বিজ্ঞান ও প্রযক্তি ডেস্ক : পরিবেশবাদীরা কয়েক দশক ধরেই প্লাস্টিকের দূষণ নিয়ে সতর্কতা জারি করে আসছেন। তারপরও পৃথিবীজুড়ে প্লাস্টিক পণ্যের ব্যবহার মানুষের দৈনন্দিন জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে আছে। ফলে মানবজাতির জন্য ক্রমেই হুমকি হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে প্লাস্টিক কণা। সর্বশেষ ইউনিভার্সিটি অব নিউ মেক্সিকো হেলথ সায়েন্সের বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন, তাঁদের একটি গবেষণায় পরীক্ষা করা প্রত্যেক মায়ের গর্ভফুল বা প্লাসেন্টায় মাইক্রোপ্লাস্টিকের উপস্থিতি দেখা গেছে।
সম্প্রতি ‘টক্সিকোলজিক্যাল সায়েন্সেস’ জার্নালে ওই গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে। এতে গবেষকেরা দাবি করেছেন, তাঁরা ৬২টি গর্ভফুলের নমুনা পরীক্ষা করেছিলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে প্রত্যেকটি নমুনাতেই প্রতি গ্রাম কোষের মধ্যে সর্বনিম্ন ৬.৫ থেকে ৭৯০ মাইক্রোগ্রাম পর্যন্ত মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া গেছে।
বিজ্ঞানীরা বলেছেন, মাইক্রোপ্লাস্টিকের এই সংখ্যাগুলো অনেক কম মনে হলেও উদ্বেগের বিষয় হলো—পরিবেশে মাইক্রোপ্লাস্টিকের পরিমাণ দিন দিন বাড়ছে। বিষয়টি স্বাস্থ্যের ওপর গুরুতর প্রভাব ফেলতে পারে।
মাইক্রোপ্লাস্টিকের ক্রমবর্ধমান পরিমাণ নিয়ে দুশ্চিন্তা প্রকাশ করে গবেষণার প্রধান লেখক ম্যাথিউ ক্যাম্পেন বলেছেন, ‘যেহেতু আমরা গর্ভফুলের মধ্যেই এর প্রভাব দেখতে পাচ্ছি, সেহেতু এই গ্রহের সমস্ত স্তন্যপায়ী প্রাণীর জীবন প্রভাবিত হতে পারে। বিষয়টি ভালো নয়।’
গবেষণায় বিজ্ঞানীরা গর্ভফুলের কোষ বিশ্লেষণ করেছেন স্যাপোনিফিকেশন নামে একটি প্রক্রিয়ায়। এতে দেখা গেছে, কোষগুলোতে যেসব মাইক্রোপ্লাস্টিক ছিল তার বেশির ভাগই (৫৪ শতাংশ) পলিথিন, প্লাস্টিকের ব্যাগ এবং বোতল তৈরিতে ব্যবহৃত হয়েছে।
ম্যাথিউ ক্যাম্পেন মত দিয়েছেন, মানুষের টিস্যুতে মাইক্রোপ্লাস্টিকের ক্রমবর্ধমান ঘনত্ব কিছু গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ হতে পারে। যেমন—৫০ বছরের কম বয়সীদের মধ্যে প্রদাহজনক অন্ত্রের রোগ, কোলন ক্যানসার হওয়ার পাশাপাশি শুক্রাণুর সংখ্যাও হ্রাস পেতে পারে।
গবেষকেরা দাবি করেছেন, মাত্র ১০ থেকে ১৫ বছরের মধ্যেই এ ধরনের নমুনায় দ্বিগুণ হারে প্লাস্টিক কণা পাওয়া যাবে। প্লাস্টিকের ব্যবহারে নিয়ন্ত্রণ না আনলে ২০৫০ সালের পটভূমিতে এখনকার তুলনায় তিনগুণ বেশি প্লাস্টিক থাকবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।