বিজ্ঞান ও প্রযক্তি ডেস্ক : কল্পবিজ্ঞানকে বাস্তব রূপ দিতে এবার তৈরি হচ্ছে স্পেস এলিভেটর। জাপানি এক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান মহাকাশে যাওয়ার জন্য একটি এলিভেটর নির্মাণ শুরু করতে যাচ্ছে। ২০২৫ সাল নাগাদ এই স্পেস এলিভেটর স্থাপনের কাজ শুরু হবে। এলিভেটরের মাধ্যমে মহাকাশে যাত্রা অনেক কম খরচে ও নিরাপদে হবে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
জনপ্রিয় ব্রিটিশ লেখক আর্থার সি ক্লার্ক তাঁর একটি বইয়ে স্পেস এলিভেটরের সাহায্যে মহাকাশযাত্রার ধারণাটি তুলে ধরেছিলেন। আর্থার সি ক্লার্কের বিজ্ঞানসম্মত ব্যাখ্যা অনেক বিজ্ঞানীকে আকৃষ্ট করেছিল। শুধু এটিই নয়, এমন অনেক কিছুই কল্পবিজ্ঞানে আছে যা বাস্তবে রূপায়িত করে আসছেন বিজ্ঞানীরা।
এরই ধারাবাহিকতায়, জাপানি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ওবাইসি কর্পোরেশন, মহাকাশে যাওয়ার জন্য একটি এলিভেটর নির্মাণের সিদ্ধান্ত জানিয়েছে। ২০২৫ সাল নাগাদ স্পেস এলিভেটর স্থাপনের কাজ শুরু করার পরিকল্পনা করছে প্রতিষ্ঠানটি।
বর্তমানে মহাকাশে যাতায়াতের একমাত্র রাস্তা রকেট হলেও এলিভেটরের মাধ্যমে এই যাতায়াত অনেক কম খরচে ও নিরাপদে পরিচালনা করা সম্ভব হবে বলে মনে করে ওবাইসি কর্পোরেশন।
স্পেস এলিভেটর বলতে টেথার বা লম্বা এক শিকলকে বোঝায়, যেটি পৃথিবীপৃষ্ঠ থেকে মহাশূন্য পর্যন্ত বিস্তৃত হবে। এই পথ দিয়ে চলাচল করতে পারবে বিভিন্ন তড়িৎ চুম্বকীয় যানবাহন, মানুষ এবং বিভিন্ন ধরনের ভারী মালামাল।
ওবাইসি কর্পোরেশন ২০৫০ সালের মধ্যে স্পেস এলিভেটর নির্মাণ করতে বদ্ধপরিকর। তাদের দাবি, এর মাধ্যমে মহাশূন্যে পণ্য পরিবহনের খরচ কমবে ৯০ শতাংশ।
রকেটের মাধ্যমে পণ্য পাঠাতে প্রতি কেজিতে খরচ হয় প্রায় ২২ হাজার ডলার। স্পেস এলিভেটর ব্যবহার করলে তা নেমে আসবে ২০০ ডলারে। এ ছাড়া মহাকাশের দূরবর্তী অভিযানের জন্য এটিকে বন্দর হিসেবেও ব্যবহার করা যাবে।
স্পেস এলিভেটরের মূল অংশ তৈরি হবে কার্বন ন্যানোটিউবের ৩৬ হাজার কিলোমিটার লম্বা কেবল দিয়ে। কেবল লের একটি প্রান্ত যুক্ত থাকবে পৃথিবীপৃষ্ঠে।অন্যটি থাকবে মহাশূন্যের ৩৬ হাজার কিলোমিটার ওপরে, পৃথিবীর কক্ষপথে। কেবল ও এলিভেটরের ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য কেবলের অন্য প্রান্ত যুক্ত করা হবে ১৩ হাজার টনের মহাকাশ স্টেশনের সঙ্গে।
এলিভেটর হিসেবে থাকবে বিদ্যুৎ-চালিত রোবটিক গাড়ি। কেবলটি তৈরি করতেই প্রায় ২০ বছর সময়ের প্রয়োজন এবং এর জন্য খরচ হবে আকাশছোঁয়া। তবে ধারণা করা হচ্ছে, এটি নির্মাণ হয়ে গেলে মহাশূন্য ভ্রমণ চলে আসবে সাধারণ মানুষের হাতের নাগালে। সূচনা হবে মানুষের মহাকাশ জয়ের নতুন অধ্যায়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।