জুমবাংলা ডেস্ক : খুলনা সিটি করপোরেশনের (কেসিসি) ৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর শেখ খালিদ আহমেদের সঙ্গে বিএনপির দুই নেতার চাঁদা দাবির একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, বিভিন্ন জায়গা ‘ম্যানেজ’ করার কথা বলে লাখ দুয়েক টাকা চাঁদা চাওয়া হয়।
অভিযুক্ত দুই বিএনপি নেতা হলেন- ৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির আহ্বায়ক শেখ রিয়াজ শাহেদ এবং মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম হোসেন। অন্যদিকে কাউন্সিলর খালিদ দৌলতপুর থানা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। তবে বিএনপির ওই দুই নেতা চাঁদা দাবির ভিডিও এডিট করা এবং ষড়যন্ত্র বলে দাবি করেছেন।
স্থানীয়রা জানান, কাউন্সিলর খালিদ ও রিয়াজ বাল্যবন্ধু। পটপরিবর্তনের পর গণহারে মামলা চলাকালে কোনো এক সময় খালিদ নিজেই ভিডিওটি ধারণ করেছেন।
দুই মিনিট ৪২ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, রিয়াজ শাহেদের নম্বর থেকে খালিদকে হোয়াটসঅ্যাপে ফোন করা হয়। খালিদের পাশ থেকে কেউ একজন কথোপকথনটি ভিডিও করেন। রিয়াজ ফোনটি শফিকুল ইসলাম হোসেনের কাছে ধরিয়ে দেন।
ফোনে শফিকুল ইসলাম হোসেনকে বলতে শোনা যায়, ‘ওইখানে আমাদের মেইন লোক রিয়াজ। সে বার বার বলতেছে, সে আমার ছোটবেলার বন্ধু। তার ব্যাপারটা একটু দেখতে হবেনে। আমরা এগুলো করি না, তারপরও এখন করতে হবে। ওর দিকে একটু খেয়াল-টেয়াল রাইখেন। ঝামেলা আছে তো অনেক।’
খালিদ-‘ভাই কী করতে হবে বলেন, ভাই’। হোসেন- ‘কী করতে হবে তো বোঝেনই, হেল্প-টেল্প করা লাগবে।’
খালিদ- ‘আপনি একটু বইলে দেন আমি সেভাবে ব্যবস্থা কইরে দিচ্ছি।’
হোসেন- ‘এখন বিভিন্ন জায়গা ম্যানেজ করা লাগবে তো। ও (রিয়াজ) বলবেনে।’
খালিদ- ‘আপনার মুখ দিয়ে শুনলে আমার মনডা ঠান্ডা হবে।’
হোসেন- ‘দেখেন লাখ দুই টাকা ম্যানেজ করে দেন ‘ খালিদ- ‘ঠিক আছে আমি লাখ দুই টাকা ম্যানেজ করে দিচ্ছি।’
এই সময় ফোনটি রিয়াজের কাছে দেওয়া হয়।
রিয়াজ শাহেদ বলেন, ‘বন্ধু আমি চেষ্টা করতেছি, ভাইরে ম্যানেজ করেছি অনেক কষ্টে।’
খালিদ- ‘বন্ধু উনি লাখ দুয়েক বলছে, আমি দিবানে। উনি কে?’
রিয়াজ- ‘উনি আমাদের মহানগর যুগ্ম আহ্বায়ক হোসেন ভাই, নাম কবি না কাউকে।’
খালিদ- ‘কবো না, আমি দেখতেছি।’
ভিডিওর বিষয়ে ৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির আহ্বায়ক রিয়াজ শাহেদ বলেন, ‘আমার বক্তব্য এডিট করে এটা বানাইছে। আমি নিজে বাদী হয়ে খালিদের নামে মামলা দিছি। ওর বিরুদ্ধে তিনটি মামলা হয়েছে। মামলা দিলে টাকা চাব কেন?’
শফিকুল ইসলাম হোসেন বলেন, ‘এ ধরনের কথা কারও সঙ্গে বলিনি। পুরো ভিডিও বানোয়াট, মিথ্যা। এটা আমার গলা না। কেউ অ্যাপ দিয়ে এটা বানিয়েছে ‘
আওয়ামী লীগ নেতা ও কাউন্সিলর খালিদকে ফোন দেওয়া হলে অপরিচিত ব্যক্তি রিসিভ করে জানান, উনাকে পাবেন না। আপনার নাম বলব, যদি প্রয়োজন মনে করেন, তাহলে তিনি ফোন দেবেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত খালিদ ফোন দেননি।
এদিকে আজ বিকেলে খালিদ আহমেদ বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন, একটি প্রতারক গ্রুপ আমার কাছ থেকে টাকা হাতানোর জন্য কলটি করে। ভিডিওতে রিয়াজ সাহেদ ও হোসেন যাদের নাম ব্যবহার করা হয়েছে তাদের কারও সঙ্গে আমার কোনরকম টাকা-পয়সার লেনদেন হতো তাহলে কি আমি তিনটি মামলার আসামি হতাম…?’
তিনি আরও বলেন, ‘রিয়াজ শাহেদ আমার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের একজন পরোপকারী মানুষ তার সঙ্গে আমার রাজনৈতিক মতাদর্শ ভিন্ন। শুধুমাত্র মাঝেমধ্যে রাজধানী স্পোর্টিং ক্লাবের বিষয় আলোচনা হয়। তার কারণ, তিনি আমার ওই ক্লাবের সভাপতি, যেটার আমি সাধারণ সম্পাদক। এর বাইরে আর কোনো সম্পর্ক নাই। আমি এ ধরনের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করায় তীব্র নিন্দা-প্রতিবাদ জানাই।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।