জুমবাংলা ডেস্ক : শবে বরাত উপলক্ষে আরেক দফা বেড়েছে গরুর মাংসের দাম। মূল্য তালিকায় ৭০০ টাকা লেখা থাকলেও বাজারভেদে তা বিক্রি হচ্ছে ৭৮০ থেকে ৮০০ টাকা। কারওয়ান বাজার, হাতিরপুল, রামপুরা, মোহাম্মদপুর টাউনহলসহ রাজধানীর বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে এ চিত্র পাওয়া গেছে।
মাংস ব্যবসায়ীরা বলছেন: শবে বরাত উপলক্ষে গরুর মাংসের চাহিদা বেড়েছে। গত ৩ থেকে ৪ দিন আগ থেকেই গরুর দাম বেড়েছে আকার ভেদে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা। আগে যেখানে গাবতলী গরুর হাটে ব্যাপারিরা মাংসের গরুর জন্য মণ হাঁকছিলেন ২৭ থেকে ৩০ হাজার গেলো কয়েকদিনে তা ৩২ হাজার পর্যন্ত ছুঁয়েছে। তাই মাংসের দাম বাড়ানোর বিকল্প তাদের হাতে নেই বলে জানান ব্যবসায়ীরা।
বাজারভেদে আবার গরুর মাংসের দাম কম বেশি আছে। যেমন মোহাম্মদপুর টাউনহল বাজার, হাতিরপুল বাজার, রামপুরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৭৮০ থেকে ৮০০ টাকা কেজি। আবার কারওয়ান বাজার, কাটাসুর, কৃষি মার্কেট, কেরানীগঞ্জের আটি বাজারে তা বিক্রি হচ্ছে ৭৬০ থেকে ৭৮০ টাকায়।
মোহাম্মদপুর টাউনহল বাজারের মাংস বিক্রেতা আনিচ মোড়ল বলেন, গতকাল তিনি গাবতলী গরুর হাট থেকে গরু কিনেছেন। আগে যে টাকায় গরু পাওয়া যেতো এখন ১০-১৫ হাজার টাকা বেশি লাগছে গরু প্রতি। ব্যাপারিরা ৩০ হাজার টাকা মণ হিসেবে গরু বিক্রি করছে। এর নিচে গরু ছাড়ছে না। এরপর হাট খরচ, পরিবহন খরচ, দোকান খরচ আছে। ৮০০ টাকায় বিক্রি করেও তেমন একটা পরতা হচ্ছে না।
কাটাসুর বাজারের মাংস বিক্রেতা মিরাজুল ইসলাম নিজে গরু জবাই করেন না। তিনি গরুর মাংস নিয়ে আসেন মোহাম্মদপুর বিহারী ক্যাম্প এলাকা থেকে। সেই মাংস বিক্রি করেন। মাস খানেক আগেও পাইকারী ৬০০ টাকা কেজি কিনতে পারলেও এখন সেটা ৬৭০ থেকে ৬৮০ টাকায় নিয়ে আসতে হচ্ছে। এই মাংসে পানি দেওয়া থাকায় পরে ওজনে আরও কমে যায়। তাই দোকান খরচ দিয়ে ৭৫০টাকায় প্রতিকেজি মাংস বিক্রি করেও অনেক সময় লোকসানে পড়তে হয় বলে দাবি তার।
আর কারওয়ান বাজারে প্রতিটি দোকানে নির্ধারিত মূল্যের জায়গায় ৭০০ টাকা লেখা থাকলেও নির্ধারিত মূল্যে বিক্রি হচ্ছে না। প্রতিকেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৮০ টাকা দরে।
বিক্রেতারা বলছেন, ইতিপূর্বের বছরগুলোতে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মাংস কেনার জন্য দোকান গুলোতে ভিড় লেগে থাকতো। এবছর সকালে কিছুটা ক্রেতা সমাগম থাকলেও দুপুরের পর বিক্রি একদমই কমে যায়। যে দোকানে শবে বরাতের দিনে ৫ থেকে ৬টি গরু জবাই করা হতো, সেখানে এখন গরু জবাই করা হয়েছে ২ থেকে সর্বোচ্চ ৩টি।
ক্রেতারা বলছেন: এমনিতে গরুর মাংসের দাম যে পর্যায়ে গিয়ে ঠেকেছে তাতে করে কেউ চাইলেই বিশেষ করে নিম্ন এবং মধ্যবিত্তের মানুষেরা এখন কিনে খেতে পারে না। উৎসবের দিনগুলো আসলে সেই দাম আরও বেড়ে যায়। বাজারের এ অরাজকতা দূর করতে সরকারের দায়িত্বশীল সংস্থার কঠোর মনিটরিংয়ের প্রয়োজন দেখছেন তারা।
জানুয়ারির শেষ দিকে গরুর মাংসের বাজারের অস্থিরতা শুরু। সেসময় রাজধানীর বাজারগুলোতে প্রতিকেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছিলো ৬৫০ থেকে ৭০০টাকা। ফেব্রুয়ারির শুরু দিকে গো-খাদ্যের মূল্য বৃদ্ধি এবং গরুর দাম বাড়ার অজুহাতে প্রতিকেজি গরুর মাংসের দাম ৬৮০-৭২০ পর্যন্ত বিক্রি শুরু করেন ব্যবসায়ীরা। সবশেষ চলতি মাস মার্চে আরেক দাম বাড়ানো হয়, প্রতিকেজি গরুর মাংস গিয়ে ঠেকে ৭৫০ টাকা। শবে বরাত উপলক্ষে আরেক দফা বাড়লো গরুর মাংসের দাম।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।