জুমবাংলা ডেস্ক : সিন্ডিকেট আর মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্যে প্রতি কেজি আলুর দাম ঠেকেছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা। অভিযোগ রয়েছে, আলুর দাম নিয়ন্ত্রণ করছে উৎপাদনের অন্যতম শীর্ষ জেলা মুন্সীগঞ্জের হিমাগার কেন্দ্রিক সিন্ডিকেট। হিমাগার গেটে আলুর পাইকারি ও খুচরা দরে রয়েছে বড় পার্থক্য। হাত বদল হলেই বাড়ছে আলুর দাম। গতবছর এই সময়ে খুচরা বাজারে আলুর দাম কেজিপ্রতি ছিল ৪৫ থেকে ৫০ টাকা।
ভোক্তাদের অভিযোগ: পর্যাপ্ত আলু মজুত সত্ত্বেও রেকর্ড দামে বিক্রি হচ্ছে আলু। এর জন্য মনিটরিং দুর্বলতাকে বড় কারণ বলছেন তারা। জিম্মি হয়ে বাড়তি দামে আলু কিনতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। এদিকে বাজারে এসেছে নতুন আলু, দাম হাকা হচ্ছে ২০০ টাকা কেজি পর্যন্ত।
পাইকারদের অভিযোগ: আলুর বাজার এখন হিমাগারকেন্দ্রিক সিন্ডিকেট বা মজুতদারদের নিয়ন্ত্রণে। তারাই পর্যাপ্ত মজুত থাকার পরও রেকর্ড দরে আলু কিনতে বাধ্য করছেন। আর খুচরা বিক্রেতারা দায়ী করছেন পাইকারদের। অস্বাভাবিক দামে আলু কিনতে বাধ্য হওয়ায় ক্ষোভে ফুঁসছেন ভোক্তারা।
প্রতিবছরের মতো আলু উৎপাদন মৌসুম শুরুর পরই হিমাগারে আলু সংরক্ষণ করা হয়। এরপরই দাম বাড়ানোর খেলা শুরু হয়। বর্তমানে শুধু মুন্সিগঞ্জ জেলার ৫৪ হিমাগারে মজুত আছে ১ লাখ ৫১ হাজার টন আলু। যার মধ্যে ৭১ হাজার টন খাবার আলু। এই আলু নিয়েই অসাধু সিন্ডিকেট কারসাজি চালিয়ে যাচ্ছে। বাজার নিয়ন্ত্রণের জন্য নিয়ন্ত্রিতভাবে আলু বাজারে ছাড়ছে।
মুন্সিগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের তথ্য বলছে: গত মৌসুমে মুন্সীগঞ্জ জেলায় ১০ লাখ ৩৬ হাজার ২৫৫ টন আলু উৎপাদন হয়। এবার ৩৪ হাজার ৬৬৫ হেক্টর জমিতে আবাদের লক্ষ্য নিয়ে শুরু হয়েছে নতুন মৌসুমের আলু রোপণ। প্রায় ৭৩ হেক্টর জমিতে ইতোমধ্যে রোপণ হয়েছে।
শনিবার রাজধানীর মোহাম্মদপুর টাউনহল, কাটাসুর বাজার, হাতিরপুল, রামপুরা কারওয়ান বাজার ঘুরে ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বর্তমানে খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। তবে বড় বাজার থেকে পাল্লা (৫ কেজি) হিসাবে কিনলে কিছুটা কমে পাওয়া যায়। ১৫ দিন আগে আলুর কেজি ছিল ৫৫-৬০ টাকা।
বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বলছেন: হিমাগার পর্যায়ে আলুর দাম বেড়ে ৬২ টাকায় উঠেছে। এমন দাম আগে কখনো দেখা যায়নি। আলুর বাড়তি চাহিদার কারণে মজুতদারেরা ইচ্ছেমতো দাম বাড়াচ্ছেন।
কারওয়ান বাজারে আলুর পাইকারি বিক্রেতা কবির হোসেন বলছেন: হিমাগার থেকে চাহিদা অনুসারে আলুর সরবরাহ পাচ্ছি না আমরা। আবার দাম বেশি থাকায় আলুর বিক্রিও আগের তুলনায় কিছুটা কমেছে।
এদিকে শীতকালীন সবজির সরবরাহ বাড়ায় বাজারে স্বস্তি ফিরতে শুরু করেছে। রাজধানীর এসব বাজার ঘুরে দেখা গেছে: সপ্তাহ ব্যবধানে সব ধরনের সবজি কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা কমেছে।
এসব বাজারে গ্রীষ্মকালীন সবজি কচুরমুখী ৬০ টাকা, বেগুন ৬০ থেকে ৭০ টাকা, করলা ৭০ থেকে ৮০ টাকা, পটল ৫০ থেকে ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০ টাকা, বরবটি ১০০ টাকায়, প্রতিটি লাউ বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা, পেঁপে প্রতি কেজি ৩০ থেকে ৪০ টাকা, ধুন্দুল ৭০ টাকা, চিচিঙ্গা ৭০ টাকা, কচুর লতি ৮০ থেকে ১০০ টাকা, ঝিঙা ১০০ টাকা শসা ৮০ টাকা এবং কাঁচামরিচ ১০০ থেকে ১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।