রঞ্জু খন্দকার, গাইবান্ধা থেকে : গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার কুমারগাড়ী গ্রামের আলী আজম মণ্ডল ঢাকায় থাকেন। তবে গ্রামের ছাতিয়ানতলা বাজারে তাঁর মুরগির খামার রয়েছে। এই খামারে মাসে তাঁর কয়েক লাখ টাকার ব্যবসা হয়। এর বেশির ভাগ লেনদেনই তিনি করেন মুঠোফোনে ব্যাংকিং সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বিকাশের মাধ্যমে।
শুধু খামার-ই নয়, ওই বাজারে আলী আজমের নামে আজম সুপার মার্কেট নামে বিপণিবিতানও রয়েছে। সেখানে তাঁর ১০টি দোকান। এসব দোকানপাট চালাতে যে অর্থের প্রয়োজন তার অনেকটাই লেনদেন হয় বিকাশের মাধ্যমে।
আলী আজম বলেন, তাঁর খামার ও দোকানপাট দেখাশোনার লোক রয়েছে। তবে আয়ব্যয় তিনি নিজেই করেন। খামারের লেনদেন ও দোকানের ভাড়া তুলতে প্রতি মাসে তাঁর পক্ষে গ্রামে আসা সম্ভব হয় না। ফলে বেশির ভাগ ভাড়া তিনি বিকাশের মাধ্যমেই নেন। খামার ও মার্কেট চালাতে তাঁর ব্যয়ও হয়। সেসব ব্যয় তিনি বিকাশে মেটান।
ছাতিয়ানতলা বাজারেই মশকুর মণ্ডলের দোকান। হিসাবনিকাশ দেখে তিনি জানান, তাঁর দোকান থেকে প্রতিমাসে প্রায় আড়াই শ লোক বিকাশের সেবা নেন। মাসে লেনদেন প্রায় ১৫ লাখ টাকা।
এই লেনদেনকারীদের কেউ ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় চাকরি করেন। কেউ করেন ব্যবসা। তাঁদের কয়েকজনের ভাষ্য, বিকাশে লেনদেন করার মাধ্যমে তাঁদের পরিবারের আয়ব্যয় মেটান তাঁরা। আবার গ্রামে অনেকের মাছ, মুরগির খামার, ছোটোখাটো ব্যবসা রয়েছে। সেখানকার লেনদেনও বিকাশে করেন তাঁরা।
মশকুরের দোকানে বিকাশ থেকে টাকা তুলতে এসেছিলেন বালাবামুনিয়া গ্রামের খলিল প্রধান। তিনি বলেন, তাঁর ছেলে চট্টগ্রামে পোশাক কারখানায় চাকরি করে। ছেলে প্রতি মাসে বিকাশেই টাকা পাঠায়। এই টাকা দিয়ে তিনি পরিবারের ব্যয়নির্বাহ থেকে শুরু করে চাষবাস করেন।
ছাতিয়ানতলা বাজারে আমিনুল ইসলামও বিকাশের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেন। তাঁর দোকানেও মাসে শতাধিক লোক কয়েক লাখ টাকার লেনদেন করেন। এসব লোকও বাইরে থাকেন।
সিলেটের একটি বেসরকারি স্কুলে পড়ান গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার ডুমুরগাছা গ্রামের জিল্লুর রহমান। তাঁর পরিবার গ্রামেই থাকে। তিনিও ছাতিয়ানতলা বাজারে মাঝেমধ্যেই বিকাশের মাধ্যমে টাকা পাঠান।
ইদের ছুটিতে গ্রামে এসেছেন জিল্লুর। তিনি বলেন, বাড়িতে তাঁর কোয়েল পাখির খামার। এই খামারের লেনদেনসহ পরিবারের কাছে টাকা পাঠাতে তিনি বিকাশ ব্যবহার করেন। অন্য মুঠোফোন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানে সবসময় টাকা পাওয়া যায় না। বিকাশে বেশির ভাগ সময়ই পাওয়া যায়। তাই সহজ হওয়ায় বিকাশকেই বেছে নেন তিনি।
গাইবান্ধার আহম্মদ উদ্দিন শাহ শিশু নিকেতন স্কুল এন্ড কলেজের অর্থনীতি বিভাগের প্রভাষক আহসান হাবীব মণ্ডল বলেন, গ্রামীণ লোকজনের বড় একটা অংশ ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন শহরে থাকেন। তাঁরা প্রতিমাসেই বিপুল অর্থ বিকাশে লেনদেন করেন। এই অর্থ দিয়ে গ্রামে কৃষি থেকে শুরু করে মাছ, মুরগির খামার, ব্যবসাবাণিজ্য চলে। ফলে এটা বলাই যায়, গ্রামীণ অর্থনীতির জ্বালানি জোগাতে সহায়তা করছে বিকাশ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।