বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক : প্রতিবছর জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত হয় ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব মিউজিক মার্চেন্টস বা ন্যাম শো। এ বছরের প্রদর্শনীতে বেশ কিছু সংগীত সরঞ্জাম এবং বাদ্যযন্ত্রে প্রযুক্তির ছোঁয়া দেখা গেছে। যা আগামী দিনে সংগীতের যাত্রাকে করবে আরো সহজ, আকর্ষণীয়। প্রযুক্তিভিত্তিক এসব বাদ্যযন্ত্রের বিস্তারিত জানাচ্ছেন টি এইচ মাহির।
ডেমন বক্স
ইথারনাল রিচার্সের তৈরি ডিভাইস ডেমন বক্স ছিল ন্যাম শো-এর অন্যতম আকর্ষণ। মোবাইল ফোন, পাওয়ার ড্রিল, টিউনিং ফর্ক বা হেয়ার ড্রায়ারের মতো ডিভাইসের তৈরি ইএম ফিল্ডকে সংগীতে পরিণত করার জন্য তৈরি করা হয়েছে ডেমন বক্স। এর মধ্যে আছে ৩৩টি ইন্ডাক্টর, যা ইএম ফিল্ডকে বৈদ্যুতিক সংকেতে পরিণত করতে পারে। এরপর সংকেতটিকে তিনটি পিকআপ শব্দে রূপান্তরিত করে।
তিনটি চ্যানেলে অডিও আউটপুট দেয় ডেমন বক্স। পাশাপাশি সিন্থেসাইজারের সঙ্গে ব্যবহারের জন্য আছে মিডি পোর্ট। ইউএসবি সি পোর্ট ব্যবহার করে ডিভাইসটি চার্জ করা এবং কম্পিউটারে সংযুক্ত করা যাবে। আপাতত ইটারনাল রিসার্চ ডিভাইসটি তৈরির জন্য কিকস্টার্টার প্ল্যাটফরমে বিনিয়োগকারী খুঁজছে।
তাদের দাবি, সংগীত শুধু বাদ্যযন্ত্রেই সীমাবদ্ধ নয়, আশপাশের সব যন্ত্রেরই আছে নিজস্ব সুর। তা তুলে ধরার জন্যই তারা প্রযুক্তি কাজে লাগিয়েছে।
সংগীতে নতুন প্রযুক্তি
বাদ্যযন্ত্র নির্মাতা সার্কেল ইন্সট্রুমেন্টস তৈরি করেছে বৃত্তকার গিটার। গিটারের তারগুলোর নিচে বসানো হয়েছে একটি চাকা, যার মধ্যে থাকা প্লেকট্রাম দিয়ে চাকা ঘুরিয়েই সুর তোলা যাবে। প্লেকট্রাম বসানোর জন্য আছে ষোলোটি স্লট।
নিজের ইচ্ছামতো স্লটগুলোতে প্লেকট্রাম বসিয়ে তোলা যাবে বিভিন্ন ছন্দ। ভলিউম নিয়ন্ত্রণের জন্য চাকার ঠিক নিচেই আছে ছয়টি স্লাইডার। ব্যতিক্রমী গিটারটির দাম রাখা হয়েছে প্রায় ১২ হাজার ডলার। অনেক সংগীতজ্ঞ বলেছেন, ড্রাম মেশিনের মতো রোবটিক রিদম মেশিন হিসেবে ব্যবহার করা যাবে এই গিটার।
হ্যান্ডিট্র্যাক্স প্লে
স্বনামধন্য বাদ্যযন্ত্র নির্মাতা কর্গ তৈরি করেছে রেকর্ড বাজানোর স্মার্ট টার্ন টেবল, যার নাম হ্যান্ডিট্র্যাক্স প্লে। এতে বিভিন্ন সাউন্ড ইফেক্টস এবং ডিজে ফিল্টার দেওয়া হয়েছে, যা আর কোনো রেকর্ড প্লেয়ারে নেই। এই ডিভাইসকে বলা হচ্ছে অ্যানালগ ও ডিজিটালের সংমিশ্রণ। টার্নটেবলটি বহনযোগ্য, এর মধ্যেই আছে রিচার্জেবল ব্যাটারি এবং স্পিকার। ইউএসবি পোর্টের মাধ্যমে সরাসরি পিসিতে সাউন্ড আউটপুট দিতে সক্ষম এ ডিভাইস। যারা চলার পথে ডিজের কাজ করতে চায় তাদের জন্য ডিভাইসটি চমৎকার।
ডোনার-এর এল ওয়ান সিন্থেসাইজার
গত কয়েক বছরে চীনা বাদ্যযন্ত্র নির্মাতা ডোনার ডিজিটাল তৈরি করছে পিয়ানো থেকে শুরু করে পকেট গ্রুভবক্স পর্যন্ত। এবার তারা বানিয়েছে এল ওয়ান নামের একটি সিন্থেসাইজার। আশির দশকের জনপ্রিয় রোল্যান্ড এসএইচ-১০১ এর ওপর ভিত্তি করে বানানো হয়েছে এ কি-বোর্ড। ভিনটেজ কি-বোর্ড অনুরাগীদের জন্য তৈরি ডিভাইসটির কি-বোর্ড ও সিন্থেসাইজার অংশ দুটি চাইলে আলাদাভাবে ব্যবহার করা যাবে।
এআই পিয়ানো
পিয়ানো বাজানো শেখানোর জন্য রোলি তৈরি করেছে এআই চালিত ডিজিটাল পিয়ানো। ছোট কি-বোর্ড আকৃতির ডিভাইসটিতে আছে আরজিবি বাতি। মূলত অল্পবয়সী পিয়ানো শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করেই তৈরি করা হয়েছে এ ডিভাইস। বাজানোর সময় আঙুলের অবস্থান ট্র্যাক করে এআই, কোনো ভুল হলে তা ধরিয়ে দেয়। সেই কাজে পিয়ানোটির সঙ্গে ট্যাবলেট বা পিসি সংযুক্ত রাখতে হবে। রোলি এয়ারওয়েভ নামে এই পিয়ানোর দাম রাখা হয়েছে ৪০০ থেকে ৯০০ ডলার।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।