জুমবাংলা ডেস্ক : জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহবায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘আমরা সংস্কার চেয়েছি, জুলাই গণহত্যার বিচার চেয়েছি এবং নতুন সংবিধান চেয়েছি। কিন্তু একটি পক্ষ আমাদের চাওয়ার বিরুদ্ধে দাড়িয়ে যাচ্ছে, যারা পুরনো বন্দোবস্ত টিকিয়ে রাখতে চায়। তারা ভেবেছিল ২/৩ আসনের লোভ দেখিয়ে আমাদেরকে কিনে নেবে, কিন্তু জুলাই বিপ্লবীদের কেনার সাধ্য কারো নেই।’
তিনি শনিবার দুপুরে সাতক্ষীরার শহীদ আসিফ চত্বরে এনসিপি, সাতক্ষীরা জেলা শাখার আয়োজনে পথসভায় এসব কথা বলেন।
সরকারের সাবেক উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম আরো বলেন, জুলাই বিপ্লবীরা চেয়েছিল একটি জাতীয় সরকার গঠন করে একটি নতুন রাষ্ট্র গঠন করতে। কিন্তু একটি দল চেয়েছে ৩ মাসের মধ্যে নির্বাচন দিতে হবে। তাদের একটিই উদ্দেশ্য ক্ষমতায় যাওয়া।
জাতীয় নাগরিক পার্টির সাতক্ষীরা জেলার সমম্বয়ক কামরুজ্জামান বুলুর সভাপতিত্বে পথসভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন দক্ষিণাঞ্চলের যুগ্ন মুখ্য সংগঠক মেজবাহ কামাল ও চিকিংসক তাসনীম জারা।
এছাড়া মঞ্চে শ্লোগান দেন দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ।
পথসভার আগে শহীদ আসিফ চত্বর এলাকায় জুলাই-বিপ্লবে আহত ও নিহতের পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলেন।
পরে একটি পদযাত্রা শহীদ আসিফ চত্বর থেকে বের হয়ে নিউমার্কেট মোড়ে শেষ হয়। এরপর নিউমার্কেট এলাকায় আল বারাকা হোটেলের দ্বিতীয় তলায় জেলা কার্যালয় উদ্বোধন করেন কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।
জুলাই আন্দোলনের অন্যতম প্রধান নায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, সাতক্ষীরাবাসী এখনো রেল সুবিধা পায়নি। আপনারা শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতি চান, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নতি চান, আমাদের জলবায়ু আমাদের রক্ষা করতে হবে। আমাদের সুন্দরবন আমাদের রক্ষা করতে হবে। আপনারা জাতীয় নাগরিক পার্টির সাথে থাকবেন। চাঁদাবাজদের ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই। যেই দেশের ছাত্র জনতা ১৬ বছরের ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচার হাসিনাকে দিল্লি পাঠাতে পেরেছে, সেই দেশের ছাত্রজনতা চাঁদাবাজদের ভয় পেতে পারে না। আপনারা ঐক্যবদ্ধ হন, নতুন করে প্রস্তুতি নিন। বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে আমাদের ইনসাফের ভিত্তিতে গড়ে তুলতে হবে।
সাতক্ষীরাবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, আপনারা এখনো রেল সুবিধা পাননি। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও জলবায়ু ব্যবস্থা রক্ষা করতে হলে, সুন্দরবন রক্ষা করতে হল- জাতীয় নাগরিক পার্টির পাশে থাকতে হবে। চাঁদাবাজদের ভয় পাওয়ার কিছু নেই। যেই দেশের ছাত্র-জনতা ১৬ বছরের স্বৈরাচারী হাসিনাকে দিল্লি পাঠাতে পারে, তারা চাঁদাবাজদের ভয় পায় না।
এনসিপির আহবায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, আসন ভাগাভাগির লোভ দেখিয়ে যারা এ দেশে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতে চায় তাদের সে স্বপ্ন পূরণ হবেনা। আমরা সংস্কার চেয়েছি, বিচার চেয়েছি, নতুন সংবিধান চেয়েছি। কিন্তু এসব জনগণের দাবির বিপরীতে একটি পক্ষ দাঁড়িয়ে গেছে। তারা পুরোনো বন্দোবস্ত, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাস টিকিয়ে রাখতে চায়। বাংলার জনগনকে সাথে নিয়ে প্রয়োজনে আমরা আবারো রক্ত দেবো তবুও তাদের স্বপ্ন পূরণ হতে দেবোনা। আগামী ৩ আগস্ট আমরা শহীদ মিনারে আসছি। সেখানে নতুন ইশতেহার দেব, ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ আদায়ের শপথ নেব।
নাহিদ ইসলাম বলেন, গণঅভ্যুত্থানের পরে, এতো মানুষের জীবন যাওয়ার পরে তারা যদি মনে করে তারা পুরাতন রাজনীতি করবে তাহলে এতো সহজ হবে না। গণঅভ্যুত্থানের শক্তি এখনো মাঠে আছে।
তিনি আরো বলেন, তারা ভেবেছিল দুই-তিনটি আসন দেখিয়ে, ক্ষমতার ভাগ-বাটোয়ারার লোভ দেখিয়ে তারা গণঅভ্যুত্থানের শক্তিকে ছিনিয়ে নেবে। কিন্তু যারা বিপ্লবের শক্তি, যারা মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছে, তাদেরকে কেনার সাধ্য বাংলাদেশের কোনো রাজনৈতিক দলের হয়নি।
নাহিদ ইসলাম বলেন, ৫ই আগস্ট আমরা বলেছিলাম আসুন জাতীয় সরকার গঠন করি। দেশটাকে পুনর্গঠন করি। সকল বিভাজন দূর করে বাংলাদেশকে নতুন করে গড়ে তুলি। তারা আমাদের সেই প্রস্তাবে সায় দেইনি। তারা বলেছিল, ‘তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন দিতে হবে। আবার বলেছে ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচন দিতে হবে।’ ক্ষমতার ভাগ-বাটোয়ারা ছাড়া দেশ সংস্কারের কোনো বিষয়ে তাদের সমর্থন পাওয়া যায়নি। আমরা বলেছিলাম আমরা দেশের ভিতরে শত্রু তৈরি করতে চাই না। আমরা দেশ পুনর্গঠন করতে চাই।
পথসভায় আরো উপস্থিত ছিলেন এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন, যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, দক্ষিণাঞ্চলের যুগ্ম মুখ্য সংগঠক মেজবাহ কামাল প্রমুখ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।