জুমবাংলা ডেস্ক : অস্থির নিত্যপণ্যের বাজারে কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণে আসছে না কাঁচা মরিচের দাম। এরমধ্যেই এবার বাড়তে শুরু করেছে শুকনা মরিচের দামও। প্রতিকেজি শুকনা মরিচ এখন বিক্রি হচ্ছে ৫০০ টাকায়। আর পাইকারিতে বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকায়। আমদানি কমে যাওয়ায় দাম বাড়ছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের।
শুক্রবার (১৪ জুলাই) কেরানীগঞ্জের জিনজিরা ও আগানগর, পুরান ঢাকার শ্যামবাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়।
ক্রেতারা বলছেন, কাঁচা মরিচের ঝাঁজ কমতে না কমতেই বাড়ছে শুকনা মরিচের দাম। এতে বিপাকে পড়তে হচ্ছে। অনেকেই দামের কারণে কাঁচা মরিচ বাদ দিয়ে শুকনা মরিচ ব্যবহার শুরু করেছিলেন। এবার সেটিও নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে।
কেরানীগঞ্জের আগানগর বাজারের খুচরা বিক্রেতা জয়নাল বলেন, পাইকারি পর্যায়ে শুকনা মরিচ কিনতে খরচ হচ্ছে ৪০০ টাকা। পরিবহন ও অন্যান্য আনুসাঙ্গিক ব্যয় মিলিয়ে প্রতিকেজি মরিচের দাম দাঁড়ায় ৪৫০ টাকার ওপরে। তাই কিছু লাভের আশায় ৫০০ টাকায় মরিচ বিক্রি করছি।
পুরান ঢাকার শ্যামবাজারের নিউ সরকার বাণিজ্যালয়ের মোহাম্মদ বিল্লাল হোসাইন ঢালী বলেন, আমাদানি সংকটের কারণে ভারত থেকে মরিচ আসছে না। তাই কোরবানির ঈদের আগে থেকেই দাম কিছুটা বাড়তি। আড়ত পর্যায়ে প্রতিকেজি শুকনা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৪২০ টাকা।
আর পুরান ঢাকার শ্যামবাজারের দীঘিরপাড় বাণিজ্যালয়ের মালিক ইব্রাহিম বলেন, ডলার সংকটের কারণে পর্যাপ্ত এলসি খোলা যাচ্ছে না। এতে ব্যাঘাত ঘটছে আমদানিতে। তাই দাম বাড়ছে। ডলার সংকট কেটে গেলে কমে আসবে মরিচের দাম।
তবে শুকনা মরিচের দাম বেড়ে যাওয়ায় মরিচের গুড়ার দাম বাড়ার শঙ্কা করছেন ক্রেতা ও সংশ্লিষ্টরা। কেরানীগঞ্জের জিনজিরা বাজারের মিল মালিক আরিফ বলেন, যে হারে শুকনা মরিচের দাম বাড়ছে; তাতে গুড়া মরিচের দামও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই দ্রুত বাজার নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা নিতে হবে।
এদিকে বেশকিছু দিন ধরেই ঊর্ধ্বমুখী দেশের কাঁচা মরিচের বাজার। আজ ৪০ টাকা কমে তো, কাল বাড়ে ১০০ টাকা। এভাবেই লাগামছাড়াভাবে চলছে কাঁচা মরিচের বাজার।
কাঁচা মরিচের লাগামহীন বাজার নিয়ন্ত্রণে গত ২৫ জুন থেকে মরিচ আমদানির অনুমতি দিয়েছে সরকার। তবুও কোনোভাবে নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না দাম।
সরেজমিনে বাজার ঘুরে দেখা যায়, একদিনের ব্যবধানে খুচরা পর্যায়ে কাঁচা মরিচের দাম বেড়েছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা। বিক্রি হচ্ছে ৩৬০ থেকে ৪০০ টাকা কেজিতে। বৃহস্পতিবার বাজারে প্রতিকেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হয়েছে ৩২০ টাকায়।
বিক্রেতারা বলছেন, পর্যাপ্ত পরিমাণে আমদানি না হওয়ায় ও চাহিদা বাড়ায় দাম কমছে না কাঁচা মরিচের। আমদানি আরও বাড়ানো প্রয়োজন।
আলামিন হোসেন নামে এক বিক্রেতা জানান, ভারত থেকে যে পরিমাণ কাঁচা মরিচ আমদানি হচ্ছে, সেটি পর্যাপ্ত নয়। দেশের চাহিদা মেটাতে হলে আরও আমদানির প্রয়োজন।
আবিদ নামে আরেক বিক্রেতা বলেন, পাইকারি পর্যায় থেকেই মরিচ কিনতে হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩০০ টাকায়। এর ওপর পরিবহন খরচ রয়েছে। তাই অন্তত ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকায় বিক্রি না করলে লাভ করা সম্ভব নয়।
পুরান ঢাকার শ্যামবাজারের পাইকারি বিক্রেতা রিপন বেপারী জানান, আড়ত থেকে মরিচ কিনতে হচ্ছে ২৬০ থেকে ২৮০ টাকায়। এতে বাধ্য হয়ে ৩০০ টাকায় মরিচ বিক্রি করতে হচ্ছে। মূলত চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত মরিচ আমদানি না হওয়ায় দাম কমছে না।
আর অর্ণব নামে এক ক্রেতা বলেন, কোনোভাবেই নাগালে আনা যাচ্ছে না কাঁচা মরিচের দাম। মরিচ দিন দিন ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে। সরকারে উচিত কঠোর পদক্ষেপ নেয়া।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।