জুমবাংলা ডেস্ক : চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় কন্যাসন্তান হওয়ার কারণে নবজাতককে বিক্রি করে দিয়েছেন বাবা। স্থানীয়দের সহযোগিতায় সেই নবজাতক অবশেষে মায়ের কোলে ফিরেছে।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও কয়েকজন ব্যক্তির সহায়তায় নবজাতককে কেনার সব টাকা পরিশোধ করে তারা মা-বাবার হাতে সন্তানকে তুলে দেন।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও নবজাতকের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বুধবার দুপুরে অভিযুক্ত বাবা মরিয়মনগর ইউনিয়নের বাসিন্দা সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক ও নবজাতকের মাকে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মুজিবুল হক হিরু ইউনিয়ন পরিষদে ডেকে আনেন। পরে তাদের নিয়ে নবজাতককে বিক্রি করা পার্শ্ববর্তী স্বনির্ভর রাঙ্গুনিয়া ইউনিয়ন পরিষদে যান।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো. নুরুল্লাহ ও এক পুলিশ কর্মকর্তার সহায়তায় নবজাতককে কেনা দম্পতিদের বাড়িতে যান। মরিয়মনগর ইউনিয়নের কয়েকজন ব্যক্তি ৫০ হাজার টাকা তাদের ফেরত দিয়ে নবজাতককে মা-বাবার হাতে তুলে দেন। সন্তানকে পেয়ে খুশি মা-বাবা। বাবা তার ভুল বুঝতে পেরে সবার কাছে ক্ষমা চান।
এ বিষয় মরিয়মনগর ইউপি চেয়ারম্যান মুজিবুল হক হিরু বলেন, আমার এলাকায় এ ঘটনা শুনে তাৎক্ষণিক ওই এলাকার ইউপি সদস্যকে খোঁজ নিতে পাঠাই। স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তির সহযোগিতায় মায়ের কোলে বাচ্চাকে ফিরিয়ে দিয়েছি। সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালকের পরিবার খুবই বড়। সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। পরপরই তিনটি সন্তান মেয়ে হওয়ার কারণে ভুল কাজটি করেছেন। তিনি খুবই লজ্জিত, ক্ষমা চেয়েছেন সবার কাছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নবজাতকের বিষয়টি সামনে আনা যুবক পারভেজ হোসেন বলেন, ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে একটি পরিবার ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। মনে অনেক শান্তি লাগছে। বাচ্চাটিকে মায়ের কোলে ফিরিয়ে আনতে সাংবাদিক, জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় লোকজনের যথেষ্ট সহযোগিতা ছিল।
হাসপাতাল, জনপ্রতিনিধি ও নবজাতকের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার মরিয়মনগর ইউনিয়নে ওই অটোরিকশাচালকের স্ত্রীর প্রসববেদনা উঠলে গত ২৭ জুন রাতে উপজেলার দোভাষী বাজারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ২৯ জুন সকালে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে একটি কন্যাসন্তানের জন্ম দেন ওই নারী। পরে নবজাতকের বাবা মঙ্গলবার এক দম্পতির কাছে ৫০ হাজার টাকায় সন্তানকে বিক্রি করে দেন বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।
ওই দম্পতি ১৪ বছর ধরে নিঃসন্তান। বুধবার সকালে ওই হাসপাতালে এক আত্মীয়ের জন্য রক্ত দিতে গিয়ে বিষয়টি দেখতে পান পারভেজ হোসেন নামের এক যুবক। নবজাতক বিক্রির বিষয়টি জানতে পেরে তিনি কৌশলে ওই শিশুর একটি ছবি তুলে রাখেন। পরে এ নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দেন তিনি।
ফেসবুকের মাধ্যমে বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর অনেকেই এ নিয়ে মন্তব্য করেছেন। এর মধ্যে কয়েকজন হাসপাতালের বিলের টাকা পরিশোধ করে শিশুটিকে ফিরিয়ে দেওয়ার ইচ্ছাও প্রকাশ করেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।