সাইফুল ইসলাম, মানিকগঞ্জ : জনসাধারণের চলাচলের সুবিধার্থে মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ফুটপাত দখল করে অবৈধ দোকানপাট ও সড়কের অর্ধেকজুড়ে তিন চাকার যানের স্ট্যান্ড উচ্ছেদ করার পর মাস পেরোতেই ফের বেদখল হয়ে গেছে ফুটপাত। এতে চলাচলে ফের চরম ভোগান্তীতে পড়েছে পথচারীরা।
জানা গেছে, গত ২৩ নভেম্বর মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ গোলাম আজাদ খান ফুটপাতের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদসহ দোকানপাট ও মালামাল সরিয়ে নেয়ার নির্দেশনা দেন। সেসময় অবৈধ দোকানপাট ও মালামাল অন্যত্র সরিয়ে নিলেও কিছুদিন পর ফের ফুটপাত তাদের দখলে নেয় অবৈধ দখলদারেরা। এতে চলাচলে চরম ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ পথচারীরা। এর ফলে প্রতিনিয়তই ঘটে দূর্ঘটনা।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়, বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পথচারীদের চলাচলের জন্য নির্মিত ফুটপাতে ভ্যান, ট্রলি, ফ্লেক্সিলোড, ফল ও পান-সিগারেটের দোকান বসিয়ে ফুটপাত দখলে রেখেছে শতাধিক হকার। এছাড়া ফুটপাতের পাশের দোকান ও হোটেলে উঠানামা করার জন্য কাঠের তৈরি সিঁড়ি বসিয়ে পথচারীদের চলাচলে বিঘ্ন ঘটাচ্ছে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। এতে পথচারীদের চলাচলে যেমন অসুবিধা হচ্ছে তেমনি সিএনজি, হ্যালোবাইকসহ অন্যান্য যানবাহন পার্কিংয়ে অসুবিধা হচ্ছে চালকদের।
বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ফুটপাতে ভ্যানে করে হালিম বিক্রেতা আইয়ুব আলী জানান, তিন বছর ধরে মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় হালিম বিক্রি করেন তিনি। ডিম বিক্রেতা আরিফ নামের আরেকজন জানান, দীর্ঘদিন ধরেই বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ব্যবসা করেন তিনি। আগে পুলিশ মাসে মাসে টাকা নিত, তখন কোন ঝামেলা হতোনা। তবে এখন পুলিশ টাকা নেয়না। তাই মাঝে মাঝে এসে ঝামেলা করে। তিনি বলেন, আমরা ফুটপাতের ব্যবসা শিখেছি। অন্য কোন কাজ জানিনা। তাই পুলিশের দৌড়ানি খেয়ে হলেও এসব করেই সংসার চালাতে হয়।
ফুটপাতের পাশের ভাই ভাই হোটেলের মালিক মো: বাবুল হোসেন বলেন, হোটেলের সামনের ফুটপাতে হালিমের ড্যাগ বসিয়েছি এটা পুলিশ ও নেতারা জানে। তারা সবসময়ই আমার হোটেলে আসে। আমাদের কারণে পথচারীদের কোন সমস্যা হয়না। তারা নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারে।
পথচারী ফজলুল হক ও লিটন মিয়ার সাথে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তারা জানান, ফুটপাতের অবৈধ দোকান ও ফুটপাতের পাশের হোটেল ও অন্যান্য ব্যবসায়ীরা ফুটপাদ দখল করে রেখেছে। এতে আমাদের চলাচলে খুবই অসুবিধা হয়। পথচারীদের চলাচলের সুবিধার্থে দ্রুত ফুটপাত দখলমুক্ত করার দাবি জানান তারা।
সিএনজি চালক খোকন মিয়া বলেন, আশপাশের ব্যবসায়ী ও হকাররা ফুটপাত দখল করে রেখেছে। ফলে আমরা নির্দিষ্ট জায়গায় গাড়ি পার্কিং করতে পারিনা। এ কারণে বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সবসময় যানজট লেগেই থাকে।
হ্যালোবাইক চালক মিজানুর রহমান বলেন, ফুটপাতে অবৈধ দোকানপাট থাকায় আমরা সিরিয়াল মেনে গাড়ি চালাতে পারিনা। আমাদের অনিচ্ছা সত্ত্বেও হ্যালোবাইক ও সিএনজিগুলো এলোমেলো অবস্থায় থাকে। আবার রাস্তার মাঝখানে পেলে পুলিশ গাড়ি আটক করে। আমরা খুবই খারাপ অবস্থায় আছি। আমাদের সমস্যা দেখার কেউ নেই।
এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ ট্রাফিক পুলিশের ইনচার্জ মিরাজ হোসেন বলেন, ফুটপাতের অবৈধ দখলদারদের কারণে বাসস্ট্যান্ডের যানবাহনগুলো এলোমেলো অবস্থায় থাকে। ফুটপাত অবৈধভাবে বেদখল হওয়ার ফলে এসব যানবাহন নিয়ন্ত্রণে আমাদের ট্রাফিক বিভাগের অনেক সমস্যা হয়।
এ বিষয়ে মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ গোলাম আজাদ খান বলেন, ফুটপাতে অবৈধ দোকানপাট বসানোর কোন সুযোগ নেই। ফুটপাত দখলমুক্ত রাখতে নিয়মিত আমাদের অভিযান চলে। কেউ ফুটপাত দখল করে অবৈধভাবে দোকানপাট বসালে তাদেরকে উচ্ছেদসহ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।