আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতের যোগ গুরু রামদেব এবার দেশটির সুপ্রিম কোর্টের সামনে ‘নিঃশর্ত ক্ষমা’র আর্জি দাখিল করেছেন৷ পতঞ্জলির ‘বিভ্রান্তিকর’ বিজ্ঞাপনের জন্য গত সপ্তাহে সুপ্রিম কোর্টে হাজিরা দিয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা চান তিনি। তবে যোগগুরু একা নন, পতঞ্জলির ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও রামদেবের সহযোগী আচার্য বালকৃষ্ণও শীর্ষ আদালতে হলফনামা দাখিল করে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন।
গত সপ্তাহে এই মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টে উপস্থিত ছিলেন তারা। সেখানেই শীর্ষ আদালতের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় রামদেবকে। যদিও আদালতের নির্দেশ অমান্য নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে ক্ষমাও চান রামদেব। যোগগুরুর আইনজীবী হাত জোড় করে আদালতকে বলেন, ‘‘আমরা ক্ষমা চাইতে চাই এবং আদালত যা বলবে তা মানতে প্রস্তুত।’’ এর পরেই সুপ্রিম কোর্ট মন্তব্য করে, ‘‘ফল ভোগ করার জন্য তৈরি থাকুন।’’
বিভ্রান্তিকর বিজ্ঞাপন সংক্রান্ত উক্ত মামলায় পতঞ্জলির বিরুদ্ধে ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের অভিযোগ ছিল, পতঞ্জলির বেশ কয়েকটি বিজ্ঞাপনে অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসা এবং চিকিৎসককে অসম্মান করা হয়েছে। বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে সাধারণ জনগণকে বিভ্রান্ত করার অভিযোগও আনা হয়েছিল। অভিযোগ ছিল, কোভিড প্রতিরোধী না-হওয়া সত্ত্বেও শুধু করোনিল কিট বিক্রি করেই আড়াইশো কোটি টাকার বেশি মুনাফা করেছিল রামদেবের পতঞ্জলি। আর তার জন্য ‘বিভ্রান্তিকর এবং মিথ্যা’ বিজ্ঞাপনী প্রচার চালানো হয়েছিল বলে অভিযোগ ছিল আইএমএ-র।
ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের দাবি, পতঞ্জলির করা দাবিগুলো আদৌ সত্য বলে প্রমাণিত নয় এবং তা ১৯৫৪ সালের ড্রাগস অ্যান্ড আদার ম্যাজিক রেমেডি আইন এবং ২০১৯ সালের উপভোক্তা সুরক্ষা আইনের মতো আইনগুলোকে সরাসরি লঙ্ঘন করে।
বিভ্রান্তিকর বিজ্ঞাপন মামলায় বারবার সুপ্রিম কোর্টের ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয়েছে যোগগুরু রামদেব এবং তার সংস্থা পতঞ্জলিকে। আদালতের নির্দেশ অমান্য করার অভিযোগও উঠেছিল যোগগুরু রামদেবদের বিরুদ্ধে। ভুল বিজ্ঞাপন সম্প্রচার করা নিয়ে শীর্ষ আদালতের সতর্কবার্তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই রামদেব যেভাবে সংবাদ সম্মেলন করেছিলেন, তা নিয়েও পতঞ্জতলিকে তুলোধোনা করেছিল আদালত।
এরআগে, গত বছরের নভেম্বরে মামলাটির শুনানির সময় সুপ্রিম কোর্ট তার পর্যবেক্ষণে জানিয়েছিল, ‘বিভ্রান্তিকর এবং মিথ্যা’ বিজ্ঞাপনী প্রচার বন্ধ না করলে পতঞ্জলি আয়ুর্বেদ সংস্থাকে জরিমানার মুখে পড়তে হবে। ফেব্রুয়ারি মাসে শীর্ষ আদালত ‘পতঞ্জলি’কে সমস্ত বৈদ্যুতিন মাধ্যমে এবং সংবাদপত্রে সব ‘মিথ্যা’ বিজ্ঞাপন বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছিল। সঠিক সময়ে ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় পুরো বিষয়টি নিয়ে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারেরও সমালোচনা করেন সুপ্রিম কোর্ট।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।