সাইফুল ইসলাম, মানিকগঞ্জ : মানিকগঞ্জ পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় রাতের আধারে চুরির মহোৎসবে মেতেছে সংঘবদ্ধ চোর চক্রের সদস্যরা। এক রাতেই কমপক্ষে ১৪টি দোকানে হানা দিলেও এর মধ্যে ১০টি দোকান থেকে নগদ অর্থসহ বিভিন্ন ধরনের মালামাল চুরি করেছে চোরেরা। এতে নগরবাসীর জানমালের নিরাপত্তা নিয়ে পুলিশের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ।
গতকাল বুধবার (২৬ এপ্রিল) দিবাগত মধ্যরাত থেকে বৃহস্পতিবার ভোররাতে মানিকগঞ্জ শহর ও পৌর এলাকার বিভিন্ন এলাকায় এ চুরির ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় পৌর এলাকার বিভিন্ন জায়গা থেকে সন্দেহভাজন চার ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ। তবে আটককৃতদের নাম বলতে রাজি হয়নি থানা পুলিশ।
মানিকগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রউফ সরকার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ ও ব্যবসায়ীরা জানান, মানিকগঞ্জ শহরের শহীদ রফিক সড়কের সবুজ ফার্মেসী থেকে ১৫ হাজার, দেশ লাইব্রেরী থেকে তিন হাজার, সিটি ড্রাগস থেকে তিন হাজার, আমিন ফার্মেসী থেকে ১৫ হাজার, গঙ্গাধরপট্টি সড়কে মা জেনারেল স্টোর থেকে ২ হাজার টাকা, খান ভ্যারাইটিস স্টোর ও পিয়াস ভ্যারাইটিস স্টোর থেকে বেশ কিছু সিগারেটের প্যাকেট ও মোবাইল কার্ড এবং শহরের সেওতা এবং জয়রার দুটি মুদিকান থেকেও নগদ অর্থ ও মোবাইলের কার্ড চুরি হয়েছে।
এছাড়াও শহীদ রফিক সড়কের স্যামসাং মোবাইলের শোরু ও মায়ের দোয়া স্টোর এবং বনগ্রাম এলাকার তিনটি দোকানের সাটার ভাঙ্গার চেষ্টা করেছে চোরেরা।
মা জেনারেল স্টোরের মালিক মো. হাবিবুর রহমান জানান, সারাদিন বেচাকেনার কিছু টাকা ক্যাশে রাখা ছিল। তাছাড়া মোবাইল রিচার্জের টাকা ও এমবি কার্ড এবং বিভিন্ন ব্র্যান্ডের বেশ কয়েক কার্টন সিগারেট চুরি হয়ে গেছে। সব মিলে প্রায় লাখ টাকার মতো ক্ষতি হয়েছে।
জ্ঞানোদা স্টেশনারীর মালিক পিযুষ মন্ডল জানান, থানার পাশে থেকে চুরির ঘটনা অত্যন্ত দুঃখ্যজনক। চুরির ঘটনায় যেমন আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হলাম, তেমনি পুলিশের ভাবমুর্তি নষ্ট হয়েছে। তবে এঘটনায় পর পুলিশকে আরোও সচেতন হওয়া দরকার এবং টহল বাড়ানো দরকার। না হলে আবার এধরনের ঘটনা ঘটতে পারে।
নাম প্রাকশ্যে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যবসায়ী জানান, রাতে শহরের ভিতরে টহলের সময় পুলিশ সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করে না। টহলের বেশিরভাগ সময় গল্প আর আড্ডায় সময় পার করেন তারা। এর আগেও বেশ কয়েকটা দোকানে বড় ধরনের চুরি হয়েছে। পুলিশ যদি সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতো, তাহলে শহরের মধ্যে একরাতে এতো দোকানে চুরি হতো না। আর ব্যবসায়ীদের চিন্তাও করতে হতো না।
শহরের টাউন ফাঁড়ির পরিদর্শক মজিবর রহমান জানান, শহরবাসী ও ব্যবাসয়ীদের নিরাপত্তার জন্য প্রতি রাতে ফাঁড়ির পুলিশ টহল দিয়ে আসছে। টহলের মধ্যেও এক রাতের এতোগুলো দোকানে চুরি ঘটনা অবাক হওয়ার মতো। তবে ঘটনার পর থেকে চুরির বিষয়টিও গুরুত্বের সহকারে দেখা হচ্ছে।
ওসি আব্দুর রউফ সরকার জানান, ঘটনার পর অভিযান চালিয়ে সন্দেহভাজন চার ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে এবং থানায় তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জড়িতের ধরতে পুলিশ কাজ শুরু করেছে। এঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলেও তিনি জানান।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।