জুমবাংলা ডেস্ক : মালতি, যে ফুলের নাম কবিতায় সব সময় পাওয়া যায়। তবে বাস্তবে পাওয়া কঠিন। এই ফুল পাওয়া যায় বর্ষা ঋতুতে। এ ফুলটি দুর্লভ আর ইতোমধ্যে এটি হারিয়ে যেতে বসেছে। তবে সম্প্রতি এ ফুল ফুটেছে পায়রাবন্দ বেগম রোকেয়া মেমোরিয়াল সরকারি মহাবিদ্যালয়ের বাগানে। দুই বছর আগে এই ফুলগাছটি লাগিয়েছিলেন ওই প্রতিষ্ঠানের লাইব্রেরিয়ান জেসমিন ফুল মনে করে। গাছটি বড় হওয়ার পর জানা যায় এটি জেসমিন নয়। এটি আসলে মালতি ফুল।
কৃষি ও বন বিভাগ সূত্র জানায়, মালতি এমন এক প্রকার উদ্ভিদ; যা তার ফুলের জন্য সমাদৃত। মালতি কাষ্ঠল লতাবিশেষ। এ উদ্ভিদ বহুবর্ষজীবী। বয়স্ক অবস্থায় বৃহদাকার হয়ে থাকে। পাতা আয়তাকার, ৮ সেন্টিমিটার লম্বা, বোঁটা ও শিরা লালচে। ফুল সাদা, সুগন্ধি; গড়নের দিক থেকে অনেকটা শিউলি ফুলের মতো পাপড়ি মোড়ানো। ৫ সেন্টিমিটার লম্বা ও চোখা। দলনলের আগায় ৫ পাপড়ি থাকে সরু ও লম্বাভাবে। অনেক জায়গায় এর আয়ুর্বেদিক ব্যবহার আছে। এর আয়ুর্বেদিক নাম মধুমালতি হলেও মালতি আর মধুমালতি এক নয়।
মালতিকে অনেক সময় ভুল করে মধুমালতি বা মধুমঞ্জরি নামে ডাকা হয়। ফুল দুটির গড়ন ও গঠন সম্পূর্ণ ভিন্ন ধরনের। মালতি গাছটির রয়েছে চমৎকার ভেষজ গুণ। মালতির শক্ত ডাল দিয়ে দাঁতের মাজন হয়। যা খুবই উপকারী। কুষ্ঠরোগেও ফুলের রসের প্রলেপ বেশ কার্যকর। এ ছাড়া নানা ধরনের চর্মরোগেও মালতির পাতা ব্যবহার করা হয়। প্রসবকালে মায়েদের শরীরে জ্বালাপোড়া বাড়লে তিন গ্রাম শুকনো ফুল বা ছয় গ্রাম তাজা ফুল সামান্য চিনি দিয়ে এক কাপ শরবত তৈরি করে ৩০ মিনিট পর পর খাওয়ালে উপশম হয়। আবার প্রস্রাবের জ্বালায়ও মালতি গাছের শিকড়ের বাকল ও পাতার রস বেশ কার্যকর। নানা কারণে মালতি বিখ্যাত ফুল। বাংলা সাহিত্যে মালতি বিশেষ স্থান দখল করে আছে। বর্ষায় মালতির শুভ্রতা এবং গন্ধ সবাইকে মুগ্ধ করে।
বেগম রোকেয়া স্মৃতি কেন্দ্রের ইনচার্জ ও বাংলা একাডেমির সহকারী সম্পাদক কৃষিবিদ আবিদ করিম মুন্না জানান, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিভিন্ন কবিতায় কমপক্ষে ১৭ বার এই ফুলের নাম ব্যবহার করেছেন। মালতি এখন দুর্লভ ফুল। রংপুর বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন বলেন, এক সময় প্রচুর পরিমাণ মালতি ফুল দেখা যেত। তবে এটি এখন দুর্লভ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।