লাইফস্টাইল ডেস্ক : আমাদের শরীরের সেন্ট্রাল প্রসেসিং ইউনিট বা সিপিইউ হল মস্তিষ্ক। এই অঙ্গটি যেমন জটিল সব ইকুয়েশন নিমেষে সেরে ফেলে, ঠিক তেমনই প্রতিনিয়ত পুরো শরীরকে বার্তাও পাঠায়। আর এইসব নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করে শরীরের একাধিক অঙ্গপ্রত্যঙ্গ। তাই সুস্থভাবে বাঁচতে চাইলে মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের দিকে নজর দেওয়াটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে বাদাম বেশ উপকারি।
পুষ্টিগুণ দেখতে গেলে বাদামের কোন বিকল্প নেই। সেই সঙ্গে এটি সুস্বাদুও বটে। গবেষণায় জানা গেছে, নিয়মিত বাদাম খাওয়ার ফলে এটি বিভিন্ন রোগমুক্তির পাশাপাশি মস্তিষ্কে পুষ্টি জোগাতেও সাহায্য করে। কিন্তু এর কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও রয়েছে।
বাজারে অনেক রকমের বাদাম পাওয়া যায়। যা আলাদা আলাদা ভিটামিন ও প্রোটিনসমৃদ্ধ এবং এদের স্বাদও ভিন্ন। তবে আমাদের দেশে চার ধরনের বাদাম বেশ জনপ্রিয়। এগুলো হলো চীনা বাদাম, কাঠ বাদাম, কাজু বাদাম ও পেস্তা বাদাম। বাদামে আছে প্রচুর পরিমাণে মনো ও পলি অ্যানস্যাচুরেটেড ফ্যাটস, প্রোটিন ও ডায়েটারি ফাইবার যা রক্তের খারাপ কোলেস্টেরল কমিয়ে ভালো কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়াতে সাহায্য করে।
এছাড়াও এতে রয়েছে ভিটামিন ই, ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স এবং আরো কিছু মিনারেলস যেমন ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ফসফরাস, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন জিংক ও ম্যাঙ্গানিজ, কপার, সেলেনিয়াম।
কাঠবাদাম খেতে কমবেশি সবাই ভালোবাসে। এই বাদামে থাকে মস্তিষ্কের জন্য প্রয়োজনীয় দুটি পুষ্টিগুণ রিবোফ্লাভিন ও এল ক্যারনিটিন। যা মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এটি স্মৃতিভ্রম ও রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। প্রতিদিন ৪-৬ টি কাঠ বাদাম ভিজিয়ে খেলে মস্তিষ্কের কাজের উন্নতি ঘটে। শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় উপকারী ফ্যাট উৎস হিসেবে এটি বিশেষ ভূমিকা রাখে। বাড়ন্ত শিশুদের বুদ্ধি বিকাশের জন্য কাঠবাদাম অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি খাবার। এছাড়াও এটি চুল, ত্বক ও নখ ভালো রাখে।
অপরদিকে, চীনা বাদামে রয়েছে প্রচুর অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, ভিটামিন এ, ডি, বি, স্বাস্থ্যকর ফ্যাট ও পুষ্টি উপাদান। যা হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়। হার্টের কর্মক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। নিয়মিত বাদাম খেলে হৃদযন্ত্র ভালো থাকে এবং ৫০% হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমায়। আবার, নিয়মিত কাজু বাদাম খেলে হজমের নানা সমস্যা দূর হয়।
এছাড়াও বাদাম ডায়াবেটিস প্রতিরোধে বিশেষ ভূমিকা রাখে। কাঠবাদাম ইনসুলিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। চিকিৎসকদের মতে, খাবারের পর কাঠবাদাম খেলে এটি ইনসুলিনের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। টাইপ টু ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে চীনা বাদাম খুবই উপকারী। এটি রক্তের সুগারকে নিয়ন্ত্রণ করে। এছাড়াও হাড় ও দাঁত গঠনে বাদাম বিশেষ ভূমিকা রাখে।
বাদামের অনেক উপকারিতা থাকলেও অতিরিক্ত গ্রহণ করলে তা ক্ষতিকর হতে পারে। পুষ্টিবিদরা বলেন, যেহেতু বাদাম একটি পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার, তাই এটি পরিমিত খাওয়া উচিৎ। প্রতিদিন ৫০ থেকে ১০০ গ্রামের বেশি বাদাম খাওয়া উচিৎ নয়। যাদের কিডনি ও গলব্লাডারের সমস্যা রয়েছে তাদের কাঠবাদাম ও কাজুবাদাম এড়িয়ে চলা উচিত। কারণ এতে বিদ্যমান অক্সালেট ক্যালসিয়াম কিডনিতে পাথর সৃষ্টি করতে পারে। আবার, অতিরিক্ত ক্যালরিসমৃদ্ধ হওয়ায় বাদাম বেশি পরিমাণে খেলে ওজন বেড়ে যেতে পারে। অপরদিকে, বাদাম যদি লবণ দিয়ে ভেজে খাওয়া হয় তাহলে সেটি ব্লাড প্রেশার বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই, পর্যাপ্ত পুষ্টিগুণ পেতে হলে আমদের পরিমিত পরিমাণ বাদাম খেতে হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।