সাহায্যে সম্প্রতি এই ব্ল্যাকহোলের ঘুর্ণন গতি বের করেছেন বিজ্ঞানীরা। ঠিক কতটা গতিতে ঘুরতে পারে এটা?
মহাজাগতিক গতিসীমার খুব কাছাকাছি গতিতে ঘুরছে ব্ল্যাকহোলটি।
ফলে ভয়ংকর হয়ে উঠেছে ব্ল্যাকহোলটির মহকর্ষীয় টানও। আশপাশের স্পেসটাইম অর্থাৎ স্থানকালকেও গোগ্রাসে গিলছে ব্ল্যাকহোলটি। তাহলে গ্যালাক্সির কেন্দ্রের দিকে যেসব গ্রহ-নক্ষত্রগুলির কী অবস্থা একবার ভেবে দেখুন!
বিজ্ঞানীরা হিসাব কষে দেখেছেন, ব্ল্যাকহোলটির গতি ০.৯৬। ১-এর কাছাকাছি।
১ হলো নির্দিষ্ট ব্ল্যাকহোলের সর্বোচ্চ গতি। ব্ল্যাকহোলের ভর ও অন্যান্য বৈশিষ্ট্যের ওপর ভিত্তি করে এই মান নির্ধারিত হয়। তবে ১ মানে কিন্তু আলোর গতির সমান নয়। বলা ভালো আলোর গতির ভগ্নাংশ মাত্র। স্যাজিটেরিয়াস এ*-এর ঘুর্ণন গতি ০.৮৪ থেকে ০.৯৬ এর মধ্যে।
অর্থাৎ সর্বোচ্চ গতিসীমার খুব কাছাকাছি গতিতে ঘুরছে এটি।
এ বিষয়ক একটি গবেষণা প্রবন্ধ ছাপা হয় রয়্যাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটির জার্নালে। সাসেক্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তাত্ত্বিক পদার্থবিদ জাভিয়ের ক্যালমেট বলেন, ‘ঘুর্ণ্যমান ব্ল্যাকহোলে গঠন বেড়ে ওঠাসহ মহাজাগতিক বস্তুদের চরিত্র বোঝার জন্য সুদূরপ্রসারী ভূমিকা রাখবে।’
ব্ল্যাকহোলের এই ঘূর্ণনের ফলে এর আশাপশের স্থানকালে প্রবাল আলোড়ন ওঠে, দুমড়ে-মুচড়ে যায়। দুমড়েমুচড়ে যাওয়া সেই স্থানকালকে বলে এরগোস্ফিয়ার। এরগোস্ফিয়ার অঞ্চলে যেসব বস্তু থাকে, তাদেরকে গ্রাস করে নেয় ব্ল্যাকহোল।
অর্থাৎ সুপারম্যাসিভ ব্ল্যাকহোলের ঘূর্ণন ও প্রবল মহাকর্ষীয় টান স্থানকালের চাদরকে আক্ষরিক অর্থেই দুমড়েমুচড়ে দেয়। সুতরাং আশপাশের সব বস্তু তখন এরগোস্ফিয়ারের মোচড়ানো জায়গায় চলে আসে। স্থানকাল বাঁকাচোরা বলে সেখানকার আলোর চলার পথও বাঁকা। ফলে সেখানে গ্রাভিটেশনাল লেন্সিং প্রক্রিয়া তৈরি হয়। তৈরি হয় একটি আলোর বলয় এবং সেখানে ব্ল্যাকহোলের একটি শ্যাডো বা ছায়াও তৈরি হয়।
চন্দ্র অবজারভেটরির মাধ্যমে পাওয়া এসব তথ্য সুপারম্যাসিভ গ্যালাক্সি সম্পর্কে আর বিশদ জানতে সাহায্য করবে বলে মনে করছেন গবেষকেরা।
সূত্র : নাসা ও লাইভ সায়েন্স
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।