স্বাস্থ্য ডেস্ক : শরীরের অন্দরে কোনো অসুখ জন্ম নিলে তা বাইরে থেকে বোঝা সম্ভব নয়। বিশেষ করে কিডনিতে সমস্যা তৈরি হলে তা ধরা পড়ে অনেক দেরিতে।
অনেকক্ষেত্রেই এমন হয় যে, একটি কিডনি বিকল হলেও কাজ চলতে থাকে অন্যটি দিয়ে। ফলে ক্ষতির আঁচ বাইরে থেকে পাওয়া যায় না। শুধু পাথর জমা নয়, কিডনিতে আরও অনেক ধরনের সমস্যা হতে পারে। সময়ে যদি রোগ ধরা যায়, তাহলে ঠিক আছে। দ্রুত চিকিৎসা শুরু করা সম্ভব হয়। তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে ওঠারও সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু সবক্ষেত্রে তো তা হয় না। বিশেষ করে কিডনি সংক্রান্ত সমস্যার উপসর্গগুলো এতই মৃদু হয় যে, কিছু ক্ষেত্রে বুঝে ওঠাও সম্ভব হয় না। কিডনি যে সুস্থ নেই, তার কিছু ইঙ্গিত পাওয়া যায়। সেই লক্ষণগুলো কী, তা জানা থাকলে সতর্ক হওয়া সম্ভব।
ঘুমে সমস্যা
কিডনি ঠিকঠাক না কাজ করলে মূত্রের মাধ্যমে অপ্রয়োজনীয় বর্জ্য পদার্থগুলো দেহের বাইরে বেরোতে পারে না। এটি অনিদ্রার অন্যতম কারণ। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, কিডনির সমস্যায় আক্রান্ত মানুষদের ঘুম না আসার সমস্যা সুস্থ মানুষদের তুলনায় অনেক বেশি। হঠাৎই অনিদ্রার সমস্যা হানা দিলে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা জরুরি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, কিডনির সমস্যায় আক্রান্তদের রাতে ঘুম না আসার সমস্যা দেখা দেয়। কিডনি যখন শরীর থেকে পানি নিঃসরণ করতে পারে না, তখন কিছু পানি ফুসফুসে জমে যায়। সে কারণে ঘুমের সমস্যা হতে পারে।
প্রস্রাবের সমস্যা
ঘন ঘন প্রস্রাবের লক্ষণ কেবল ডায়াবিটিসের নয়, কিডনির অসুস্থতার নেপথ্য কারণ হতে পারে। বিশেষত রাতে স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি বার মূত্রত্যাগ করতে হলে সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। এছাড়া প্রস্রাবের সঙ্গে যদি রক্তপাত হয়, তাহলেও কিন্তু বাড়তি সতর্কতা নিতে হবে।
পা ফুলে যাওয়া
কিডনির সমস্যায় শরীরে সোডিয়ামের ভারসাম্য নষ্ট হয়। এর ফলে পা ফুলে যায়। হঠাৎ এমনটা হলে সতর্ক হতে হবে। কারণ পা ফুলে যাওয়ার সমস্যা ফেলে রাখা ঠিক নয়। শরীরের অন্দরে মারাত্মক কিছু না ঘটলে সাধারণত এমন লক্ষণ ফুটে ওঠে না। তাই সতর্ক থাকা জরুরি।
ত্বকের সমস্যা
কিডনি অকেজো হয়ে গেলে শরীর থেকে টক্সিন বেরোতে পারে না। ফলে শুষ্ক খসখসে ত্বক, ত্বকের ঘায়ের মতো সমস্যা হয়। ত্বকের এসব সমস্যা কিডনির অসুখের লক্ষণ হতে পারে।
জ্বর
ঠাণ্ডা লাগেনি, অথচ কোনো কারণ ছাড়াই জ্বর আসছে বারবার। সাবধান, কিডনির সমস্যার কারণেও কিন্তু হতে পারে এমন। ঘন ঘন শরীরের তাপমাত্রা বাড়লে বিষয়টি নজরে রাখুন। চিকিৎসকের সঙ্গেও পরামর্শ করুন বিষয়টি নিয়ে। কিডনি শরীরের দূষিত পদার্থ বার করে দেয়। পাশাপাশি শরীরের সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ফসফেটের মাত্রাও নিয়ন্ত্রণে রাখে। শরীরে পটাশিয়াম বেড়ে গেলে কিডনির কাজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তখন এমন খাবার খেতে হবে, যার মাধ্যমে ২০০ মিলিগ্রামের কম পটাশিয়াম শরীরে প্রবেশ করে। কিডনির সমস্যা থাকলে শরীরে পটাশিয়ামের মাত্রা বেড়ে যায়, ফলে দেখা দেয় নানা শারীরিক সমস্যার। কিডনির ওপর চাপ বাড়তে পারে। কিডনি সুস্থ রাখতে সেই সব খাবার এড়িয়ে চলুন যাতে ২০০ মিলিগ্রামের বেশি পটাশিয়াম থাকে।
কোন কোন খাবার এড়িয়ে চলবেন?
কলা, দুধ, কিশমিশ, কমলালেবু, ডাল, পালংশাক, আলু, টমেটো, বাদাম, মুরগির মাংস, অ্যাভোকাডো, মিষ্টিকুমড়া ও বাদাম
কিডনি সুস্থ রাখতে কোন কোন খাবার খাবেন?
আপেল, আনারস, আঙুর, ফুলকপি, বেগুন, ব্রকোলি, ভাত, পাস্তা, পাউরুটি ও ডিমের সাদা অংশ
১৯ বছরের বেশি বয়সী একজন সুস্থ প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ ও নারী প্রতিদিন যথাক্রমে ৩৪০০ মিলিগ্রাম এবং ২৬০০ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম গ্রহণ করতে পারেন। কিন্তু কিডনির রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের শরীরে ২০০০ মিলিগ্রামের কম পটাশিয়াম গ্রহণ করতে হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।