ধর্ম ডেস্ক : তীব্র তাপপ্রবাহে জনজীবন অতিষ্ঠ। সব শ্রেণির মানুষ ভীষণ কষ্টে দিনানিপাত করছেন। বেড়েছে তাপজনিত রোগও। এরই মধ্যে কেউ কেউ সামাজিক মাধ্যমে গরম ও গরমকাল নিয়ে হাসি ঠাট্টা ও ট্রল করছেন। যা শোভনীয় নয়। এ বিষয়ে মুহাদ্দিসগণ হাসি-তামাশা করতে নিষেধ করেছেন।
গরম হচ্ছে জাহান্নামের নিঃশ্বাস। এ বিষয়ে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, জাহান্নাম তার রবের কাছে অভিযোগ করে বলে, হে রব, আমার এক অংশ অন্য অংশকে খেয়ে ফেলেছে। মহান আল্লাহ তখন তাকে দুটি নিঃশ্বাস ফেলার অনুমতি দেন। একটি নিঃশ্বাস শীতকালে, আরেকটি গ্রীষ্মকালে। কাজেই তোমরা গরমের তীব্রতা এবং শীতের তীব্রতা পেয়ে থাকো। (বুখারিঃ ৩২৬০)
আলেমরা বলেন, হাদিসের প্রকৃত অর্থ নয়, বরং রূপক অর্থ নিতে হবে। এই মতের স্কলাররা বলেন, জাহান্নাম ও সূর্যের মধ্যে সূক্ষ্ম সংযোগ ও সম্পর্ক সৃষ্টি করে রেখেছেন আল্লাহ। সে অনুযায়ী জাহান্নাম থেকেই উত্তাপ গ্রহণ করে সূর্য, আর সূর্য তাপ বিকিরণে যন্ত্রের মতো কাজ করে। তাই সূর্যের দূরত্ব অনুপাতে পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় গ্রীষ্মকাল বা শীতকাল হয়।
কোনো কোনো ইসলামিক স্কলার বলেন, জাহান্নামের নিঃশ্বাস গ্রীষ্মকাল বা শীতকাল নয়, বরং নিঃশ্বাস গ্রীষ্ম বা শীতকালে ঘটে। এ বিষয়ে ইমাম ইবনু আব্দিল বার (রঃ) তার তামহিদ গ্রন্থে এই হাদিসের ব্যাখ্যায় বলেন—জাহান্নামের নিঃশ্বাস শীতকালে ঘটে, নিঃশ্বাস শীতকাল নয়। জাহান্নামের নিঃশ্বাস গ্রীষ্মকালে ঘটে, নিঃশ্বাস গ্রীষ্মকাল নয়। (আত তামহিদ: ৮/৫)
আবার কিছু স্কলার বলেছেন, প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ দুটোই সঠিক। তাদের মতে, শীত-গ্রীষ্মের তীব্রতার জন্য প্রত্যক্ষ কারণ হলো পৃথিবীর উপর সূর্যের তীর্যক বা খাড়াভাবে আলো দেওয়া। আর পরোক্ষ কারণ হলো জাহান্নামের নিঃশ্বাস। রাসুল (সাঃ) এখানে পরোক্ষ কারণ উল্লেখ করেছেন। আর প্রত্যক্ষ কারণকে উল্লেখ করেননি অপ্রআসঙ্গিক হওয়ায়। আর সেটা তো মানুষ জ্ঞানবুদ্ধি দ্বারাই বুঝতে সক্ষম।
সুতরাং এটা সুনিশ্চিত যে, পরোক্ষ কারণের উল্লেখ প্রত্যক্ষ কারণের অনুপস্থিতিকে আবশ্যক করে না। তাই শীত-গ্রীষ্মকালের তীব্রতার জন্য জাহান্নামের নিঃশ্বাস সূর্যের আলোর তারতম্যের কারণকে বাতিল করে না।
একটি বিষয় খেয়াল করে দেখুন, আজ থেকে প্রায় দশ/বারো বছর পূর্বেও গরমের উত্তাপ এতো তীব্র পরিমাণে ছিল না।
মানুষের কুকর্ম যতো বৃদ্ধি পাচ্ছে আবহাওয়া ও তত বিরূপ চেহারা ধারন করছে। কিয়ামতের সময় যতো নিকটে আসছে জাহান্নামের হাহাকারও তত বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই গরম নিয়ে হাসি-ঠাট্টা না করে বেশি সালাত আদায় করুন, বেশি রাব্বে কারীমের নিকট দোয়া করুন। সূত্র- ফেসবুক পেইজ ওহী
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।