জুমবাংলা ডেস্ক : রাজধানী ও আশপাশের এলাকায় যোগাযোগে নতুন মাত্রা যোগ করবে সাবওয়ে বা পাতালরেল। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রথম চারটি রুটের ডিটেল ডিজাইন শেষ হয়েছে।
২০৩০ সালের মধ্যেই কাজ শেষ করার আশা করছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী। তবে, সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গে সমন্বয় করে এই কর্মযজ্ঞ বাস্তবায়নের তাগিদ দিয়েছেন ঢাকার দুই মেয়র।
যানজটে ভুগতে থাকা ঢাকা নগরবাসীকে আশার আলো দেখাচ্ছে মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে আর বিআরটিএর মতো সব মেগা প্রকল্প।
তবে এসব নির্মাণ কাজ যন্ত্রণার মাত্রা বাড়িয়েছে কয়েকগুণ। এর সাথে যুক্ত হতে যাচ্ছে সাবওয়ে বা পাতালরেল। তবে এটির নির্মাণ সড়কে যন্ত্রণার সৃষ্টি করবে না। কর্মযজ্ঞ চলবে মাটির নিচে।
মঙ্গলবার (২৯ মার্চ) রাজধানীর ইন্টার কন্টিনেন্টাল হোটেলে ঢাকা সাবওয়ে (পাতাল রেল) নির্মাণের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা শীর্ষক প্রকল্পের খসড়া চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০৩০ সালের মধ্যে রাজধানীর মোট চারটি রুটে সাবওয়ে নির্মাণ করা হবে। প্রথম পর্যায়ে নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৪১ হাজার ৩০৬ মিলিয়ন ডলার।
আর ২০৪০ সালের মধ্যে আরো চারটি এবং ২০৫০ সালের মধ্যে আরো পাঁচটি রুটে সাবওয়ে নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।
প্রস্তাবিত সাবওয়ের প্রথম ধাপের চারটি রুট হচ্ছে-
রুট-১ কেরানীগঞ্জের ঝিলমিল থেকে টঙ্গী জংশন (ঝিলমিল, তেঘরিয়া বাজার, মুসলিম নগর, সদরঘাট, গুলিস্তান, কাকরাইল, হাতির ঝিল, বিজিপ্রেস, রজনীগন্ধা মার্কেট, ভাষানটেক সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়, কালশী, উত্তরা সেক্টর-১৭, নর্থ বাউনিয়া। উত্তরা সেক্টর-১৪, উত্তরা সেক্টর-১০, মাছিমপুর, টঙ্গী জংশন)।
রুট-২ গাবতলী থেকে ভেলাবো ইউনিয়ন (গাবতলী, গোলারটেক, তুরাগ সিটি, জাতীয় চিড়িয়াখানা, পূর্বাচল। গাবতলি-ভোলাব ইউনিয়ন সেক্টর-১১, পূর্বাচল সেক্টর-২১, পূর্বাচল সেক্টর ইস্ট, পূর্বাচল মালুম সিটি, ভেলাবো ইউনিয়ন)।
রুট-৩ কেরানীগঞ্জ থেকে সোনাপুর (কেরানীগঞ্জ, কামরাঙ্গিরচর, লালবাগ, চক বাজার, নয়া বাজার, কেরানীগঞ্জ-সূত্রাপুর, সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী, ধনিয়া, রায়েরবাগ, মাতুইল, সাইনবোর্ড, সানারপাড়, মৌচাক, চিটাগাং রোড, কাঁচপুর, সোনাপুর)।
রুট-৪ জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নারায়ণগঞ্জ চাষাড়া (জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, আশুলিয়া মডেল টাউন ইস্ট, উত্তরা সেক্টর-১৬, উত্তরা নর্থ, আজমপুর কাঁচা বাজার, শাহ কবীর মাজার নর্থ, আফতাব নগর নর্থ, ওয়েস্ট নন্দীপাড়া, গ্রিন মডেল টাউন, মাতুয়াইল রোড, নন্দিপাড়া দক্ষিণ, বরুয়া সাউথ, বসুন্ধরা সাউথ, সানভ্যালি উত্তরপাড়া, শনির আখড়া, রায়েরবাগ, ইস্ট মোহাম্মদবাগ, ফতুল্লাহ স্টেশন, ডিসি অফিস নিউ কোর্ট, নারায়ণগঞ্জ চাষাড়া)।
ঢাকায় ১৩টি পথে প্রায় ২৩৮ কিলোমিটার পথ হবে পাতাল রেলের। এজন্য নির্মিত টানেল ভূপৃষ্ঠ হতে আনুমানিক ২৫ হতে ৭০ মিটার নীচ দিয়ে যাওয়ার কারণে জমি অধিগ্রহণ নিয়ে কোন বাধার সৃষ্টি হবে না বলেও সেমিনারে জানান সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, সাবওয়ে নির্মাণের ফলে ঢাকা শহরের প্রায় ৮০ লাখ কর্মজীবী মানুষের মধ্যে অর্ধেক অর্থাৎ প্রায় ৪০ লাখ মানুষ মাটির নীচে স্থানান্তর হবে।
মন্ত্রী জানান, অনুমোদিত সংশোধিত প্রকল্প অনুযায়ী ২৩৮ কিলোমিটার নেটওয়ার্কের সম্ভাব্যতা সমীক্ষার ৯০ কিলোমিটারের প্রাথমিক নকশা প্রণয়ন কাজের জন্য পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তি সই হয়েছে। যার সংশোধিত চুক্তিমুল্য ৩১৭.৫০ কোটি টাকা।
সেমিনারে ঢাকার দুই মেয়র প্রশ্ন তোলেন সড়ক বিভাগের বড় বড় প্রকল্পের সমন্বয় নিয়ে। তারা অনুরোধ করেন, মেট্রোরেলসহ অন্যান্য পরিবহন প্রকল্পের সময় সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গে কোন ধরনের সমন্বয় করা হয়নি। ফলে জন ভোগান্তি বেড়েছে। এমনটি যেন আগামীতে না হয়।
জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, পাতাল রেলের সব পর্যায়ে দুই সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গে সমন্বয় করেই করা হবে। তিনি আরো জানান, প্রথম চারটি সাবওয়ের কাজ শেষ হবে আট বছরে।
অপরিকল্পিত ও জনবহুল এই নগরীতে বাসিন্দাদের চলাচলে স্বস্তি সাবওয়ে প্রকল্পের মাধ্যমেই ফিরবে বলে আশা প্রকাশ করেন ওবায়দুল কাদের।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।