জুমবাংলা ডেস্ক : মানিকগঞ্জের হরিরামপুরের দুর্গম চরাঞ্চলে বিষাক্ত রাসেল ভাইপার (চন্দ্রবোড়া) সাপের আতংক দেখা দিয়েছে। জমির ফসল তোলা ও গবাদি পশুর খাবার (ঘাস) সংগ্রহ করা নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন চরাঞ্চলের হাজার হাজার কৃষক।
এর ফলে পদ্মা নদীর তীরবর্তী এলাকা ও চরাঞ্চলের বসবাস করা মানুষ আতংকে রয়েছেন। একের পর এক বিষধর রাসেল ভাইপার সাপের দেখা মিলছে নদী তীরবর্তী ও চরাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায়। গত তিন মাসে মারা গেছে পাঁচজন । সাপের কামুড়ে আহত হয়েছে আরো অনেকে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মানিকগঞ্জের পদ্মা অধ্যুষিত নদীভাঙনের কবলে ৩টি ইউনিয়ন আজিমনগর, লেছড়াগঞ্জ ও সুতালড়ী ইউনিয়নের জেগে ওঠে। ফলে চরে প্রায় ৫০ হাজারের অধিক মানুষ বসবাস করেন। যাদের একমাত্র পেশা হলো কৃষিকাজ। কেউ কেউ নিজের জমি, আবার কেউ অন্যের জমি বছর চুক্তিতে কিনে চাষাবাদ, করেন।
চরাঞ্চলে শতশত বিঘা জমিতে ভুট্টা, বাদাম, তিল, আমন ও আউশ ধানের চাষ করা হয়। কিন্তু ফসলের জমিতে বিষধর সাপ রাসেল ভাইপার দেখা দেওয়ায় বিপাকে রয়েছে কয়েক হাজার কৃষক।
সেলিমপুর চরাঞ্চলের বাসিন্দা নজরুল ইসলাম বলেন, কাঞ্চনপুর এলাকার চরে এক কৃষক তিল কেটে রেখে দেয়। পরে আঁটি তুলতে গিয়ে তিলের মধ্যে রাসেল ভাইপার দেখতে পায়। পরে মাঠ ছেড়ে চলে যান শ্রমিকরা।
শিকারপুরের সাইদুল মোল্লা বলেন, তার জমির ধানের আঁটি গাড়িতে তোলার সময় এক শ্রমিক রাসেল ভাইপার সাপ দেখতে পায়। পরে তার সঙ্গে থাকা অন্য শ্রমিকরা সাপটিকে মেরে ফেলে।
লেছড়াগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, গত মার্চে রাসেল ভাইপার সাপে কামড়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়াও পাশের ইউনিয়নের বসন্তপুর ও এনায়েতপুর এলাকায় দুই যুবককে সাপটি দংশন করে।
আজিমনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ বিল্লাল হোসেন বলেন, আজিমনগরে রাসেল ভাইপার সাপের উপদ্রপ সবচেয়ে বেশি। চলতি ইরি বোরো মৌসুমে রাসেলস ভাইপারের আনাগোনা তারা বেশি দেখতে পাচ্ছেন।“আমার ইউনিয়নেই রাসেল ভা্মইপার সাপের কামুড়ে দুজন লোক মারা গেছে। এখন ধান কাটার মৌসুম হওয়ায় উদ্বেগটা বেশি।
জোহরা মিলা বলেন, এই সাপের বিষ ‘হেমোটক্সিন’ হওয়ায় মাংস পচেই আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যু হয়। সাপটির কবল থেকে বাঁচতে সচেতনতাই কার্যকর পথ। বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন-২০১২ অনুযায়ী সাপটি সংরক্ষিত।
হরিরামপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তৌহিদুজ্জামান খান বলেন, তিনটি ইউনিয়নের চরাঞ্চলে রাসেলস ভাইপারের কামড়ে আহত হবার প্রকোপ বেশি দেখা যাচ্ছে। গত তিন মাসে মারা গেছে পাঁচজন।”
হরিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শাহরিয়ার রহমান বলেন, পদ্মা তীরবর্তী চরাঞ্চল গুলোতে রাসেল ভাইপার নামের বিষধর সাপের উপদ্রব বেড়ে কৃষক ও সাধারন মানুষ চরম আতংকে আছে। স্থানীয়ভাবে জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে মাইকিং ও প্রচার প্রচারনার মাধমে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে আমরা কাজ শুরু করেছি।তাছাড়া উপজেলা পরিষদ থেকে প্রথম অবস্থায় চরাঞ্চলে কৃষকদের বিশেষ জুতার (গামবুট) ব্যবস্থা করা হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।