নিশীতা মিতু : প্রকৃতিকে অপরূপ করে সাজায় ফুল। নানা রঙের ফুলের নানা সুবাস। কিছু আবার বিলিয়ে দেয় ঘ্রাণহীন সৌন্দর্য। এসব ফুলের বাহারি নাম শুনেও আমরা অবাক হই। এই যেমন নাগচাঁপা। নাম শুনলেই মনে হয় নাগ বা সাপের সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক রয়েছে। সাদা রঙা এই ফুলকে অনেকে আবার ভুলে কাঠগোলাপও ভেবে বসেন।
রঙের দিক থেকে অনেকটা একইরকম হলেও নাগচাঁপা আর কাঠগোলাপ কিন্তু এক নয়। পাতার গঠনে যেমন পার্থক্য রয়েছে, তেমনি তফাৎ রয়েছে পাপড়ির পুরুত্বেও। আবার কাঠগোলাপ সুবাস ছড়ালেও, এক্ষেত্রে ব্যর্থ নাগচাঁপা। আমাদের দেশে এটি নাগচম্পা, বৃন্দাবন চাঁপা, পুদিকা চম্পা, প্রেমনলিনী, কমলিকা ইত্যাদি নামে পরিচিত।
প্লুমেরিয়ার চিরসবুজ প্রজাতি এটি। গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ। পানামা, কলম্বিয়া ও ভেনিজুয়েলার স্থানীয় বাসিন্দা এরা। তবে বর্তমানে আমাদের দেশে বিভিন্ন পার্ক বা রাস্তার পাশে এর দেখা মেলে। অনেকেই শখ করে জায়গা দেন বারান্দা বা ছাদবাগানে।
মনে নিশ্চয়ই প্রশ্ন জাগবে এই ফুলকে কেন নাগচাঁপা বলা হয়? আসলে এই গাছের পাতার গঠনই এই নামকরণের জন্য দায়ী। এর পাতা খানিকটা বেহালা বা চামচ আকারের। পাতার অগ্রভাগ কিছুটা কোবরা সাপ তথা নাগের ফণার মতো। আর তাই বাংলায় একে নাগচম্পা বা নাগচাঁপা বলা হয়।
দ্রুত বর্ধনশীল গুল্ম নাগচাঁপা। তবে এর কাণ্ড খুব বেশি শক্ত হয় না। শাখা-প্রশাখাও কম হয়। সোজা উপরের দিকে বাড়তে থাকে এটি। উচ্চতা হয় গড়ে আট ফুট (২.৪ মি) থেকে দশ ফুটের (৩ মিটার) মতো।
শিরা উপশিরাযুক্ত, গাঢ় সবুজ রঙের গাছের পাতা বেশ পুরু হয়। পাতা লম্বায় ৬-৮ ইঞ্চি (১৫- ২০ সেমি) এবং চওড়ায় ১-২ ইঞ্চি (২.৫ – ৫ সেমি) হয়। শাখা-প্রশাখার অগ্রভাগে গুচ্ছ থোকায় ধরে ফুল। এই ফুলের রঙ সফেদ বা সাদা। কেন্দ্রে থাকে হালকা হলুদ আভা। ফুলের পাপড়ি থাকে ৫টি। গন্ধহীন ফুল বেশ কয়েকদিন গাছে শোভা পায়। ৫-৬ দিন পরে ঝরে পড়ে এরা।
সারাবছরই গাছে ফুল ফোটে। তবে বর্ষা আর শরতে এর পরিমাণ থাকে অনেক বেশি। সব ধরনের মাটিতে, রৌদ্রজ্জ্বল পরিবেশে উঁচু বা মাঝারি উঁচু মাটিতে নাগচাঁপা ভালো জন্মায়। গাছের ডাল কেটে অর্থাৎ কাটিং পদ্ধতিতে সরাসরি মাটিতে বা টবে রোপণ করা যায়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।