জুমবাংলা ডেস্ক : বঙ্গভবনের সামনের বিক্ষোভকারীদের শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সারজিস আলম বলেছেন, আশাকরি রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বৃহস্পতিবারের মধ্যে পদত্যাগ করবেন। অন্যথায় আমরা ফের আন্দোলনে নামবো। এরপর বঙ্গভবন এলাকা ছাড়তে শুরু করেন বিক্ষোভকারীরা। তবে, আন্দোলকারীদের একটি অংশ এখনও বঙ্গভবনের সামনে অবস্থান করছেন।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোরব) রাত পৌনে ১২টার দিকে বঙ্গভবনের সামনে উপস্থিত হন হাসনাত আবদুল্লাহ ও সারজিস আলমসহ কয়েকজন সমন্বয়ক। এরপর বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে এসব কথা বলেন দুই সমন্বয়ক।
সারজিস আলম তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘আমরা আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন চুপ্পুকে সময় দিয়েছি। এর মধ্যে এই ঘটনার সুরাহা হবে। আমরা এই পদে এমন একজন গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিকে বসাতে চাই, যিনি ফ্যাসিস্টের আশ্রয়দাতা বা প্রশ্রয়দাতা হবে না।’
আগামী দুইদিনের মধ্যে নতুন রাষ্ট্রপতি চূড়ান্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ।
হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে পরামর্শ করে আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি হিসেবে কে আসবে।
তিনি বলেন, আমরা এমন একজনকে রাষ্ট্রপতি নিয়োগ করবো যাকে নিয়ে কোনো বিতর্ক বা প্রশ্ন উঠবে না। যেমন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়ে কোন প্রশ্ন উঠেনি।
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, বুধ ও বৃহস্পতিবারের আমরা চুপ্পুকে অপসারণ করবে। এরপর সকল রাজনৈতিক দলগুলোর মতামতের ভিত্তিতে পরবর্তী রাষ্ট্রপতি কাকে বানানো যায় সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, এই মূহুর্তে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পুকে পদচ্যুত করা হলে সাংবিধানিক শুন্যতা তৈরি হবে। তাই সব রাজনৈতিক দলের সাথে আলোচনা করে পরবর্তী রাষ্ট্রপতি কে হবেন সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার পর মো. সাহাবুদ্দিনকে পদচ্যুত করা হবে।
তিনি আরও বলেন, পুলিশ ও সেনাবাহিনী আমাদের সহযোগী। তাদের বিপক্ষে অবস্থান নিলে দেশ গৃহযুদ্ধের দিকে যাচ্ছে আন্তজার্তিক মহলে এমনটা প্রচারের সুযোগ পাবে শত্রুরা। সেনাপ্রধান দেশে ফিরলে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনা করে বৃহস্পতিবারের মধ্যে নতুন রাষ্ট্রপতি চূড়ান্ত করা হবে বলেও ঘোষণা দেন তারা। এরপর বিক্ষোভকারীরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
সরেজমিন দেখা গেছে, বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা মধ্যরাতের পরপর ঘটনাস্থল ত্যাগ করলেও সেখানে এখনও বেশকিছু উৎসুক জনতার উপস্থিতি রয়েছে। তবে, বঙ্গভবন এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। যেকোনো ধরণের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে সতর্ক অবস্থানে দেখা গেছে সেনাবাহিনীর বেশ কয়েকটি দলকে।
এসময় বৃহস্পতিবারের মধ্যে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ নিশ্চিতের আশ্বাস দিলে আন্দোলনরতরা বঙ্গভবন এলাকা ছাড়তে থাকেন।
এর আগে এদিন বিকেল থেকেই রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগের দাবিতে বঙ্গভবনের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন আন্দোলনকারীরা। একপর্যায়ে ব্যারিকেড ভেঙে বঙ্গভবনে ঢোকার চেষ্টা করেন তারা। এ সময় সেনাবাহিনী ও পুলিশ তাদেরকে বাধা দেয়।
এক পর্যায়ে গুলিস্তান আউটার স্টেডিয়ামের পাশ দিয়ে পুলিশের একটি বড় দল বঙ্গভবনের সামনে আসার চেষ্টা করলে বিক্ষোভকারীরা তাদের পথ আটকায়। তাদের তোপের মুখে পুলিশ পিছু হটলে পুলিশের গাড়িতে হামলা চালানো হয়। এতে গাড়িতে থাকা পুলিশ সদস্যরা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন।
এসময় হামলার মুখে কয়েকজন পুলিশ সদস্য অস্ত্র ফেলে চলে যান। পরে আন্দোলনকারীরা অস্ত্রগুলো সেনাবাহিনীর কাছে জমা দেন।
তবে ঘটনার সময় আন্দোলকারীদের একটি অংশ পুলিশ সদস্যদের রক্ষা করার চেষ্টা করে। তবে অপর একটি অংশকে পুলিশ সদস্যদের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে দেখা যায়। লাঠিসোটা দিয়ে পুলিশের গাড়িতেও হামলা চালায় তারা।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে আসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সারজিস আলমসহ বেশ কয়েকজন। এরপর বিক্ষোভকারীদের শান্ত করার চেষ্টা করেন তারা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।