জুমবাংলা ডেস্ক : কোরবানি ঈদের পর ডিমের দাম কমার নজির থাকলেও এবার বাজারে উল্টো চিত্র দেখা গেছে; প্রতি ডজনে পাঁচ থেকে ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়।
এদিকে মৌসুমের শেষ দিকে এসে সব ধরনের আমের দাম বাড়তে শুরু করেছে। পাশাপাশি গরমের কারণে আনারসের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় দামও ঊর্ধ্বমুখী হয়ে পড়েছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।
শুক্রবার রাজধানীর রামপুরা, শান্তিনগর, মালিবাগ, সেগুনবাগিচা কাঁচাবাজারসহ আরও কয়েকটি বাজার এবং ফলের দোকান ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।
কাঁচাবাজারে সবজির দামে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের মধ্যে ঈদের সময় হঠাৎ বেড়ে কেজিপ্রতি ২০০ টাকায় গিয়ে ঠেকা কাঁচামরিচের দাম দোকানভেদে ১৪০ থেকে ১৬০ টাকায় নেমেছে।
এটির সঙ্গে সরবরাহ বাড়ায় ও চাহিদা কমে যাওয়ায় এক সপ্তাহের ব্যবধানে শসা ও টমেটোর দাম ঈদের আগের দরের চেয়ে প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে বলে জানিয়েছেন দোকানিরা।
এদিন শসা ৫০ থেকে ৬০ টাকা এবং টমেটো ১২০ থেকে ১৪০ দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। এক সপ্তাহ আগে প্রতি কেজি শসা ১২০ টাকা এবং টমেটোর দাম ২৫০ থেকে ৩০০ টাকায় উঠেছিল।
তবে বাজারে ডিমের দাম বাড়লেও অপরিবর্তিত রয়েছে ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম।
রামপুরা কাঁচাবাজারের সবজি বিক্রেতা মো. সবুজ বলেন, “ঈদের আগে ও পরে কয়েক দিন আমরা ২০০ টাকা করে কাঁচা মরিচ বিক্রি করেছি। কারণ তখন কেনা দাম ছিল বেশি। গত দুই দিন ধরে সরবরাহ বেড়েছে, যে কারণে দাম কমেছে, হয়ত আরও কমতে পারে।”
তিনি জানান, ঈদের আগে ও পরে কয়েক দিন শসার সরবরাহ কম থাকায় দামও ছিল চড়া। ঈদের দুই সপ্তাহ আগে থেকেই টমেটোর দামও বেড়ে গিয়েছিল।
শান্তিনগর কাঁচাবাজারের দোকানি শাহ আলম বলেন, কোরবানির মাংসের সঙ্গে সালাদ জরুরি মনে করে অনেকে শসা-টমেটো ও কাঁচা মরিচ একসঙ্গে একটু বেশি করে কিনে নিয়ে গেছেন। ওই সময়ে দাম বেড়ে গিয়েছিল।
তবে যে কোনো পণ্যের দাম বাড়ানোর জন্য ব্যবসায়ীরা ‘উৎসবকে টার্গেট’ করে থাকেন বলে মন্তব্য করেন শান্তিনগরের বাসিন্দা মনোয়ার হোসেন রনি।
তার ভাষ্য, “দেখেন টমেটো ৩০০ টাকা হওয়ার কোনো মানে আছে? কাঁচা মরিচ দুই তিন দিনের ব্যবধানে দিগুণ হয় কীভাবে? এর জন্য দায়ী ব্যবসায়ীরাই, কারণ তারা সব সময় কোনো না কোনো উৎসব আর অজুহাত খুঁজে দাম বাড়ানোর জন্য। এবার ঈদেও এর কোনো ব্যবিক্রম হয়নি।”
বেড়েছে ডিম, অপরিবর্তিত মুরগি
শুক্রবার বিভিন্ন বাজারে ফার্মের ডিম ১২০ টাকা ডজন বিক্রি হতে দেখা যায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ১১০ থেকে ১১৫ টাকা।
এছাড়া ফার্মের সাদা ডিমের ডজন ১১৫ টাকা এবং হাঁস ও পাকিস্তানি মুরগির ডিম ডজনপ্রতি ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মালিবাগ বাজারের ডিম ব্যবসায়ী মো. আরাফাত বলেন, “ফার্মের ডিম আমাদের কেনা দাম হল ১০০ ডিম ৯০০ টাকা, এর মানে ১০৮ টাকা ডজন কিনতে হচ্ছে। নড়াচড়ার সময় কিছু ডিম ভেঙ্গেও যায়। এতে ডিমে খুব সীমিত লাভ থাকে।”
এখন বাজারে ১৫০ টাকা কেজি দরে ব্রয়লার এবং ২৮০ টাকা দরে সোনালী মুরগি বিক্রি হচ্ছে।
শান্তিনগর বাজারের ভাই ভাই ব্রয়লার হাউসের দোকানি ইমরান হোসেন জানান, ঈদের আগে ব্রয়লার মুরগি ১৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। পাকিস্তানি সোনালি জাতের মুরগি ২৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। শুক্রবারও একই দরে ব্রয়লার ও সোনালী মুরগি বিক্রি হতে দেখা যায়।
দাম বেড়েছে ফলের
ঈদের আগে আম্রপলি, হাড়িভাঙ্গা, ল্যাংড়া ও ফজলি জাতের আম ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে।
শুক্রবার একাধিক বাজারে এসব আমের দাম ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা যায়। এছাড়া নতুন করে বাজারে আসা বারি ৪ জাতের আম ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
ফল ব্যবসায়ীরা জানান, বেশ কিছু আম আর বাগানে নেই। বাজারে যে কয়েকটি জাতের আম আছে সেগুলোও শেষ দিকে; কিন্তু আমের চাহিদা কমেনি। এ কারণে দাম বেড়েছে।
অপরদিকে আনারসের মৌসুম শুরু হওয়ার আগেই মাস কয়েক ধরে রসালো ফলটি বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। গত কয়েক দিন ধরে তাপমাত্রা বেড়ে গরমের কারণে হঠাৎ চাহিদা অনেক বাড়লে দামেও এর প্রভাব পড়ে বলে ফল ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন।
শুক্রবার বিভিন্ন বাজারে মাঝারি আকারের আনারস জোড়া ১২০ থেকে ১৪০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে, যা এক সপ্তাহ আগে ৮০ থেকে ১০০ টাকার মধ্যে বিক্রি হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।