জুমবাংলা ডেস্ক : দেশের বাজারগুলোয় মসলাপণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী হয়ে উঠেছে। নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে পেঁয়াজের বাজার উন্মুক্ত করলেও রফতানি মূল্য ও অতিরিক্ত শুল্কারোপে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করছেন না ব্যবসায়ীরা। এ কারণে বাজারগুলোয় দেশী পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। অন্যদিকে ভারত থেকে আমদানি কমে যাওয়ার পাশাপাশি ঘূর্ণিঝড়ের কারণে বন্দর থেকে আদা ও রসুনের খালাস কার্যক্রম বন্ধ। ফলে এসব মসলাপণ্যের বাজারও অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে।
দেশে ভোগ্যপণ্যের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এক সপ্তাহের ব্যবধানে দেশী জাতের সব ধরনের পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৭-৯ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। ছোট সাইজের দেশী পেঁয়াজ কেজিতে ৬৭-৬৮ আর বড় সাইজের ৭২-৭৩ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
অন্যদিকে বর্তমানে পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬৭-৬৮ টাকায়। ভারতীয় পেঁয়াজের দাম দেশী পেঁয়াজের চেয়ে কম হলেও বিক্রি কম হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এ কারণে দেশের বিভিন্ন স্থলবন্দর থেকে ব্যবসায়ীরা ভারতীয় পেঁয়াজ সরবরাহ করছেন না।
এ বিষয়ে খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ী মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ‘ভারতের পেঁয়াজ বাজারে পাওয়া গেলেও চাহিদা কম। কয়েক বছর ধরে দেশী বড় জাতের পেঁয়াজ উৎপাদন হচ্ছে। তাছাড়া ভারতীয় পেঁয়াজের আমদানি খরচ বেশি হওয়ায় দেশী পেঁয়াজের চাহিদা ঊর্ধ্বমুখী হয়ে উঠেছে। ভারতীয় পেঁয়াজের সরবরাহ কম থাকায় কোরবানির ঈদের আগে পেঁয়াজের দাম কমার সুযোগ নেই।’
ব্যবসায়ীরা বলছেন, ভারতের পেঁয়াজ আমদানির মূল্য দেশী পেঁয়াজের চেয়ে বেশি। একসময় চট্টগ্রাম অঞ্চল এবং হোটেল, রেস্তোরাঁ ও বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে ভারতীয় পেঁয়াজের কদর ছিল। কিন্তু কয়েক বছর ধরে দেশে হাইব্রিড জাতের বড় ও মানসম্মত পেঁয়াজ উৎপাদন বেড়ে যাওয়ায় দেশী পেঁয়াজের কদর বেড়েছে। রফতানি উন্মুক্ত করে দেয়ার পরও ভারতের পেঁয়াজের পরিবর্তে দেশী পেঁয়াজ কিনছেন ক্রেতারা।
এদিকে কোরবানি ঈদের আগে দেশে পর্যাপ্ত চাহিদা সত্ত্বেও সরবরাহ সংকটে আদা-রসুনের দাম বেড়েছে। দুই সপ্তাহের ব্যবধানে আমদানীকৃত আদা-রসুনের দাম বেড়েছে কেজিতে ১৫-২০ টাকা। এছাড়া ঘূর্ণিঝড়ের কারণে বন্দর থেকে আমদানি পণ্য খালাস কার্যক্রম বন্ধ। ফলে শুধু দুই-তিনদিনের ব্যবধানে আদা ও রসুনের দাম কেজিতে অন্তত ১০ টাকা বেড়ে গেছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
চীনা রসুন এর আগে ১৮০-১৮২ টাকায় বিক্রি হয়েছে, কয়েকদিন আগেও যার দাম ছিল ১৮৮-১৯০ টাকা। গতকাল খাতুনগঞ্জ ও চাক্তাইয়ের বিভিন্ন আড়ত ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে।
গতকাল প্রতি কেজি চীনা আদা কেনা-বেচা হয়েছে ২২৫-২৩০ টাকায়, দুই সপ্তাহ আগে যার দাম ছিল ১৮০-১৯০ টাকা। মূলত আসন্ন কোরবানি ঈদের বাড়তি চাহিদা, ডলারের মূল্যবৃদ্ধি ও সাম্প্রতিক সময়ে ভারত থেকে আমদানি কমে যাওয়ায় বাজারে আদার দাম বাড়ছে।
আদা ও রসুন দেশে উৎপাদন হলেও এখনো এসব মসলাপণ্যে আমদানিনির্ভর বাংলাদেশ। আদার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ভারত, চীন, মিয়ানমার, ইন্দোনেশিয়ার ওপর নির্ভরশীল হলেও রসুনের ক্ষেত্রে নির্ভরতা বেশি চীনের ওপর। সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের উৎপাদন কম হওয়ায় আদা আমদানিতে চীনের ওপর শতভাগ নির্ভর করতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। কোরবানি ঈদে পেঁয়াজের পাশাপাশি আদা ও রসুনের চাহিদা সবচেয়ে বেশি হওয়ায় মৌসুমটিকে সামনে রেখে এ সব মাসলা পণ্যের দাম বাড়ছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।