বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক : জল্পনাকল্পনার পালা শেষ, আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন আইফোন উন্মোচন করেছে অ্যাপল। এবারের মডেলটি এসই সিরিজের অংশ নয়, বরং এর নাম দেওয়া হয়েছে আইফোন ১৬ই।
নতুন আইফোন উন্মোচনের পর পুরনো মডেল বিক্রি বন্ধ না করে বরং তার দাম কমিয়ে দেয় অ্যাপল। এই ধারাবাহিকতায় দুই বছর পুরনো মডেল আইফোন ১৪ বিক্রি হচ্ছিল ৫৯৯ ডলার মূল্যে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নে ইউএসবি-সি চার্জিং না থাকায় আইফোন ১৪ বিক্রি নিষিদ্ধ। তাই অনেকটা বাধ্য হয়েই এর বিকল্প হিসেবে একই মূল্যে নতুন মডেলটি বাজারে এনেছে অ্যাপল। এ ছাড়া অ্যাপল চাইছে প্রতিটি নতুন ডিভাইসেই থাকুক অ্যাপল ইন্টেলিজেন্স। এই ফিচারটি আইফোন ১৪ বা ১৫ তে চালানো সম্ভব নয়।
সেটিও মাঝারি দামে নতুন আইফোন বাজারে আনার সম্ভাব্য কারণ।
কী আছে আইফোন ১৬ই-তে
মাঝারি মূল্যের আইফোন তৈরিতে ব্যবহৃত হয় আগের মডেলগুলোর যন্ত্রাংশ। এ মডেলটিও ব্যতিক্রম নয়। এটি দেখতে প্রায় আইফোন ১৪-এর মতোই।
আইফোন ১৬ই-এর মধ্যে আছে অ্যাপল এ১৮ প্রসেসর, ৬.১ ইঞ্চি ওলেড ডিসপ্লে, ফেস আইডি, মাত্র একটি ব্যাক ক্যামেরা, যার রেজল্যুশন ৪৮ মেগাপিক্সেল, ইউএসবি-সি চার্জিং পোর্ট, ৮ জিবি র্যাম এবং ১২৮ জিবি থেকে ৫১২ জিবি পর্যন্ত স্টোরেজ। ব্যাটারির ধারণক্ষমতা কতটুকু, বরাবরের মতোই অ্যাপল তা প্রকাশ করেনি। তবে বাজার বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন, এর ব্যাটারি হবে আইফোন ১৪-এর মতোই। নতুন এই ডিভাইসে নেই হোম বাটন ও ম্যাগসেফ চার্জিং। মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৫৯৯ ডলার (প্রায় ৭৩ হাজার বাংলাদেশি টাকা)।
আইফোন ১৬ ও ১৬ই-এর মধ্যে পার্থক্য
n ডিসপ্লে সাইজ এক থাকলেও ১৬-তে আছে ডাইনামিক আইল্যান্ড, যা ১৬ই-তে নেই।
n আইফোন ১৬-তে আছে দুটি ব্যাক ক্যামেরা, ১৬ই-তে একটি।
n এ ছাড়া ১৬ই-তে ম্যাগসেফ চার্জিং সুবিধা নেই।
n উভয় ফোনেই থাকছে শক্তিশালী অ্যাপল এ১৮ প্রসেসর, তবে ১৬ই মডেলের জিপিইউ কোর একটি কম।
অ্যাপলের নিজস্ব মডেম
আইফোন ১৬ই পাচ্ছে অ্যাপলের নিজস্ব ডিজাইনের সি-ওয়ান মডেম। এর মাধ্যমে অ্যাপল চাইছে কোয়ালকমের ওপর নির্ভরতা কমাতে। বর্তমানে বাজারে থাকা প্রতিটি আইফোনে ব্যবহৃত হচ্ছে কোয়ালকম মডেম, যার মাধ্যমে ৪জি-৫জি নেটওয়ার্কের পাশাপাশি ওয়াই-ফাই এবং ব্লু-টুথও কাজ করে। মূলধারার ডিভাইসে নতুন প্রযুক্তি যোগ করার আগে মাঝারি মূল্যের ডিভাইসে তা পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহার করে থাকে অ্যাপল। নতুন মডেমটি তারা পরীক্ষা করছে ১৬ই-এর মাধ্যমে। এতে যদি নতুন মডেমে নেটওয়ার্ক পারফরম্যান্স সমস্যা থেকেও থাকে, যাতে ফ্ল্যাগশিপ মডেল ব্যবহারকারীদের এ ঝামেলায় পড়তে না হয়।
আলোচনা-সমালোচনা
উন্মোচনের পর থেকেই প্রযুক্তিপ্রেমীদের মধ্যে আইফোন ১৬ই নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনার ঝড়। প্রযুক্তি বিশ্লেষকরা আইফোন এক্সআরের সঙ্গে তুলনা করে বলছেন, ২০১৮ সালে অ্যাপলের কম ফিচারের এক্সআর মডেলটি যদি ৭৫০ ডলার মূল্যে বিক্রি হয় ৪৬ মিলিয়ন ইউনিট, সে হিসেবে মাত্র ৫৯৯ ডলার মূল্যে আরো উন্নত ফিচারের ১৬ই মডেল আরো জনপ্রিয়তা পাবে, এটা নিশ্চিত। তবে ৫৯৯ ডলার মূল্যের ফোনটিতে কেন নেই ম্যাগসেফ চার্জিং বা উচ্চ রিফ্রেশ রেট প্রযুক্তির ডিসপ্লে—এ নিয়েই টেক বিশ্লেষকরা বেশ সমালোচনা করেছেন। মাত্র একটি ব্যাক ক্যামেরা, ২০২৫ সালে এটা মানায় না—বলেছেন কেউ কেউ।
এশিয়ার ব্যবহারকারীদের মধ্যেও ফোনটি নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। অনেকের মতে, আইফোন ১৬ই মডেলে যে ফিচার দিচ্ছে অ্যাপল, অনেক আগে থেকেই তেমন ফিচার অ্যানড্রয়েড ফোনগুলোতে আরো কম দামে পাওয়া যাচ্ছে। তবে আইফোনের সফটওয়্যার ফিচারগুলো অ্যানড্রয়েডে নেই, সেটিও স্বীকার করেছেন তাঁরা।
আইফোন ১৬ই-এর আগে স্বল্প মূল্যের মডেল ছিল আইফোন এসই ২০২২। সেটি তেমন ব্যবসায়িক সফলতা পায়নি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।