জুমবাংলা ডেস্ক : দাম না কমলে আমদানি করা হবে–বাণিজ্যমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের পর পাবনার হাট-বাজারগুলোতে পেঁয়াজের দাম কমতে শুরু করেছে। শুক্রবার জেলার বিভিন্ন হাটে প্রতি মণ পেঁয়াজ ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা কমে বিক্রি করতে দেখা গেছে।
যে পেঁয়াজ তিন-চার দিন আগে মণ প্রতি ২৮০০ টাকা থেকে ৩২০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে, সেগুলো ধানুয়াঘাটা ও হাজিরহাটে প্রকারভেদে মণ প্রতি ২২০০ থেকে ২৬০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
শুক্রবার রংপুরে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি সাংবাদিকদের বলেন, দুয়েকদিনের মধ্যে বাজারে দাম না কমলে ভারত থেকে আবার পেঁয়াজ আমদানি করা হবে।
শুক্রবার ধানুয়াঘাটা হাটে ঘুরে দেখা গেছে, দেশি পেঁয়াজের পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে। সেইসঙ্গে আগের হাটের তুলনায় পেঁয়াজের দাম কম। পেঁয়াজ আমদানির আগেই এমন দরপতনে হতাশ হয়েছেন চাষিরা।
বালুঘাটা গ্রামের কৃষক আফজাল হোসেন বলেন, “দাম বেশি দেখে পাঁচ মণ পেঁয়াজ নিয়ে আসছি। গত হাটে যে পেঁয়াজ ২৮০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হয়েছে, সেখানে একই পেঁয়াজ আজ ২২০০-২৩০০ টাকা দাম বলছে। কী করব বুঝতে পারছি না। যেহেতু গাড়ি ভাড়া করে হাটে পেঁয়াজ নিয়ে আসছি; তাই বিক্রি তো করতেই হবে।”
এ প্রসঙ্গে শরৎগঞ্জ বাজারের মারুফ এন্ড সবুজ পেঁয়াজের আড়তের মালিক সাইফুল সরকার বলেন, “এখান থেকে পেঁয়াজ কিনে ঢাকায় সরবরাহ করি। হঠাৎ করে ঢাকার পার্টির চাহিদা কম, বুঝতে পারলাম না। এ কারণে বাজারেও দাম কমে গেছে। শুক্রবার সবচেয়ে ভালো মানের পেঁয়াজ কিনেছি ২৫০০-২৬০০ টাকা মণ দরে। তবে আমার ধারণা আমদানির কথা শুনে ঢাকার পাইকাররা কেনা কমিয়ে দিয়েছে বলেই বাজারের এই অবস্থা।”
আরিফপুর হাজিরহাটের কৃষক আব্দুল হক বলেন, ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির কথা শুনেই পাইকররা কেনা কমিয়ে দিয়েছে। তবে বর্তমান যে বাজার দর আছে, এমন দাম থাকলেও কৃষকদের খুব একটা ক্ষতি হবে না।
ব্যবসায়ী আব্দুল আওয়াল বলেন, ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হচ্ছে, এমন খবরে মোকামগুলোতে পেঁয়াজের সরবরাহ আগের তুলনায় বেড়ে গেছে।
“অনেকে যারা বাড়তি দামের আশায় মজুত করেছিলেন, তারা পেঁয়াজ বাজারে ছেড়ে দিচ্ছেন; যার কারণে মোকামে পেঁয়াজের সরবরাহ বেড়ে গেছে। এতে করে পেঁয়াজের দাম খানিকটা কমেছে।”
চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, “মৌসুমের শুরুতে প্রতি মণ পেঁয়াজ ৯০০ থেকে ১১০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। আকারে বড় ও ভালো মানের কিছু পেঁয়াজ ১২০০ টাকা মণ ছিল। তবে মূলকাটা বা মুড়িকাটা পেঁয়াজ চাষে কিছুটা লাভবান হয়েছেন চাষি।
আটঘরিয়া উপজেলার চান্দাই গ্রামের পেঁয়াজ চাষি আরিফ মোল্লা জানান, সার, বীজ, চাষের খরচ, শ্রমিক খরচ বেড়ে যাওয়ায় পেঁয়াজ চাষ করে লাভবান হতে পারছেন না তারা। এক বস্তা পেঁয়াজ মাঠ থেকে বাড়ি নিতেও ৭০ টাকা ব্যয় হয়।
প্রতি মণ পেঁয়াজ কাটাতে নারী শ্রমিকদের দিতে হয় ৩০-৪০ টাকা। এরপর হাটে নিতে খরচ হয় আরও ২০ টাকা। সে হিসাবে উৎপাদনের পরও প্রতি মণ পেঁয়াজে ১০০ টাকা বাড়তি খরচ হচ্ছে। সেখানে মৌসুমের সময় যদি দুই হাজার টাকা করে মণ পাওয়া যেত তাহলে কিছুটা লাভবান হতেন চাষি।
সরকারের কাছে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ ও চাষের উপকরণের দাম কামানোর দাবি জানান ইসলামপুর গ্রামের চাষি ইব্রাহিম খলিল।
পাবনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে উপ-পরিচালক মো. জামাল উদ্দীন বলেন, মৌসুমের শুরুতেই মোট উৎপাদনের এক তৃতীয়াংশ পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে। এখনও কৃষকের ঘরে পর্যাপ্ত পেঁয়াজ মজুত রয়েছে। তবে দাম বাড়া-কমার বিষয়ে কিছু মজুতদারের কারসাজি রয়েছে।
পাবনায় ৭ থেকে ৮ লাখ টন পেঁয়াজ উৎপাদন হয়, যা দেশের মোট উৎপাদনের এক তৃতীয়াংশ বলে জানান এ কৃষি কর্মকর্তা।
বাজারে আসতে শুরু করেছে মিষ্টি ও রসালো স্বাদের দিনাজপুরী লিচু
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।