জুমবাংলা ডেস্ক : রাজশাহীসহ উত্তরের জেলাগুলোর উপর দিয়ে বইছে তীব্র তাপদাহ। মধ্য এপ্রিল থেকে চলমান এই তাপদাহের কারণ হিসেবে, অঞ্চলভিত্তিক ভৌগোলিক অবস্থান ও জলবায়ুর পরিবর্তন অন্যতম বলছেন পরিবেশ বিজ্ঞানীরা। এদিকে প্রচণ্ড গরমে ক্ষতির মুখে পড়েছে আম, লিচুসহ মৌসুমী ফলের আবাদ। উত্তরাঞ্চলে ধান চাষে সেচ ব্যবস্থা সচল রাখার প্রতি বাড়তি নজর দিচ্ছে কৃষি বিভাগ।
ষাটোর্ধ্ব হাফিজুর রহমান। শুধুমাত্র পেটের তাগিদে তীব্র তাপদাহ উপেক্ষা করে নিজের পেশা চালিয়ে যাচ্ছেন। কাজের ফাঁকে ফাঁকে একটু জিরিয়ে নেন গাছের ছায়ায়।
দিন যতই যাচ্ছে, সূর্যের তাপ যেন ততই তীব্র হচ্ছে। গরমের মধ্যে কাজ করার অভ্যাস থাকলেও এ বছর বৈশাখের শুরু থেকেই গরম সহ্য করা যাচ্ছে না, বলছিলেন এই বৃদ্ধ শ্রমিক।
পরিবেশ বিজ্ঞানীরা বলছেন, শুধু উত্তরাঞ্চলই নয় ‘এল নিনোর’ প্রভাবে এ বছর তাপ বৃদ্ধি পাচ্ছে ভারত ও আরব মহাসাগর উপকূলবর্তী অঞ্চলগুলোতে। এছাড়া অঞ্চলভিত্তিক ভৌগোলিক অবস্থানের পাশাপাশি গাছ কাটা ও অপরিকল্পিত নগরায়ণও তাপ বেড়ে যাওয়ার জন্য দায়ী।
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইফ অ্যান্ড আর্থ সায়েন্স বিভাগের ডিন ড. রহিদুল ইসলাম বলেন, বঙ্গোপসাগরের পশ্চিম ঘাট হচ্ছে চুয়াডাঙ্গা, ওই অঞ্চল দিয়ে মৌসুমী বাতাস আমাদের দেশে প্রবেশ করে। সাগরের উত্তপ্ত বা উষ্ণ বায়ুর কারণে তাপমাত্রা বেশি হয় ।
এদিকে কাঠ ফাটা এই গরমে বিপাকে পড়েছেন জেলার আম ও লিচু চাষিরা। তারা বলছেন, এ বছর এমনিতেই গাছে মুকুলের সংখ্যা কম ছিলো। এখন তীব্র তাপদাহে ফল ঝড়ে যাচ্ছে।
তীব্র তাপদাহের প্রভাব পড়েছে ধান চাষের। আম লিচুর যত্ন নেয়ার পাশাপাশি এই তাপদাহে জমির ধানে সেচের যেন সমস্যা না হয় সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলছে কৃষি বিভাগ।
রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্রের সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আলীম উদ্দীন বলেন, ১০ থেকে ১৫ দিন পরপর সেচের ব্যবস্থা রাখা এবং মালচিং করে দেয়া। আর যদি কারো সুযোগ থাকে তাহলে শেষ বেলায় পানি স্প্রে করে দেয়া।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ পরিচালক (শস্য) শারমিন সুলতানা বলেন,নীবির মনিটরিং এর মাধ্যমে সেচ ব্যবস্থাপনা কেন কোনোভাবেই বিঘ্নিত না হয় কিংবা কৃষক যাতে হয়রানির শিকার না হয়, সেই বিষয়গুলো মনিটরিং কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
গেলো সাতদিন ধরে রাজশাহী জেলার তাপমাত্রা থাকছে ৩৯ থেকে ৪১ ডিগ্রির মধ্যে। যা আরও কয়েকদিন অব্যাহত থাকতে পারে বলছে আবহাওয়া অফিস।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।