Close Menu
Bangla news
    Facebook X (Twitter) Instagram
    Bangla news
    • প্রচ্ছদ
    • জাতীয়
    • অর্থনীতি
    • আন্তর্জাতিক
    • রাজনীতি
    • বিনোদন
    • খেলাধুলা
    • শিক্ষা
    • আরও
      • লাইফস্টাইল
      • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
      • বিভাগীয় সংবাদ
      • স্বাস্থ্য
      • অন্যরকম খবর
      • অপরাধ-দুর্নীতি
      • পজিটিভ বাংলাদেশ
      • আইন-আদালত
      • ট্র্যাভেল
      • প্রশ্ন ও উত্তর
      • প্রবাসী খবর
      • আজকের রাশিফল
      • মুক্তমত/ফিচার/সাক্ষাৎকার
      • ইতিহাস
      • ক্যাম্পাস
      • ক্যারিয়ার ভাবনা
      • Jobs
      • লাইফ হ্যাকস
      • জমিজমা সংক্রান্ত
    • English
    Bangla news
    Home পরকীয়ার অপবাদ গায়ে মেখে দুবার পেয়েছিলেন নোবেল—কেমন ছিল মেরি কুরির জীবন-সংগ্রাম?
    Research & Innovation বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

    পরকীয়ার অপবাদ গায়ে মেখে দুবার পেয়েছিলেন নোবেল—কেমন ছিল মেরি কুরির জীবন-সংগ্রাম?

    November 12, 20239 Mins Read

    বিজ্ঞান ও প্রযক্তি ডেস্ক : লোকটা হাঁটেন খুড়িয়ে, তারওপর ইউরেনিয়াম, রেডিয়ামের রহস্যে উন্মোচনে বিভোর। মনে কত ভাবনা, সে ভাবনারও স্থান-কাল-পাত্র ভেদাভেদ থাকে না। তাই আনমনে রাস্তা পার হতে গিয়ে ডেকে আনেন যমদূতকে। একটা গাড়ি এসে ধ্বাক্কা দেয় তাঁকে।

    মেরি কুরি

    খুলি ফেটে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে মগজ। সঙ্গে সঙ্গে যবনীকাপাত ঘটে এ মহান প্রেম কাহিনীর। যে প্রেম যেমন চিকিৎসাবিজ্ঞানে নতুন দুয়ার খুলে দিয়েছে, তেমনি বিজ্ঞানজগতে ভাঁড়ারকেও ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে তুলেছে অনেকখানি। ভদ্রলোকের নাম পিয়েরে কুরি।
    নোবেল পেয়েছেন ফিজিকসে।

    তাঁর করুণ মৃত্যুর খবর দ্রুতই পৌঁছে যায় মেরি কুরির কানে। তিনি ভেঙে পড়েন। এতদিনের সাজানো বাগান একমুহূর্তের ঝড়ে তছনছ হয়েছে; এ তিনি মানতে নারাজ।

    কিন্তু নিন্দুকের বাস শুধু বর্তমানেই নয়, ভবিষ্যতের কীট গহ্বরে তাঁরা ঘাপটি মেরে বসে থাকেন না। তাঁদের দাবি, পতিবিয়োগে মোটেও দঃখিত ছিলেন না মেরি। ভেঙে পড়াটা তাঁর লোখ দেখানো ভড়ং। আর মোটেও দুর্ঘটনায় নিহত হননি পিয়েরে। তিনি আসলে আত্মহত্যা করেছিলেন, স্ত্রীর অবাধ পরকীয়া সহ্য করতে না পেরে।
    সত্যিই কি মেরি কুরি উদ্দাম পরকীয়া মেতেছিলেন, যা পিয়েরেকে আত্মহত্যার প্ররোচনা যুগিয়েছিল?

    যা রটে, তার কিছু কিছু তো বটে। শিরি-ফরহাদ, লাইলি-মজনুরা শুধু কল্পকাহিনিতেই বাস করেন। আদতে এক প্রেমে সারাজীবন পার করে দিয়েছেন, এমন লোকের সংখ্যা সংসারে মহাবিরল। বিজ্ঞানের মহাবাস্ততা নিয়ে যাদের কারবার, তাদের কাছে ন্যাকা-ন্যাকা প্রেমের কোনো মূল্যই থাকে না। তাই বিজ্ঞানীদের অনেকেই বার বার প্রেমে পড়েছেন। মেরি কুরিও সেই দলের সদস্য। তিনি বার বার যেমন প্রেমে পড়েছেন; তেমনি পরকীয়াতে জড়িয়েছেন, তবে সেটা পিয়েরের মৃত্যুর পর। তার আগে পল ল্যাজভাঁর সঙ্গে যে জড়িয়ে পড়ার যে গুঞ্জন, তার কোনো শক্ত প্রমাণ মেলেনি।

    ২.
    মেরি প্রথম প্রেমে পড়েছিলেন সেই কৈশোরেই। অর্থের টানাটানি ছিল মেরির পরিবারের। বাবা সংসার চালানোর জন্য বাড়িতেই একটা স্কুল খুলে বসেছিলেন। ছেলেমেয়েরা পড়তে আসত। বাড়িতেই মেস বানিয়ে থাকত কোনো কোনো ছেলেমেয়ে। ভিটোল্ড রেমেকি নামে এক সুদর্শন ছাত্র তাঁদের বাড়িতে বোর্ডার হলো। প্রথম দর্শনেই তাঁর প্রেমে পড়ে গেলেন মেরি। মন তোলপাড় করা প্রেম যাকে বলে।

    কিশোর বয়সের প্রেম তো এমনই হয়। ভালোবাসার মানুষটি মিষ্টি করে কথা বললে ভালো লাগে, তার হাসি ভালো লাগে, তার নাম শুনলেও ভালো লাগে। তবু মুখফুটে মানুষটিকে বলা যায় না সে সব কথা। ভেতরে ভেতরে মান-অভিমান চলে। মেরি কুরির প্রেমটাও ছিল এমন। ছটফট করেন। কাছের মানুষকে জানাতে ইচ্ছে করে। পিঠোপিঠি বোন হেলা। বছর খানেকের বড়।

    কিশোরি কুরি থাকতে না পেরে বোনকে বলতে গেলেন সে কথা। কিন্তু হায়, হেলাও ততোদিনে ভিটোল্ডের প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছেন। শুরু হলো দুবোনের প্রতিযোগিতা—ভিটোল্ডের মন জয় করার।

    আবেগ যতই শক্তিশালী হোক, বাস্তবতার কাছে তাকে হার মানতে হয় প্রায়ই। ভিটোল্ড মেরি বা হেলা কাউকে ভালোবেসেছিলেন কিনা যায় না। তবে শিগগির মেরিদের বাড়ি ছেড়ে চলে যান ভিটোল্ড। মেরি আর হেলার কিশোর প্রেমের অপমৃত্যু ঘটে।

    অভাবের সংসারে লেখাপড়ার খরচ চালানো অসম্ভব হয়ে পড়েছিল মেরিদের। তাই বাধ্য হয়ে বাবার এক ধন্যাঢ্য বন্ধুর পরিবারে গর্ভনেসের কাজ নেন মেরি। সেই পরিবারেরই বড় ছেলে কাজিমি জোরাভোস্কি। সুদর্শন, শিক্ষিত, গণিতানুরাগী। প্রথম দর্শনেই তাঁর প্রেমে পড়ে যান মেরি। কাজিমিরও সামান আগ্রহী। ভালোবাসা শুরু। গোপনে-গোপনে চলে তাঁদের অভিসার। একবছর বেশ সুখেই কাটে প্রেমপর্ব। মেরি তখন আঠারো বছরের তরুণি। কাজিমির কয়েক বছর বেশি। বাবা-মাকে জানান কাজিমি—মেরিকে বিয়ে করতে চান। গরীব মেরিকে ছেলের বউ হিসেবে মানতে পারেননি বাবা-মা। কাজিমিও বাবা-মার মুখের ওপর কথা বলতে পারেননি। সুতরাং মেরির দ্বিতীয় প্রেমের করুণ সমাপ্তি। কিন্তু ভালোবাসা আর আবেগের কাছে পরাস্ত না হয়ে দুজনই স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পেরেছিলেন।

    ৩.
    এরপরে অবশ্য মেরি চলে যান ফ্রান্সে। বিখ্যাত সরবন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রথম হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ডিগ্রি সমাপ্ত করেন। এরপর গবেষণার ইচ্ছে তাঁর। কোথায় করবেন? টাকা-পয়সারও প্রচ- অভাব। তখন শিক্ষক জোসেফ কাওয়ালাস্কি তাঁকে পরিচয় করিয়ে দিলেন তরুণ গবেষক পিয়েরে কুরির সঙ্গে। কুরির বাবা ইউজিন কুরি নিজের বাড়িতেই একটা গবেষণাগার গড়ে তুলেছিনে। সেখানেই ভাই জাকা কুরি আর বাবাকে নিয়ে রাতদিন গবেষণা করতেন।

    মেরিকে দেখেই প্রেমে পড়ে গেলেন পিয়েরে। প্রথম দেখায় পিয়েরেকেও ভালো লেগেছিল মেরির। কিন্তু কাজিমির সাথে ভালোবাসার তিক্ত অভিজ্ঞতা ভুলতে পারেননি। তাই প্রথমদিকে এ বিষয়টাকে এড়িয়েই চলেতেন।

    যাইহোক, কুরিদের ল্যাবরেটরিতে গবেষণা করার সুযোগ পান মেরি। পিয়েরের সঙ্গে চুম্বক নিয়ে গবেষণায় মেতে ওঠেন। কিছুদিন চলে এভাবে। পিয়েরে প্রেমে পড়ে যান দুজন দুজনের, তীব্র ভালোলাগার অনুভূতি জাগে দুটি মনে—জন্ম নেয় এক বৈজ্ঞানিক প্রেমের উপখ্যান।
    পিয়েরেই বেশি আগ্রহী ছিলেন। অন্যদিকে মেরি বাস্তববাদী। শেষমেশ প্রস্তাবই দিয়ে বসেন পিয়েরে। মেরি সরাসরি না বলেননি, তবে বেশকিছু অজুহাত তুলে এড়িয়ে যেতে চেয়েছিলেন। আসলে মেরি ফিরে যেতে চেয়েছিলেন তাঁর নিজ দেশ পোল্যান্ডে। চেয়েছিলেন সেখানাকার স্কুলে শিক্ষকতা করতে। জবাবে পিয়েরে জানিয়েছিলেন, তিনিও গবেষণা-টনা ছেড়ে পোল্যান্ডে যেতে রাজি। সেখানে গিয়ে তিনিও না হয় শিক্ষকতা করবেন। এরপর আর ‘না’ বলতে পারেননি মেরি। দুই পরিবারের সম্মতিতে বিয়ে হয়। ১৮৯৫ সালের ২৬ জুলাই।

    সংসার, গবেষণা আর ভালোবাসা যেন হাত ধরাধরি করে চলছিল। পিয়েরে ও মেরি দুজনেই পিএইচডি ডিগ্রি নিয়েছেন। করছেন তেজস্ক্রিয়তা নিয়ে গবেষণা। স্বামী-স্ত্রীর সেই যৌথ গবেষণার সূত্র ধরেই আবিষ্কার হয়ে রেডিয়াম নামের তেজস্ক্রিয় মৌলটি। এজন্য ১৯০৩ সালে নোবেল কমিটিতে পদার্থবিজ্ঞানে জন্য সুপারিশ করা হয় দুটি নাম। হেনরি বেকরলে ও পিয়েরে কুরি। মেরির নাম ছিল না। পিয়েরে আপত্তি তোলেন। জানান রেডিয়াম আবিষ্কারের কৃতিত্ব তাঁর একার নয়। মেরি তাঁর সাথে না থাকলে মিলত না রেডিয়ামারে দেখা। নোবেল কমিটি বাধ্য হয় মেরির নাম যুক্ত করতে। ১৯০৩ সালে তেজস্ক্রিয়তা আবিষ্কারে যৌথভাবে তিন বিজ্ঞানী নোবেল পান পদার্থবিজ্ঞানে।

    বেশ সুখেই কাটছিল মেরি আর পিয়েরে বৈজ্ঞানিক ভালোবাসাময় জীবন। তাঁদের ঘর আলো করে আসে দুই কন্যা আইরিন কুরি ও ইভ কুরি। দুজন যোগ দিলেন সরবন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক পদে। হঠাৎ তাঁদের সুখের জীবনে নেমে আসে বিষাদের ছায়া। গাড়ি-দুর্ঘটনায় মর্মান্তিক মৃত্যু হলো পিয়েরের। ১১ বছরের ভালোবাসার সমাপ্তি সেখানেই!

    পিয়েরের প্রতি ভালোবাসা না হয় অক্ষুণ্ন ছিল আমৃত্যু, তাই বলে কি আর প্রেমে পড়তে নেই! কুরিও প্রেমে পড়েছিলেন। কিন্তু পুরুষতান্ত্রিক সমাজ নারীদের বিবাহবহির্ভূত প্রেমকে কখনোই ভালো চোখে দেখেনি আর সেই নারী যদি বিশ্বখ্যাত ব্যক্তিত্ব হন তাহলে তো কথাই নেই। চারপাশ থেকে ছ্যা ছ্যা করে উঠবে লোকজন, জাত গেলো জাত গেলো বলে শোর তুলবে, হয়ত ফাঁসি-টাসিও চেয়ে বসবে কেউ কেউ।

    সত্তর-আশি বছর আগে ইউরোপেও এর কোনো ব্যতিক্রম ছিল না। আইনস্টাইনের প্রেম-পরকীয়া নিয়ে মাথাব্যাথা তেমন ছিল না কারও, কিন্তু মেরি কুরিকে নিয়ে বিব্রত ছিল নোবেল কমিটিও। ১৯০৩ সালে প্রথমবার নোবেল পান মেরি। ফিজিকসে। দ্বিতীয়বার ১৯১১ সালে রসায়নে। দ্বিতীয়বার যখন নোবেল পাচ্ছেন মেরি, তখনও নোবেল কমিটি আবদার করেছিল, কুরি যেন নোবেল নিতে না আসেন। পুরস্কার তাঁর বাসায় পৌঁছে যাবে। কেন কুরির সঙ্গেই বার বার এমনটা হচ্ছে বার বার। এখানেও আছে নোবেল কমিটির সেই পুরুষতান্ত্রিক মনোভাব, যে মনোভাবের কারণে অনেক নারীই বঞ্চিত হয়েছেন নোবেল থেকে।

    কিন্তু কেন?

    ৪.
    প্যারিসের আকাশে-বাতাসে তখন বিষাক্ত বাতাসের মতো ছড়িয়ে পড়েছে মেরির অবৈধ প্রেমের কাহিনি। সেখানে খলনায়কের ভূমিকায় পল ল্যাজভাঁ, যিঁনি বয়সে কুরির চেয়ে বছর পাঁচেকের ছোট। লাজভাঁ কুরি দম্পত্তির অধীনে পিএইচডি করেছেন এবং তাঁদের ভালো বন্ধুও ছিলেন। পিয়েরর মৃত্যুর মেরি ও ল্যাজভাঁর বন্ধুত্বটা আরও গভীর হয়। মেরি একাকীত্বে ভুগছিলেন, অন্যদিকে লাজভ্যাঁ চরম পারিবারিক অশান্তিতে দিন কাঁপাচ্ছিলেন। ল্যাজভাঁর স্ত্রী প্রচণ্ড হিংসুটে আর স্বন্দেহপ্রবণ। তাই মানসিকভাবে ভীষণ অসুখি চার সন্তানের বাবা লাজভাঁ। ঘরে থাকতে চায় না মন, তাই মেরি কুরির গবেষণাগারেই দিন কাটে।

    একজন একাকীত্বে ভোগা নারী আর একজন দাম্প্যত জীবনে অসুখি মানুষ যখন দীর্ঘ সময় একসাথে কাটান, তখন পরস্পরের মনের নাগাল পেতে সময় লাগে না। সম্পর্কটা তখন আর স্রেফ গুরু-শিষ্য কিংবা বন্ধুত্বের গণ্ডীতের বাধা থাকে না। সম্পর্ক মোড় নেয় প্রেমে। হ্যাঁ, মেরি কুরি আর পল লাজভাঁ গভীর প্রেমে পড়েন। নিয়মিত দেখা হয়। এক সময় সেটা আর স্রেফে নিটোল প্রেম থাকে না। অনেকে এটাকে শুধুই গুজব বলে চালাতে চান। কিন্তু একবার দুই মেয়ে নিয়ে সমুদ্র দর্শনে বেরিয়েছিলেন মেরি। সেখানে গিয়ে লাজভাঁর জন্য মন উতাল হয়ে ওঠে মেরির। চিঠি লেখেন লাজভাঁকে। হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসায় ভরপুর সেই চিঠি। চিঠিটা লেখা হয় ১৯১০ সালের জুন মাসে।

    প্রেম যখন গভীর, অভিসারের জন্য জায়গা তো চাই। প্যারিসে একটা নিরিবিলি ফ্ল্যাট ভাড়া নেন তাঁরা। একান্তে সেখানে সময় কাটান দুই বিজ্ঞানী। এসব খবর কখনো চাপা থাকে না। লাজভাঁর স্ত্রীর কানে পৌঁছে যায় বিজ্ঞানীদ্বয়ের গোপন অভিসারের খবর। ল্যাজভাঁর স্ত্রী ধনীর দুলালী। প্রভাব-প্রতিপত্তি ব্যাপক। কুরিকে অপমান করেন। হুমকি দেন তাঁদের পরকীয়ার খবর পত্রিকায় ছাপিয়ে দেবেন। কুরির তখন জগৎজোড়া খ্যাতি। ট্যাবলয়েড পত্রিকার পাপারাজ্জিরা এখব লুফে নেবে, অনুমান করতে ভুল হয় না মেরির। গোপন অভিসারে ভাটা পড়ে। কিন্তু প্রেম না শোনে কলঙ্কের ভয়! নিয়মিত হৃদয় নিংড়ানো সম্ভাষণে ভরা ভুরি ভুরি চিঠি লেখেন কুরি লাজভাঁকে। তাতে শুধু ভালোবাসা নয়, আছে উপদেশ। কীভাবে স্ত্রীর কবল থেকে মুক্ত হবেন ল্যাজভাঁ, সে উপায়ও বাতলে দেন। সঙ্গে স্ত্রীকে ডিভোর্সের পরামর্শ। সেই পথে কীভাবে এগুতে হবে, থাকে সে পরিকল্পনাও। চিঠি পড়েন লাজভাঁ, মন আকুপাকু করে। কিন্তু কিস্যু করার নেই। প্রতিটা চিঠির জবাব দেন। পড়ার পর চিঠিগুলো জমা হয় সেই গোপন ফ্ল্যাটে।

    বেলজিয়ামের ব্রাসেলসে প্রতি বছর বসে বিজ্ঞানীদের সম্মেলন। আমন্ত্রিত হয়ে গেছেন মেরি আর পলও। জ্বালা ধরে যায় ল্যাজভাঁর শরীরে। ততদিনে পেয়ে গেছের স্বামীর গোপন অভিসারের ফ্ল্যাটটির খবরও। লোক দিয়ে দরজা ভাঙেন সেই ফ্ল্যাটের। বেরিয়ে আসে মেরির রাশি রাশি প্রেমপত্র!

    সেসব চিঠি চলে যায় পাপারাজ্জিদের হাতে। পত্রিকায় ছাপা হয় রসালো খবর। ঢিঁ ঢিঁ পড়ে বিজ্ঞান জগতেও। সাধারণ মানুষ থেকে বিজ্ঞানীরা পর্যন্ত—এক ছিঃ হাজার ছিঃ করেন। রাতারাতি কলঙ্কের কালিমায় ঢাকা পড়ে মেরি কুরির ইমেজ।

    ৫.
    মেরির বিরুদ্ধে উঠে পড়ে-পড়ে লাগলেন গুস্তাভ টেরি নামের এক সাংবাদিক। তাঁর ক্ষোভ বহুদিনের। একজন পোলিশ নারীর হাতে উড়বে ফরাসী বিজ্ঞানের ঝাণ্ডা, এ বিষয়টা মানতে তাঁর আপত্তি ছিল। তাই যত রকমের কালিমা লেপন করা যায় মেরির চরিত্রে, একটাও প্রয়োগ করতে বাদ রাখলেন না। দেখেশুনে ধৈর্যের বাঁধ ভাঙল লাজভাঁর। ডুয়েলের আহ্বান জানালেন টেরিকে। টেরিও রাজি। যথারীতি ময়দানে হাজির দুই প্রতিদ্বন্দ্বী। শত জনতার ভীড়। সাংবাদিক অথবা বিজ্ঞানী; এক জনের প্রাণ যাবে।

    কিন্তু কার? কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিবেক জাগ্রত হয় টেরির। পিস্তলের নল বিজ্ঞানীর দিকে তাক না করে মাটির দিকে তাক করেন। ল্যাজভাঁ চাইলেই গুলি চালিয়ে দিতে পারতেন টেরির বুকে। কিন্তু তিনিও পিস্তল নামিয়ে রাখেন। পরে টেরি পত্রিকায় কলাম লিখে কৈফিয়ৎ দিলেন, তিনি নাকি ফরাসী জাতীর বৃহত্তর স্বার্থের কথাই ভেবেই এমনটা করেছে। একজন বিজ্ঞানী হারাক তাঁর দেশ, এটা নাকি মানতে পারছিলেন না তিনি!
    লড়াই হোক বা না হোক, সর্বনাশ যা হওয়ার হয়ে গেছে। নোবেল কমিটিও বিব্রত বোধ করছে ঢাক-ঢোল পিটিয়ে নোবেল মঞ্চে কুরিকে হাজির করতে। তাই নোবেল কমিটির হর্তাকর্তারা কুরিকে অনুরোধ করেছিলেন, তিনি যেন নোবেল নিতে স্টকহোমে না আসেন। কিন্তু কুরি সে কথা পাত্তা না দিয়ে নোবেল মঞ্চে ঠিকই হাজির হয়েছিলেন।

    ডাবের ভেতর পানি আসে কোথা থেকে?

    কলঙ্কের খবর রটে যাওয়ার পর গোটা ফ্রান্সের বুদ্ধিজীবি থেকে সাধারণ মানুষ পর্যন্ত চেয়েছিল কুরিকে দেশ থেকে বের করে দেওয়া হোক। সরকার কী করত কে জানে, প্রথম বিশ্বযুদ্ধ এসে পাল্টে দেয় সব হিসাব। যুদ্ধাহত ফরাসী সৈন্যদের বাঁচাতে মেরি ছুটলেন যুদ্ধের ময়দানে। নিজের তৈরি অনেকগুলো এক্স-রে যন্ত্র নিয়ে। বহু সৈন্যের প্রাণ বাঁচল কুরির কারণে। বিদেশিনী, কলঙ্কিনী কুরি পরিণত ফলেন ফরাসীদের জাতীয় বীরে।

    ১৮৬৭ সালের আজকের দিনে অর্থাৎ ৭ নভেম্বর পৃথিবীতে এসেছিলেন মেরি কুরি। বিজ্ঞানজগতের এই আইকনিক নারীর প্রতি রইল বিনম্র শ্রদ্ধা।

    সূত্র :
    1. মেরিকুরি ডট অর্গ
    2. Marie curie scanda and recoery/American Institute of Physics

    জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।
    innovation research অপবাদ কুরির গায়ে, ছিল জীবন-সংগ্রাম? দু’বার নোবেল—কেমন পরকীয়ার পেয়েছিলেন প্রভা প্রযুক্তি বিজ্ঞান মেখে মেরি মেরি কুরি
    Related Posts
    Google AI

    ইন্টারনেট ছাড়া এআই ব্যবহার করবেন যেভাবে

    June 13, 2025
    Motorola Edge 60

    লঞ্চ হল Motorola Edge 60, জানুন বিস্তারিত

    June 13, 2025
    OnePlus 13s

    OnePlus 13s ফোনের সেল শুরু, জেনে নিন দাম এবং অফার ডিটেইলস

    June 13, 2025
    সর্বশেষ খবর
    Google AI

    ইন্টারনেট ছাড়া এআই ব্যবহার করবেন যেভাবে

    Somu

    মাজারে ছেড়ে কোথাও যেতে চাচ্ছেন না সমু চৌধুরী

    Motorola Edge 60

    লঞ্চ হল Motorola Edge 60, জানুন বিস্তারিত

    Sakib Khan

    অনুদানের টাকা ফিরিয়ে দিলেন শাকিব খান

    Best AI Tools for Resume Creation 2025: Land Jobs Faster

    Best AI Tools for Resume Creation 2025: Land Jobs Faster

    Somu Chowdhury

    অভিনেতা সমু চৌধুরী ময়মনসিংহের গফরগাঁও গেলেন কীভাবে?

    Top Mobile App Ideas for Startups 2025: Innovate and Grow

    Top Mobile App Ideas for Startups 2025: Innovate and Grow

    OnePlus 13s

    OnePlus 13s ফোনের সেল শুরু, জেনে নিন দাম এবং অফার ডিটেইলস

    Tara

    স্টারলিংকের দিন শেষ, আসছে তারা

    Logitech Technological Advancements: Revolutionizing Interactive User Experiences

    Logitech Technological Advancements: Revolutionizing Interactive User Experiences

    • About Us
    • Contact Us
    • Career
    • Advertise
    • DMCA
    • Privacy Policy
    © 2025 ZoomBangla News - Powered by ZoomBangla

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.