আন্তর্জাতিক ডেস্ক : রাশিয়া-ইউক্রেন ইস্যুকে কেন্দ্র করে ফেব্রুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত রাশিয়ার ওপরে কয়েক হাজার নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে পশ্চিমারা। এতে করে বিশ্বের সর্বোচ্চ গম উৎপাদনকারী দেশ রাশিয়া থেকে অন্য দেশে খাদ্যপণ্য রফতানি উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। ফলাফলে দেখা দিয়েছে খাদ্যসংকট। সংকট নিরসনে এবার বিশ্বব্যাংক রাশিয়ার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছে।
শুক্রবার (১৫ জুলাই) বিশ্বব্যাংকের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, বাণিজ্য বিধিনিষেধ তুলে নিলে পণ্য সরবরাহে বাধা ও দাম কমানো সম্ভব হবে। এর ফলে বৈশ্বিক খাদ্যসংকট মোকাবিলা করা আরও সহজ হবে।
পাঁচটি সংস্থার সম্মিলিত বিবৃতিতে বিশ্ব খাদ্য ঘাটতি নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে বিশ্বব্যাংক, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও), আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ), ডব্লিউএফপি ও জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) বৈশ্বিক খাদ্যসংকট মোকাবিলায় বাণিজ্যবিষয়ক বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ডেভিড ম্যালপাস, আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা, ডব্লিউটিওর মহাপরিচালক (ডিজি) এনগোজি ওকোনজো-আইওয়ালা, ডব্লিউএফপির নির্বাহী পরিচালক ডেভিড বেসলি ও এফএওর ডিজি কু ডঙ্গুর নামে যৌথভাবে বিবৃতিটি প্রকাশ করা হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, করোনা মহামারি ও ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের কারণে খাদ্য, জ্বালানি ও সারের বাজার মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া বর্তমানে বিশ্বের প্রায় ২৫টি দেশের খাদ্য রফতানির ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। বৈশ্বিক খাদ্য বাণিজ্যে এসব দেশের হিস্যা ৮ শতাংশের বেশি। এছাড়া গত বছরের তুলনায় বিশ্বব্যাপী সারের দাম দ্বিগুণ হয়েছে। এতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে।
সংস্থাগুলোর কর্তাব্যক্তিরা বলেন, বাণিজ্য প্রক্রিয়া সহজ করা এখন সময়ের দাবি। বিশ্বব্যাপী বাণিজ্যসংক্রান্ত বিধিনিষেধের কারণে জিনিসপত্রের দাম বাড়ে। একই সঙ্গে তা খাদ্যসংকটকে আরও প্রকট করে তোলে। তাই নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়ে খাদ্য ও কৃষির বৈশ্বিক বাজারের কার্যকারিতা ও প্রতিকূলতা মোকাবিলার সক্ষমতা বাড়াতে হবে।
নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার পাশাপাশি তুলনামূলক সহজ পরিদর্শন ও নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় বাণিজ্য করা গেলে পণ্য সরবরাহে বাধা ও দাম কমবে। পাশাপাশি মানবিক উদ্দেশ্যে খাদ্য কেনার ক্ষেত্রে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোকে তাৎক্ষণিক সহায়তার প্রয়োজন রয়েছে। উৎপাদন ও জলবায়ু-সহনশীল কৃষিতে বিনিয়োগ বাড়ালে খাদ্যসংকট আরও কমানো যেতে পারে বলে মন্তব্য করেন আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর শীর্ষ কর্মকর্তারা।
বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) দেয়া তথ্যমতে, বর্তমানে বিশ্বের ৮২টি দেশের প্রায় ৩৪ কোটি ৫০ লাখ মানুষ খাদ্যনিরাপত্তাহীনতার ঝুঁকিতে রয়েছে। বিশ্বকে নিরাপদ করতে হলে একাট্টা হয়ে কাজ করার বিকল্প দেখছেন না সংশ্লিষ্টরা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।