Close Menu
Bangla news
    Facebook X (Twitter) Instagram
    Bangla news
    • প্রচ্ছদ
    • জাতীয়
    • অর্থনীতি
    • আন্তর্জাতিক
    • রাজনীতি
    • বিনোদন
    • খেলাধুলা
    • শিক্ষা
    • আরও
      • লাইফস্টাইল
      • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
      • বিভাগীয় সংবাদ
      • স্বাস্থ্য
      • অন্যরকম খবর
      • অপরাধ-দুর্নীতি
      • পজিটিভ বাংলাদেশ
      • আইন-আদালত
      • ট্র্যাভেল
      • প্রশ্ন ও উত্তর
      • প্রবাসী খবর
      • আজকের রাশিফল
      • মুক্তমত/ফিচার/সাক্ষাৎকার
      • ইতিহাস
      • ক্যাম্পাস
      • ক্যারিয়ার ভাবনা
      • Jobs
      • লাইফ হ্যাকস
      • জমিজমা সংক্রান্ত
    • English
    Bangla news
    Home ছাত্র আন্দোলনের বিশ্ব ইতিহাস ও বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলন
    Bangladesh breaking news জাতীয়

    ছাত্র আন্দোলনের বিশ্ব ইতিহাস ও বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলন

    Saiful IslamJuly 30, 2024Updated:July 30, 202410 Mins Read
    Advertisement

    জুমবাংলা ডেস্ক : দেশের উন্নয়ন অনেকাংশে নির্ভর করে দেশের শিক্ষিত এবং দক্ষ কর্মশক্তির ওপর। তাদের মধ্যে ছাত্রদের ভূমিকা অপরিসীম। ছাত্ররা দেশ গড়ার কারিগর। ছাত্ররা তাদের শিক্ষাকে কাজে লাগিয়ে অসীম ধৈর্য্য, মেহনত, ত্যাগ আর তিতিক্ষার মধ্য দিয়ে গড়ে তুলতে পারে একটা সুশৃঙ্খল সমাজ তথা সমৃদ্ধিশালী রাষ্ট্র। ছাত্ররা যে কোনো অধিকার আদায়ে সচেষ্ট। তবে ছাত্রদের দাবি আদায় করতে ছাত্র আন্দোলনের ইতিহাস বহু পুরনো। নিজেদের অধিকার ছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন ইস্যুতে পৃথিবীর নানা প্রান্তে অসন্তোষ ছড়িয়েছিল ছাত্রদের মধ্যে। বাংলাদেশের অভ্যুত্থানে ছাত্র আন্দোলন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। শুধু বাংলাদেশে নয়, বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন সময়ে অধিকার আদায়ে মাঠে নেমেছে শিক্ষার্থীরা। যুগে যুগে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গুরুত্বপূর্ণ কিছু ছাত্র আন্দোলনের ইতিহাস তুলে ধরা হলো-

    Protest

    প্রথম ছাত্র আন্দোলন

    ইতিহাসে প্রথম ছাত্র আন্দোলন হয় চীনে, ১৬০ খ্রিস্টাব্দে।ইমপেরিয়াল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তখন সরকারের কয়েকটি নীতির প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছিলেন। তাদের আন্দোলনের নেতৃত্বে ছিলেন কিছু মেধাবী ছাত্রনেতা, যারা তুলনামূলকভাবে গরিব পরিবার থেকে এসেছিলেন। তাদের এই আন্দোলন সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছিল। প্রায় ৩০ হাজার মানুষ সেই আন্দোলনে অংশ নেয় এবং তাদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে।তবে, সরকার এই আন্দোলন কঠোরভাবে দমন করে এবং ১৭২ জন শিক্ষার্থীকে কারাগারে নিক্ষেপ করে, যেখানে তাদের অমানুষিক নির্যাতনের শিকার হতে হয়।

    ফরাসি বিপ্লব ও বোহেমিয়ান বিদ্রোহ

    ফরাসি বিপ্লবের সময় ছাত্ররা বিপ্লবী আন্দোলনের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। ফ্রান্সের শিক্ষার্থীরা রাজা ও সামন্ততন্ত্রের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে ওঠে। তারা নতুন এবং গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে রাস্তায় নেমে আসে।১৮৪৮ সালের বোহেমিয়ান বিদ্রোহের সময়, ইউরোপের বিভিন্ন দেশের ছাত্ররা জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে অংশ নেয়। তারা তাদের নিজ নিজ দেশের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে লড়াই করে।

    হোয়াইট রোজ আন্দোলন

    দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে মিউনিখ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নাৎসি শাসনের বিরুদ্ধে এক অহিংস প্রতিরোধ আন্দোলন শুরু করেন। তারা ‘হোয়াইট রোজ’ নামের একটি গ্রুপ গঠন করেন এবং নাৎসি শাসনের নির্মমতা সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করার জন্য লিফলেট বিতরণ শুরু করেন। তাদের এই প্রচেষ্টা নাৎসি সরকারের বিরুদ্ধে জনমত গঠন করতে সহায়তা করে।তবে, ১৯৪৩ সালে তাদের গ্রেপ্তার করা হয় এবং বিচার শেষে ছয়জন প্রধান সদস্যকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। এই আন্দোলন নাৎসি প্রোপাগান্ডা মেশিনে কিছুটা হলেও ফাটল তৈরি করতে সক্ষম হয়েছিল।

    গ্রিনসবোরো অবস্থান ধর্মঘট

    যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলিনার উলওর্থ লাঞ্চ কাউন্টারে সাদা-কালো ভেদাভেদের প্রতিবাদে চারজন কৃষ্ণাঙ্গ ছাত্র অবস্থান ধর্মঘট শুরু করেন। তাদের আন্দোলনের সাথে শীঘ্রই আরও ৩০০ শিক্ষার্থী যোগ দেন এবং এই আন্দোলন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে ছড়িয়ে পড়ে। এই আন্দোলনের ফলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের লাঞ্চ কাউন্টারগুলোতে বর্ণবৈষম্য রহিত করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৬৪ সালে নাগরিক অধিকার আইন পাস হয়, যা মার্কিন নাগরিক অধিকার আন্দোলনের একটি মাইলফলক ছিল।

    মে ১৯৬৮ মুভমেন্ট

    ফ্রান্সের মে ১৯৬৮ মুভমেন্ট ছিল একটি বিশাল ছাত্র আন্দোলন। এই সময়ে ফ্রান্সের শিক্ষার্থীরা শিক্ষাব্যবস্থার সংস্কার এবং সামাজিক ন্যায়বিচারের দাবিতে রাস্তায় নেমে আসে। এই আন্দোলন ফ্রান্সের রাজনৈতিক ও সামাজিক জীবনে গভীর প্রভাব ফেলে।

    জাতিবিদ্বেষ বিরোধী আন্দোলন

    দক্ষিণ আফ্রিকার সোয়েতোর পাবলিক স্কুলগুলোর শিক্ষার্থীরা বর্ণবৈষম্য বিরোধী আন্দোলন শুরু করেন। ১৯৭৬ সালের ১৬ জুন, জোহানেসবার্গে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী একটি শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে অংশ নেন। তবে, পুলিশ তাদের ওপর গুলি চালায় এবং এতে অনেক শিক্ষার্থী নিহত ও আহত হন। এই আন্দোলন ১৯৯৪ পর্যন্ত চলেছিল এবং শেষ পর্যন্ত দেশটির বর্ণবিদ্বেষী শাসনব্যবস্থার পতন ঘটায়। নেলসন ম্যান্ডেলা প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন এবং এই আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী অনেকের আত্মত্যাগের ফলস্বরূপ দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবিদ্বেষী শাসন ব্যবস্থার অবসান ঘটে।

    তিয়েন আনমেন স্কোয়ার আন্দোলন

    চীনের সাবেক কমিউনিস্ট পার্টির মহাসচিব হু ইয়াওবাংয়ের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে শুরু হওয়া তিয়েন আনমেন স্কোয়ার আন্দোলনে হাজার হাজার ছাত্র এবং সাধারণ মানুষ সরকারের স্বচ্ছতা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, এবং অন্যান্য অধিকার দাবিতে রাস্তায় নামেন। ১৯৮৯ সালের ৪ জুন, চীনা সেনাবাহিনী তিয়েন আনমেন স্কোয়ারে সমবেত মানুষের ওপর গুলি চালায় এবং এতে কয়েকশো মানুষ নিহত হন। এই আন্দোলনের পর চীনে রাজনৈতিক স্বাধীনতা না এলেও অর্থনৈতিক স্বাধীনতায় কিছুটা উদারনীতি গ্রহণ করা হয়।

    ভেলভেট রিভল্যুশন, ১৯৮৯

    বার্লিন ওয়াল গুঁড়িয়ে দেওয়ার ৮ দিন পর, চেকোস্লোভাকিয়ার ছাত্ররা সমাজতান্ত্রিক সরকারের পতনের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। প্রাগ শহরে শুরু হওয়া এই আন্দোলন ধীরে ধীরে ৫ লাখ মানুষের বিশাল এক গণসমুদ্রে পরিণত হয়। এই আন্দোলনের ফলে চেকোস্লোভাকিয়ার কমিউনিস্ট পার্টি ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হয় এবং দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়।

    ইরানের ছাত্র বিক্ষোভ

    ১৯৯৯ সালে তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবাসে পুলিশের অভিযান এবং শিক্ষার্থীদের ওপর নৃশংস হামলার পর ইরানের শিক্ষার্থীরা ব্যাপক বিক্ষোভে অংশ নেন। এই আন্দোলনের ফলে ইরানের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট এবং সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা পুলিশি অভিযানের সমালোচনা করে এবং সংযমের আহ্বান জানান। এই আন্দোলন ইরানের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং শিক্ষার্থীরা এখনো যে কোনো ইস্যুতে প্রতিবাদী অবস্থান নেন।

    বাহান্নর ভাষা আন্দোলন

    ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শক্তির হাত থেকে মুক্তি পাওয়ার পর এই অঞ্চলের ছাত্রসমাজই প্রথম অনুধাবন করেছিলো আমাদের প্রকৃত মুক্তি হয়নি। শোষনের জাল বিস্তার করে আছে চতুর্দিকে। দেশভাগের মাত্র সাত মাসের মাথায় ১৯৪৮ সালের ১১ই মার্চ বাংলার ছাত্রসমাজকে রাষ্ট্রভাষার দাবিতে মাঠে নামতে হয়। ওই সময় মূখ্যমন্ত্রী খাজা নাজিমউদ্দিনের পুলিশ বাহিনীকে উপেক্ষা করে মিছিল করেছিলো ছাত্ররা। এই প্রতিবাদের ধারাবাহিকতায় ১৯৫১ সালে রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা গড়ে তোলে ‘রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ’। ১৯৫২ সালের ২৭ জানুয়ারি খাজা নাজিমুদ্দিন ঘোষণা দেন- উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা। যে নাজিমুদ্দিন ১৯৪৮ সালে রাষ্ট্রভাষার দাবি মেনে চুক্তি স্বাক্ষর করেন সেই নাজিমুদ্দিন বাঙালি জাতির সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে বসেন। আর তাতেই গর্জে ওঠে ছাত্রসমাজ। ২১ ফেব্রুয়ারি প্রতিবাদ মিছিলে নামে তারা। দেশের ছাত্রজনতা যোগ দেয় মিছিলে। ১৪৪ ধারা ভঙ্গের অভিযোগে মিছিলে গুলি বর্ষণ করে পুলিশ তাতেই নিহত হয় রফিক, শফিক, জব্বার, শফিউরসহ আরো কয়েকজন। শফিউর ছিলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। যার ফলে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে পুরো বিশ্ববিদ্যালয়। চাপের মুখে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দিতে বাধ্য হয় সরকার।

    একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ

    বাংলাদেশের সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণে বিজয় এসেছিল মহান মুক্তিযুদ্ধে। অন্যান্য সকল আন্দোলনের মতো মুক্তিযুদ্ধেও ছিল ছাত্রদের সরব ভূমিকা। স্লোগান দেয়া থেকে শুরু করে অস্ত্র হাতে শত্রুর মোকাবেলা কি করেনি ছাত্র সমাজ।১৯৭১ সালের পহেলা মার্চ ইয়াহিয়া খান ২ মার্চ হতে যাওয়া গণপরিষদের অধিবেশন স্থগিত করলে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে বাংলা। ২ মার্চ ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের এক জনসভায় প্রথম বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। একই সময় ছাত্র ইউনিয়নও এক অভিন্ন জনসভা করেন। ৩ থেকে ৬ মার্চ ছাত্ররা পরীক্ষা বন্ধ রেখে হরতাল পালন করে।সে সময়ের নামকরা ছাত্র নেতারা ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন যুদ্ধে। ২৫ মার্চ কালো রাতে পাকিস্তানি সামরিকবাহিনী প্রথম আক্রমন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষকদের উপর। যার ফলে জনমনে ক্ষোভের সঞ্চার হয় এবং সংশস্ত্র সংগ্রামে জনগণকে লিপ্ত হতে উৎসাহ দেয়। যুদ্ধের নয় মাস ছাত্ররা সারা বাংলায় শত্রুর মোকাবেলা করার সাহস জুগিয়েছে।অসংখ্য ছাত্র সীমানা পেরিয়ে ভারত চলে গেছে যুদ্ধের প্রশিক্ষণে। ফিরে এসে লড়াই করেছে। রক্তের বিনিময়ে দেশকে শত্রুমুক্ত করেছে।

    নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন

    রক্তপাতহীন এক সামরিক অভ্যূত্থানের মাধ্যমে ১৯৮২ সালের ২৪ শে মার্চ তৎকালীন সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ রাষ্ট্র ক্ষমতা গ্রহণ করেন। ক্ষমতায় বসেই তিনি সামরিক শাসন জারি করেন। সেই সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে প্রথম গর্জে ওঠে ছাত্রসমাজ। ১৯৮৩ এবং ৮৪ সালে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের মিছিলে সেনাবাহিনীর হামলায় নিহত হয় অনেক ছাত্রছাত্রী। এই ঘটনার পর থেকে এরশাদ বিরোধী ছাত্র আন্দোলন শুরু হয়। স্বৈরচার বিরোধী আন্দোলনের সমাপ্তি ঘটে ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর। ১৯৯০ সালের ১০ অক্টোবর জেহাদ নামক এক ছাত্র পুলিশের গুলিতে নিহত হলে সেই মৃত লাশকে কেন্দ্র করে একত্রিত হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ছাত্র সংগঠকরা। ২৪টি ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সমর্থনে গড়ে ওঠে ‘সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্য’। এর সাথে আন্দোলনে যুক্ত হয়েছিল রাজনৈতিক নেতা-কর্মীরা। ছাত্র সংগঠনের মিলিত শক্তির সামনে সেনাবাহিনী কার্যকর কিছু করে উঠতে পারেনি। ছাত্রদের আন্দোলনে জনগণ সমর্থন দেয়া মাত্রই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ ৪ ডিসেম্বর পদত্যাগের ঘোষণা দেন। এবং গণঅভ্যূত্থানের মুখে ৬ ডিসেম্বর পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। ইতিহাসে ৯০’র স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন পুরোপুরি ছাত্রদের দৃঢ়তায় সফল হয়েছিল।

    কোটা সংস্কার আন্দোলন

    ২০১৮ সালে গর্জে উঠেছিল বাংলাদেশের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বছরের প্রথমার্ধে শুরু হওয়া সরকারি চাকরিতে বৈষম্যমূলক কোটা পদ্ধতি সংস্কারের জন্য আন্দোলনে নামে ছাত্র সমাজ। কোটা সংস্কার আন্দোলন শেষ না হতেই রাজপথে নেমে আসে স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা। রাজধানীর কুর্মিটোলায় বাস চাপায় সহপাঠী নিহতের ঘটনার প্রতিবাদে রাষ্ট্র মেরামতের কাজে হাত দেয় তারা। ফিটনেসবিহিন গাড়ি ভাংচুর, ড্রাইভিং লাইসেন্সবিহিন ড্রাইভারদের পুলিশের কাছে সোপর্দ করা ছাড়াও যানবাহনকে শৃঙ্খলিত করার দারুণ নিদর্শন প্রদর্শন করে তারা।

    ২০২৪ সালে বাংলাদেশে সব ধরনের সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে কোটার ভিত্তিতে নিয়োগের প্রচলিত ব্যবস্থার সংস্কারের দাবিতে ছাত্র আন্দোলনের মধ্যে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক সহিংসতা হয়েছে। শুরুতে আন্দোলন সভা-সমাবেশের মধ্যে স্থির থাকলেও ১৪ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার এক বক্তব্যে কোটা আন্দোলনকারীদের মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়।

    ১৫ জুলাই আওয়ামী লীগ ও সরকারের বিভিন্ন কর্মকর্তা, মন্ত্রী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা’ নষ্ট করার অভিযোগ আনেন। একই দিন দেশের বিভিন্ন স্থানে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের নেতৃত্বে শিক্ষার্থী ও আন্দোলনকারীদের উপর রড, লাঠি, হকি স্টিক, রামদা, আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা করা হয়। একই সাথে পুলিশও লাঠি, রাবার বুলেট দিয়ে হামলা করে। প্রতিবাদে আন্দোলনকারীও তাদের দিকে ইটের টুকরা ছুড়ে ও উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এইসব ঘটনায় হাজার হাজার শিক্ষার্থী ও আন্দোলনকারী আহত হওয়ার পাশাপাশি ২০০ জনের অধিক নিহত হন।

    ১৫ই জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর দফায় দফায় হামলা করে ছাত্রলীগ। এর প্রতিবাদে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এর পরের দিন বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনের ডাক দেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এতে সাড়া দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি সারা দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ রাজধানীর বাইরেও বিক্ষোভ দমনে পুলিশ তো আছেই; এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল ছাত্রলীগের পেটোয়া বাহিনী; তারা লাঠিসোঁটা, কোথাও কোথাও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে আন্দোলনকারীদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে। টেলিভিশন, প্রিন্ট মিডিয়া ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই নারকীয় হামলার যে দৃশ্য অবলোকন করেছে দেশের মানুষ তাতে সকলেই রীতিমতো আঁতকে ওঠেছে। নারী শিক্ষার্থীদের পর্যন্ত যেভাবে লাঠিপেটা করে রক্তাক্ত করছে ছাত্রলীগের হেলমেট বাহিনীর কর্মীরা তাতে এক বিভীষিকাময় পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল তখন। দফায় দফায় আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার এক পর্যায়ে কোনো কোনো দমনকারীকে আগ্নেয়াস্ত্র উঁচিয়ে গুলি করতেও দেখা গেছে এ সময়। সরকার ও পুলিশ বাহিনীর মদদে প্রকাশ্যে এমন অস্ত্রের মহড়া সবাইকে রীতিমতো হতবাক্ করে দিয়েছে।কোটা-সংস্কার আন্দোলনের বিস্ফোরোণ্মুখ লেলিহান শিখা ক্রমাগত বিস্ফোরিত হওয়ার দৃশ্যমান বাস্তবতা দেখে এটা অনুধাবন করতে মোটেও কষ্ট হয় না যে- এই আন্দোলন কোনোভাবেই দমানোর মতো ছিল না সরকারের পক্ষে।

    আন্দোলনের ব্যাপকতা দেখে প্রথম অবস্থায় সরকার শুধু বিজিবিই পথে নামায়নি, দেশের সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়-কলেজ-স্কুল বন্ধ ঘোষণাও করেছে এবং সকল ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রাবাসগুলোও খালি করার নির্দেশ দিয়েছে। বলা হচ্ছে- জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। এ ছাড়া সব শিক্ষা বোর্ডের এইচএসসি ও সমমানের পরবর্তী পরীক্ষাগুলোও স্থগিত করা হয়েছে। কিন্তু এতেও চরম বিস্ফোরোণ্মুখ এই আন্দোলনকে সরকারের দমানো সম্ভব হয়নি। শেষ পর্যন্ত গত শুক্রবার মধ্যরাত থেকে সরকার কারফিউ জারি করতে বাধ্য হয়েছে। মাঝে-মধ্যে ২-৭ ঘণ্টার জন্য শিথিলায়নসহ কারফিউ চলেছে টানা এক সপ্তাহ।

    উল্লেখ্য, গত ১৪ জুলাই রাতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা চীন সফর বিষয়ক সংবাদ সম্মেলনে উপস্থাপিত প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের সূত্র ধরে ‘তুমি কে আমি কে, রাজাকার রাজাকার’, ‘চাইতে গেলাম অধিকার, হয়ে গেলাম রাজাকার’ এ ধরনের শ্লেষপূর্ণ স্লোগান দেয়। প্রাধানমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে যেমন বলেছিলেন- ‘মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে এত ক্ষোভ কেন? মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-পুতিরাও পাবে না? তাহলে কি রাজাকারের নাতি-পুতিরা পাবে? আমার প্রশ্ন দেশবাসীর কাছে। তাহলে কি রাজাকারের নাতি-পুতিরা চাকরি পাবে, মুক্তিযোদ্ধারা পাবে না।’ এই বক্তব্যের ওপর ভিত্তি করেই আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা আয়রনির মতো করে অর্থাৎ বিপরীতধর্মী শ্লেষপূর্ণ বক্তব্যের আদলে নিজেদের রাজাকার হিসেবে উল্লেখ করে এই স্লোগানগুলো দিয়েছে। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা এই স্লোগান মোটেও নিজেদের ‘রাজাকার’ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য দেয়নি। বরং তাদের বক্তব্যকে আরো জোরালোভাবে প্রকাশ করতেই তারা এই শ্লেষপূর্ণ বিপরীতধর্মী স্লোগানগুলো দিয়েছে।

    ২০২৪ সালের ২১ জুলাই বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট, হাইকোর্টের দেওয়া রায় বাতিল করে ও সরকারি চাকরিতে মেধার ভিত্তিতে ৯৩ শতাংশ নিয়োগ দেওয়ার নির্দেশ প্রদান করে। ২৩ জুলাই এই বিষয়ে সরকার প্রজ্ঞাপন জারি করে।সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা পুনর্বহাল সংক্রান্ত হাইকোর্টের রায় সর্বোচ্চ আদালতে সামগ্রিকভাবে বাতিলের পর মঙ্গলবার (২৩ জুলাই, ২০২৪) প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এতে বলা হয়, সমতার নীতি ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর প্রজাতন্ত্রের কর্মে প্রতিনিধিত্ব লাভ নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অর্থাৎ সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, স্ব-শাসিত ও সংবিধিবদ্ধ কর্তৃপক্ষের এবং বিভিন্ন করপোরেশনে চাকরিতে বা কর্মে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে সব গ্রেডে যে কোটা নির্ধারণ করা হয়েছে, সেটা হচ্ছে, মেধাভিত্তিক ৯৩ শতাংশ, মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা, বীরাঙ্গনার সন্তানের জন্য পাঁচ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী এক শতাংশ, প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের জন্য এক শতাংশ। সূত্র : ঢাকা টাইমস

    জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।
    ‘জাতীয় bangladesh, breaking news আন্দোলন আন্দোলনের ইতিহাস ছাত্র বাংলাদেশের বিশ্ব
    Related Posts
    Rajshahi

    ডিসি-এসপিরা চিপায় পড়ে আমাদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করছেন: হাসনাত

    July 7, 2025
    Gas

    সোমবার ১১ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না ঢাকার যেসব এলাকায়

    July 6, 2025
    Sheikh Hasina

    শেখ হাসিনা কি লন্ডন যাচ্ছেন?

    July 6, 2025
    সর্বশেষ খবর
    Hulu Palm Springs (2020)

    Top 10 Most Popular Hulu Web Films of All Time: A Streaming Legacy

    Bkash Noor

    নির্বাচিত সরকার না থাকলে দেশ নানা ঝুঁকিতে থাকে : নুর

    Archita Pukham

    Archita Pukham Viral Video Download – Why Searching for It Destroys Your Digital and Personal Life

    youtube

    ইউটিউবে আসছে নতুন নিয়ম, এক ভুলে হারাতে পারেন চ্যানেল

    US immigration

    যুক্তরাষ্ট্রে ট্রাকের ফ্ল্যাটবেড থেকে ১৩ অভিবাসী উদ্ধার

    Sakib Al Hasan

    যুক্তরাষ্ট্রের লিগে দল পেলেন সাকিবসহ বাংলাদেশের ৯ ক্রিকেটার

    Akhtar

    হাসিনা টুপ করে ঢুকে পড়লে আম গাছে বেঁধে বিচার করবে মানুষ: আখতার

    Rajshahi

    ডিসি-এসপিরা চিপায় পড়ে আমাদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করছেন: হাসনাত

    Sneha Paul

    Sneha Paul: The Chawl Sensation Who Set ULLU on Fire

    Lava Blaze AMOLED 5G

    Lava Blaze AMOLED 5G: বাজারে এলো ১৬ জিবি র‌্যামের সেরা স্মার্টফোন

    • About Us
    • Contact Us
    • Career
    • Advertise
    • DMCA
    • Privacy Policy
    © 2025 ZoomBangla News - Powered by ZoomBangla

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.