জুমবাংলা ডেস্ক : চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার সরফভাটা ইউনিয়ন দিয়ে শিলক যাওয়ার পথে গ্রামীণ পিচঢালা সড়কের দুপাশে যে দিকেই চোখ যায় শুধুই সবুজের সমারোহ। মাঠের পর মাঠ চাষ করা হয়েছে বোরো ধান। সড়কের ক্ষেত্রবাজার এলাকা ফেলে কিছুদূর আগালেই পথচারীদের চোখ আটকে যায় বেগুনি ধান ক্ষেতে। যেখানে বিস্তৃত সবুজ ধানক্ষেতের মাঝে সকলের দৃষ্টি কাড়ছে বেগুনি রঙের ধানগাছ (পার্পল লিফ রাইস)।
সরেজমিনে বেগুনি ধান ক্ষেত ঘুরে দেখা যায়, বিস্তীর্ণ সবুজের মধ্যে শোভা পাচ্ছে বেগুনি রঙের ধান ক্ষেত। এই বেগুনি রং প্রকৃতিতে এনেছে নতুনমাত্রা। স্থানীয় কৃষক মনোরঞ্জন নাথ, রূপম নাথসহ কয়েকজন কৃষক ৪০ শতক জমিতে প্রথম বারের মতো এই বেগুনি রঙের ধানের আবাদ করেছেন। যাত্রাপথে এই ধানক্ষেত দেখতে থমকে দাড়ান পথচারীরা। অনেকেই এই ধানক্ষেতের সাথে ছবি তুলতেও দেখা গেছে।
জানা যায়, সৌন্দর্য ও পুষ্টিগুণে ভরপুর এ ধান। এতে ক্যানসার, ডায়াবেটিস প্রতিরোধী উপাদান আছে যা মানুষের শরীরে এন্টিবডি তৈরিতে সহায়তা করে। রোপণ থেকে ধান পাকতে সময় লাগে সর্বোচ্চ ১৩০–১৪০ দিন। অন্য জাতের ধানের চেয়ে এ ধানের গোছা প্রতি কুশির পরিমাণ বেশি থাকায় একর প্রতি ফলনও বেশ ভালো। অন্য সব ধানের তুলনায় এ ধান চিকন, তবে পুষ্টিগুণ অনেক। এ চালের ভাত খেতেও সুস্বাদু।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, গেল কয়েক বছর ধরে রাঙ্গুনিয়ার বিভিন্ন কৃষি মাঠে এই জাতের ধানের চাষাবাদ হয়ে আসছে।
এবারও রাঙ্গুনিয়ার বিভিন্ন কৃষি ক্ষেতে এই জাতের ধানের আবাদ হয়েছে। এতে হেক্টর প্রতি ৬ টন করে ফলন আসবে বলে আশা করছেন কৃষকরা। বীজ ধান হিসেবে প্রতি কেজি ধান বিক্রি হয় ২০০–৩০০ টাকা হারে। একদিকে ভিন্নজাত অন্যদিকে বাজারে এর ভাল দাম ও বাড়তি আকর্ষণ থাকায় এ ধানের প্রতি কৃষকসহ স্থানীয়দের দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে। অনেক কৃষক এই ধান চাষ করতে বীজ চেয়েছেন বলে জানাচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা।
বেগুনি ধান চাষি মনোরঞ্জন নাথ ও রূপম নাথ জানান, তারা বিলাইছড়ি থেকে নিজ উদ্যোগে বীজ সংগ্রহ করে শখের বশে এ ধানের চাষ করেছেন। এখন ধানের বয়স ৩০–৩৫ দিন। এরই মধ্যে বেশ দৃষ্টিনন্দন হয়ে উঠেছে ধানের জমি। ভালো ফলনের প্রত্যাশাও করেছেন তারা।
উপ–সহকারী কৃষি কর্মকর্তা উম্মে সালমা জানান, প্রতিদিন এলাকার কৃষকরা ছাড়াও উৎসুক মানুষ নতুন জাতের এই ধান দেখতে ছুটে আসছেন। ছবিও তুলছেন অনেকে। সবার আগ্রহ তৈরি হচ্ছে এ বেগুনি ধান নিয়ে। অনেকে বীজ পেতে ইতিমধ্যেই যোগাযোগ করছেন। কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে আবাদে সহায়তা করছেন বলে তিনি জানান।
উপ–সহকারী কৃষি কর্মকর্তা উত্তর কুমার শীল বলেন, এই ধানের বিশেষত্ব হচ্ছে ধানের গাছ এবং ধান দুটিই বেগুনি। পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ এই বেগুনি ধানে ক্যানসার, ডায়াবেটিস প্রতিরোধী উপাদান আছে, যা মানুষের শরীরে এন্টিবডি তৈরিতে সহায়তা করে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইমরুল কায়েস জানান, বোরো মৌসুমে সাধারণত এই ধরনের চাষাবাদ হয়। অনেকটা উফশী জাতের এ ধানে রোগবালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণ অনেকটাই কম হয়। এই জাতের চাষাবাদে আগ্রহী হয়ে উঠছেন কৃষকরা। কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে এই ধানক্ষেতগুলো নিয়মিত পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।