জুমবাংলা ডেস্ক : যশোরের চৌগাছায় এবার শারমিন সুলতানা জিনিয়া নামে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক সহকারী শিক্ষিকা বিধিবহির্ভূতভাবে মেডিকেল ছুটি নিয়ে চীনে অবস্থান করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
জিনিয়া উপজেলার সিংহঝুলী ইউনিয়নের মাজালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষিকা হিসেবে গত ২৩ জানুয়ারি যোগদান করেন।
গত ২৩ ফেব্রুয়ারি সর্বশেষ বিদ্যালয়ে ক্লাস নেওয়ার পর তিনি চীনে চলে গেছেন বলে জানিয়েছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কাজী নজরুল ইসলাম।
জিনিয়া যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক (সম্মান) সম্পন্ন করেন। পরে স্নাতকোত্তর করার জন্য চীনে যান। এর মধ্যে করোনা শুরু হলে দেশে চলে আসেন। এর মধ্যে প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষক হিসেবে চাকরি পেয়ে যোগদান করেন। এখন করোনার প্রকোপ কমে যাওয়ায় কোর্স সম্পন্ন করতে চীনে চলে গেছেন।
এর আগে উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের বড়খানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নিশাত মুনাওয়ারা নামের এক সহকারী শিক্ষিকা মেডিকেল ছুটি নিয়ে আমেরিকায় স্বামীর কাছে চলে যাওয়ার অভিযোগ ওঠে। বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর শিক্ষা অফিসের তদন্তে ঘটনাটি প্রমাণিত হয়।
সোমবার মাজালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গেলে দেখা যায় ওই শিক্ষিকা বিদ্যালয়ে নেই। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম জানান, গত ২৩ জানুয়ারি প্রাক-প্রাথমিকের শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন জিনিয়া। এক মাস পর তিনি প্রথমে তিন দিনের ছুটি নেন। এরপর মাস্টার্সের ব্যবহারিক একটি কোর্স করার জন্য তিনি চীনে চলে গেছেন।
তিনি আরও বলেন, ‘জিনিয়া মেডিকেল ছুটি নিয়ে চীনে যাওয়ার জন্য প্রসেস করছিলেন। এরই মধ্যে চীন থেকে কাগজপত্র চলে আসায় তিনি চীনে চলে যান। পরে তার বাবা মেডিকেল ছুটির দরখাস্ত নিয়ে এসে আমার সুপারিশ নিয়ে যান। সেসময় তিনি আমাকে জানান, এ বিষয়ে টিও (উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা) এবং এটিও (সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা) সব জানেন। তাদের সঙ্গে আলোচনা করেই ছুটি নেওয়া হচ্ছে। টিও-এটিওর কথা বলায় আমি সুপারিশ করেছি। তবে ছুটি অনুমোদন হয়েছে কি না জানি না।’
ওই শিক্ষিকার বাবা জাহাঙ্গীর আলম মোবাইলে বলেন, ‘জিনিয়া বর্তমানে চীনে অবস্থান করছে। সেখানে সে মাস্টার্সের একটি কোর্স করছে।’
এক মাসের বেশি সময় বিদ্যালয়ে ওই শিক্ষিকা অনুপস্থিত থাকলেও এ বিষয়ে কিছুই জানেন না ওই ক্লাস্টারের সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা নিছার উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘আমি ওই বিদ্যালয়ে পরিদর্শনে যাইনি। এ কারণে বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে কেউ এভাবে ছুটি নিয়ে দেশের বাইরে যেতে পারেন না।’
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ওই শিক্ষিকা মেডিকেল ছুটিতে আছেন। মেডিকেল ছুটি তো অর্জিত ছুটি, সদ্য যোগদান করায় ওই শিক্ষক ছুটি নিতে পারেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিনা বেতনে ছুটি নিতে পারেন।’
যশোর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা (ডিপিও) কর্মকর্তা আব্দুস সালাম বলেন, ‘এভাবে ছুটি নেওয়ার কোনো বিধান নেই। এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে প্রতিবেদন পাঠানোর জন্য নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। প্রতিবেদন পেলেই ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এ বিষয়ে উপজেলা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা ইউনূচ আলী বলেন, ‘শুনেছি একজন শিক্ষিকা চীনে অবস্থান করছেন। বেতন বিল জমা হলে বিষয়টি যাচাই করে দেখা হবে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।