লাইফস্টাইল ডেস্ক : দিনরাত মজে স্মার্টফোনে। এমনকী রাতেও স্মার্টফোন না দেখলে ঘুমই আসতে চায় না। আর এই ভুলটাই করেছিলেন 30 বছরের এক মহিলা। যার মাশুল হিসেবে খোয়া গিয়েছে তাঁর দৃষ্টিশক্তি। হায়দরাবাদের অ্যাপোলো হসপিট্যালের নিউরোলজিস্ট ড. সুধীর কুমার সম্প্রতি টুইটারে শেয়ার করেছেন সেই গল্প। করোনা পরবর্তী সময়ে এমনিতেই কয়েক গুণ বেড়েছে আমাদের স্ক্রিন টাইম। যার প্রভাব পড়েছে আমাদের উপরে অনেকটাই। অফিস-কাছারির কাজ তো করতেই হবে। বাদবাকি সময়ের অনেকটাই আমরা দিয়ে ফেলি এই মোবাইলের পিছনে। বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা, সোশ্যাল মিডিয়া স্ক্রল বা OTT প্ল্যাটফর্মে সময় কাটানো, বিনোদনের প্রয়োজন মেটালেও চোখের উপর কিন্তু চাপ ফেলে অনেকটাই। শুধু তাই নয়। এর প্রভাব পড়ে আমাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উপরেও। তবে কয়েকটি বিষয়ের দিকে খেয়াল রাখলে কিন্তু বহু ক্ষেত্রেই এই ক্ষতির হাত থেকে বাঁচা যেতে পারে। স্মার্টফোনের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে চোখকে বাঁচাতে কোন কোন নিয়ম মেনে চলবেন? দেখে নিন চট করে।
ব্যবহার করুন ডার্ক মোড
মোবাইলের উজ্জ্বল আলো বহু ক্ষেত্রেই চোখে যন্ত্রণা দেয়। বিশেষত অন্ধকারে তো বটেই। সেক্ষেত্রে মোবাইলের ডার্ক মোড অর্থাৎ ডার্ক থিম ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছেন অভিজ্ঞরা। মোবাইলের Settings অপশনের ভিতরে Display-এর ভিতরেই পাবেন ডার্ক থিম অপশনটি। ব্লু লাইটের বাড়বাড়ন্তকে অনেকটাই কমিয়ে দেয় এই ডার্ক থিম। যার ফলে চোখে চাপ পড়ে অনেক কম। নিজের প্রয়োজন মতো ডার্ক মোড ও লাইট মোডে সুইচও করতে পারেন আপনি। এর জন্য একটি ডেডিকেটেড আইকনও থাকে মোবাইলের কুইক ট্রে-তে।
স্ক্রিন ব্রাইটনেস অ্যাডজাস্ট করুন
খুব বেশি বা খুব কম ব্রাইটনেস এবং কনট্রাস্টই কিন্তু ক্ষতিকর চোখের জন্য। তাই মোবাইলেরSettings-এ ঢুকে সবার আগে সেই ফিচার্সটি অ্যাডজাস্ট করেন। আর বারবার তা করতে অনিহা লাগলে, আপনি অ্যাডপ্টিভ ব্রাইটনেস সেটিংসটিও ব্যবহার করতে পারেন। আপনার আশপাশে আলোর পরিমাণ বুঝে এবং তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে মোবাইলের ব্রাইটনেস পাল্টে যাবে আপনাআপনিই। ফলে আপনাকে সেটিংসে গিয়ে ব্রাইটনেস পাল্টাতে হবে না বারবার।
চোখের পাতা ব্লিঙ্ক করতে ভুলবেন না
আমাদের অনেকেরই অভ্যেস রয়েছে একদৃষ্টে মোবাইলের দিকে চেয়ে থাকার। আর এর ফলে চোখের উপর অনেক বেশি চাপ পড়ে। মোবাইল দেখুন বা ল্যাপটপে কাজ করুন, এমনকী টিভি দেখলেও চোখের পাতা ফেলতে ভুলবেন না। মোবাইল ব্যবহারের সময় প্রতি আধঘণ্টায় কমপক্ষে 20 বার করে চোখের পাতা ফেলার চেষ্টা করুন। মাঝেমধ্যে চোখ বুজতে পারলে মাথাও কিন্তু কিছুক্ষণ বিশ্রাম পায়।
ব্যবহার করুন Digital WellBeing feature
প্রায় প্রতিটি মোবাইলেই থাকে ডিজিটাল ওয়েলবিং ফিচার। এই ফিচারটি ব্যবহার করে কিন্তু স্ক্রিন টাইম অনেকটাই কমানো সম্ভব। অ্যাপ ব্যবহারে রাশ টানা হোক বা সোশ্যাল মিডিয়া থেকে দূরত্ব বাড়ানোর ক্ষেত্রেও কিন্তু অব্যর্থ হতে পারে এই দাওয়াই। Android মোবাইলে যা Digital WellBeing, iPhone-এ তেমনি Screen Time অপশন। মোবাইলের নেশা মাত্রা ছাড়ালে ব্যবহার করতেই পারেন দুর্দান্ত এই ফিচার। দু’ক্ষেত্রেই মোবাইলের Settings থেকে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে ফিচারটিকে।
Text হোক আকারে বড়
একে মোবাইলেরওই টুকু স্ক্রিন, সেখানে খুদে খুদে হরফ কিন্তু বেশ চাপ ফেলে চোখের উপরে। ফলে চেষ্টা করুন আকারে সামান্য বড় টেক্সট ব্যবহার করতে। মোবাইলের Settings-এ গিয়ে Display বা Personalization-এ ঢুকে টেক্সট সাইজ সুবিধা মতোন বাড়িয়ে নিন। তাতে মেসেজ পড়তে বা মোবাইলের অন্য কাজেও বেশ সুবিধা হবে।
মোবাইলের স্ক্রিন পরিষ্কার রাখুন
মোবাইলভর্তি একগুচ্ছ অ্যাপ। আর সেসব হোমস্ক্রিন জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে বহু সময়েই। সেগুলিকে গুছিয়ে রাখুন হোম স্ক্রিনে। এর সঙ্গে কিন্তু মানসিক স্বাস্থ্যও কিছুটা জড়িত। পাশাপাশি মোবাইলের বাইরের স্ক্রিনটিও পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করবেন। তাতে চোখে কম স্ট্রেন পড়ে। একটি পরিষ্কার, নরম কাপড় দিয়ে স্ক্রিন পরিষ্কার করুন নিয়মিত। জল বা সাবান ব্যবহারের কোনও প্রয়োজন নেই। হালকা একটি মাইক্রোফাইবার হলেই চলবে।
মেনে চলুন 20-20-20 রুল
এই ডিজিটাল যুগে ডিজিটাল স্ক্রিনথেকে পালানোর উপায় কোথায়! তাই মোবাইল হোক বা ল্যাপটপে কাজ। সব সময় মেনে চলুন 20-20-20 রুল। কী সেই নিয়ম। প্রতি 20 মিনিট ছাড়া ছাড়া একবার স্ক্রিন ছেড়ে চোখ ঘোরাতে হবে অন্তত 20 ফুট দূরে থাকা কোনও জিনিসের দিকে। আর এক-দু সেকেন্ড নয়, কমপক্ষে 20 সেকেন্ড তাকিয়ে থাকতে হবে সেই জিনিসটির দিকে। আর এই নিয়ম মানতে পারলে আবার চোখের উপর ডিজিটাল স্ক্রিনের চোখরাঙানী অনেকটাই কমবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।