জুমবাংলা ডেস্ক : ভাদ্র মাস থেকেই ইলিশের ভরা মৌসুম শুরু হয়। গত কয়েকদিন দেশের দক্ষিণাঞ্চল থেকে চাঁদপুর মৎস্য আড়তে ইলিশের সরবরাহ শুরু হয়েছে। ইলিশ সরবরাহের কারণে ইলিশের রাজধানী খ্যাত চাঁদপুর মাছঘাটে ব্যবসায়ী, ক্রেতা ও শ্রমিকদের মাঝে উৎসবের আমেজ লক্ষ্য করা গেছে।
সোমবার মাছ ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, দক্ষিণাঞ্চল থেকে ট্রলারযোগে ছোট বড় সাইজের প্রচুর পরিমাণ ইলিশ মাছঘাটে নামছে। ব্যবসায়ীরা বড় বড় স্তুপ দিয়ে দাম হাকাচ্ছে, প্যাকেট করছে, আর বিভিন্ন স্থানে পাঠানোর জন্য প্রক্রিয়াজাত করে বাক্স ভর্তি করছে। তবে যে পরিমাণ ইলিশ সরবরাহ হচ্ছে, সেই হারে দাম তেমন কমছে না। সরবরাহকৃত ইলিশগুলো দক্ষিণাঞ্চল থেকে আসলেও ব্যবসায়ীদের হাত ঘুরে চলে যায় ঢাকা, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। চাঁদপুরে খুচরা বাজারে ছোট সাইজের ইলিশ বেশি বিক্রি হচ্ছে।
ক্রেতা আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, প্রচুর ইলিশের সরবরাহ থাকলেও দাম নাগালের বাইরে থাকায় কিনতে পারছি না। ইলিশের রাজধানী খ্যাত হলেও এখানে দাম একটু বেশি। কিছু ইলিশ কিনেছি, অপেক্ষা আছি দাম একটু কমলে আরও কিনবো। তবে এখানে একেবারে তরতাজা ইলিশ পাওয়া যায় তাতে সন্দেহ নেই। উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে বড় সাইজের ইলিশের শির ভাগ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাঠিয়ে দেয়া হয়।
মৎস্য আড়তের শ্রমিক বশির গাজী ও মানিক গাজী বলেন, দীর্ঘ ৪/৫ মাস যাবৎ অলস সময় কাটিয়ে, বিভিন্ন সমিতির কাছে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছি। কয়েকদিন যাবত মাছ ঘাটে ইলিশের সরবরাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় আমরা অনেক আনন্দে আছি। সামনে ইলিশের সরবরাহ আরও বাড়লে পরিবার নিয়ে আমরা একটু ভালো থাকতে পারবো এবং ঋণের ভার কমাতে পারব।
চাঁদপুর মৎস্য আড়তের ব্যবসায়ী শবে বরাত বলেন, মাছের সরবরাহ বেড়েছে। তবে বড় সাইজের ইলিশের দাম কমেনি।
ছোট সাইজের ইলিশের মূল্য কিছুটা কম। ৪শ’ থেকে ৬শ’ গ্রাম ওজনের ইলিশ প্রতি কেজি ৭শ’ থেকে ৮শ’ টাকা। ১ কেজি ওজনের ইলিশের মূল্য ১১শ’ থেকে ১২শ’ টাকা। ১ কেজির বেশি হলে ১৬শ’ থেকে ১৮শ’ টাকা। তবে মাছের সরবরাহ এই ধারা ক্রমান্নয়ে বৃদ্ধি পেলে দাম আরও কমবে। এখন প্রতিদিন দক্ষিণাঞ্চলের ভোলা, চরফ্যাশন, হাতিয়া, লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালী জেলার নিম্নাঞ্চল থেকে এই আড়তে ইলিশ সরবরাহ হচ্ছে। তবে গত বছর এ সময়ে দেড় থেকে ২ হাজার মণ ইলিশ সরবরাহ হলেও, এবার আসছে প্রতিদিন ৮/৯শ’ মণ। তবে সরবরাহ আরও বাড়বে বলে আশা রাখি।
চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা গোলাম মেহেদী হাসান জানান, জাটকা রক্ষায় প্রশাসনের বলিষ্ঠ ভূমিকা ছিল। মূলত সেই কারণেই ইলিশের সরবরাহ বেড়েছে। তবে চাঁদপুরের স্থানীয় ইলিশের সরবরাহ কিছুটা কম। দক্ষিণাঞ্চল থেকে আসা ইলিশের সরবরাহ অনেক বেড়েছে। কয়েক দিনের বৃষ্টিপাত ও নদীর স্রোত বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলেরা প্রচুর ইলিশ আহরণ করতে পারবে বলে আশাবাদী। এতে করে জেলেদের মাঝে ফিরবে স্বস্তি, ক্রেতারাও কম দামে কিনবে ইলিশ।
চাঁদপুর মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, ভাদ্র মাস থেকেই ইলিশের আহরণ বৃদ্ধি পায়। ভাদ্র ও আশ্বিন মাসকে আমরা ভরা মৌসুম হিসেবে দেখি। আগামী দু’মাস জেলেরা পদ্মা-মেঘনায় প্রচুর ইলিশ আহরণ করতে পারবে বলে আশা করছি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।