জুমবাংলা ডেস্ক : প্রায় ৩ বছর লালন পালন করে ‘রাজাবাবু’কে নিজের সন্তানের মতো বড় করেছেন জামালপুরের বকশীগঞ্জের কাঠ মিস্ত্রি রফিক ও সুফিয়া দম্পতি। কোরবানির জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত হয়েছে ২০ মণ ওজনের ষাঁড়টি। তাই এবারের কোরবানি ঈদে এটিকে বিক্রির করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা। জামালপুরের সবচেয়ে বড় কোরবানির পশু হিসেবে রাজাবাবুর নাম ছড়িয়ে পড়েছে পুরো জেলাজুড়ে।
উপজেলার পাখিমারা গ্রামের রফিক ও সুফিয়া আশা করছেন, বকশীগঞ্জে এবারের কোরবানির মাঠ কাঁপাবে ‘রাজা বাবু’।
কাঠমিস্ত্রি রফিক বলেন, আমার ব্রাহমা জাতের গাভীর পেটে ৩ বছর আগে রাজাবাবু জন্ম নেয়। এরপর স্ত্রী সুফিয়া বেগম তার নাম দেন রাজা বাবু। সেই থেকে রাজাবাবুকে নিজের সন্তানের মতো করেই বড় করেছেন তিনি। খাবার হিসেবে দেয়া হতো চাউলের জাও ভাত, দেশি ঘাস আর গমের ভুষি। এতে তার পিছনে প্রতি বছর খরচ হয়েছে প্রায় পৌনে ২ লাখ টাকা।
তিনি বলেন, গত ৩ বছরে প্রায় সাড়ে ৫ লাখ টাকা খরচ করে রাজাবাবুকে মোটাতাজা করা হয়েছে। এবারের কোরবানি ঈদে বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ইচ্ছা ছিল আরও বড় করার কিন্তু খাবারের দাম দিন দিন বেড়ে যাওয়ায় আমার পক্ষে এদিকে লালন পালন করা আর সম্ভব হচ্ছে না। ইতোমধ্যেই কয়েকজন এসেছিল রাজাবাবুকে কিনতে। কিন্তু তারা ৫ লাখ টাকা দাম বলেছেন। এই দামে বিক্রি করলে তো খরচের টাকাই তো উঠবে না।
তিনি আরও বলেন, রাজাবাবুকে আমি গরুর হাটে তুলবো না। উপযুক্ত দাম পেলে বাড়ি থেকে বিক্রি করবো।
সুফিয়া বেগম বলেন, তিন বছর পর সেই বাছরটি এখন সত্যিকারের রাজা বাবুতে পরিণত হয়েছে। সম্পূর্ণ দেশীয় খাবার খাওয়ানো হয় রাজা বাবুকে। রাজা বাবুকে প্রস্তুত করতে নিজের জমিতে ঘাসের চাষও করেছেন রফিকুল ইসলাম। উপজেলা প্রাণি সম্পদ কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের পরামর্শে কাঁচা ঘাস, ভুসি, চালের খুদ খাওয়ানো হয়েছে।
প্রতিদিন গোসল করানোসহ নিজের সন্তানের চেয়েও রাজা বাবুকে আদরে বড় করেন এই দম্পতি। দীর্ঘ তিন বছর পর রাজা বাবুর ওজন দাঁড়িয়েছে এবার ২০ মণ। তারা রাজা বাবুর দাম হাঁকাচ্ছেন ১২ লাখ টাকা। রাজা বাবুকে কিনতে ইতোমধ্যেই স্থানীয় পাইকাররা আসছেন পাখিমারা গ্রামে।
স্থানীয় গ্রামবাসী জানান, রফিক ও তার স্ত্রী নিজের গাভীর বাছুর থেকে কোরবানির যোগ্য করে তুলেছেন রাজা বাবুকে। বকশীগঞ্জ উপজেলায় রাজা বাবুর চেয়ে বড় কোরবানির জন্য বড় কোন পশু নেই। রফিক-সুফিয়া দম্পতি যেভাবে গরুটিকে লালন-পালন করেছেন তা সত্যিই অনুকরণীয়। প্রতিদিন দূর-দূরান্তের ক্রেতারা আসছেন রাজাবাবুকে দেখতে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।