আন্তর্জাতিক ডেস্ক : রাজধানীর অদূরে সাভারে ঠিকাদার কাজিম উদ্দিন (৫০) হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটন করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-র্যাব। এ ঘটনায় নিহতের ভাতিজা আব্দুল লতিফকে র্যাব-৪ এর একটি দল গ্রেফতার করেছে। র্যাবের দাবি, সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জেরে কাজিম উদ্দিনকে কুপিয়ে হত্যা করেন আব্দুল লতিফ খাঁন।
শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর কাওরানবাজারে এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, বৃহস্পতিবার আশুলিয়া এলাকা থেকে আব্দুল লতিফকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি নিহত কাজিম উদ্দিনের বড় ভাইয়ের ছেলে। লতিফের বাবা মারা যাওয়ার পর থেকেই তার চাচাদের সঙ্গে পৈতৃক সম্পত্তি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। সেই ক্ষোভ থেকে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়।
খন্দকার আল মঈন জানান, কাজিম উদ্দিন হত্যাকাণ্ডের পর পরিবার থেকে জানানো হয়- বিগত সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে রাজনৈতিক কারণে হত্যাকাণ্ড ঘটে। ঘটনার পর সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। দুদিন পর ক্লুলেস এই হত্যাকাণ্ডের মোড় নেয় অন্যদিকে। লতিফকে গ্রেফতারের পর জানা যায়, কোনো রাজনৈতিক বা নির্বাচনি কারণ নয়, পারিবারিক বিরোধের জেরে লতিফ তার চাচা কাজিম উদ্দিনকে খুন করেন।
র্যাবের এই কর্মকর্তা জানান, জিজ্ঞাসাবাদে লতিফ জানান- পৈতৃক সম্পত্তি ভাগাভাগি নিয়ে কাজিম উদ্দিনের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে লতিফ উত্তেজিত হয়ে ঘরে থাকা বটি দিয়ে কাজিম উদ্দিনের গলায় কোপ দিয়ে হত্যা করেন। এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে পরিবারের আর কেউ জড়িত আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, গত ৭ ফেব্রুয়ারি সকাল আনুমানিক ১০টায় সাভারের আশুলিয়ার ডেন্ডাবর এলাকায় লিপি ডেইরি ফার্মের বিশ্রাম রুম থেকে ফার্মটির স্বত্বাধিকারী কাজিম উদ্দিনের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ক্লুলেস এই হত্যাকাণ্ডে ভিকটিমের স্ত্রী বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মঈন বলেন, এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার রাতে র্যাব-৪ এর একটি দল ঢাকার আশুলিয়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে হত্যাকারী মোহাম্মদ আবদুল লতিফকে গ্রেফতার করে। উদ্ধার করা হয় ভিকটিমের ব্যবহৃত একটি মোবাইল ফোন। র্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে আবদুল লতিফ জানায়, লতিফের বাবা মৃত্যুর পর থেকে সে তার চাচাদের সঙ্গে বসবাস করত। লতিফের পৈতৃক সম্পত্তির অংশীদারিত্ব নিয়ে ভিকটিম কাজিম উদ্দিনের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এ বিষয়ে প্রায় সময় তাদের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হতো। গত ৬ ফেব্রুয়ারি রাতে ভিকটিম কাজিম উদ্দিন নিজস্ব মালিকানাধীন ডেইরি ফার্মে তার স্ত্রী সন্তান নিয়ে দেখতে আসেন। ডেইরি ফার্মটি ভিকটিমের বাসার পাশে হওয়ায় ভিকটিম তার স্ত্রী ও সন্তানকে বাসায় পাঠিয়ে দেন এবং ডেইরি ফার্মের বিশ্রাম রুমে রাতে থাকার জন্য অবস্থান করেন। সেদিন রাতেই লতিফ ভিকটিমের ডেইরি ফার্মে এসে তার পৈতৃক সম্পত্তির ভাগাভাগি নিয়ে কথা বললে ভিকটিমের সঙ্গে তার বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে লতিফ রুমে থাকা বটি নিয়ে ভিকটিমের গলায় কোপ দিয়ে হত্যা করে। লতিফ হত্যার ঘটনাটি যেন কেউ বুঝতে না পারে সেজন্য ভিকটিমের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নিয়ে রুমের দরজা তালা দিয়ে এবং হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত বটি পাশের রুমে রেখে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।
র্যাব কর্মকর্তা আরও বলেন, পরে ৭ ফেব্রুয়ারি সকালে ভিকটিমের স্ত্রী ফার্মে গিয়ে বিশ্রাম রুমের দরজা তালা দেওয়া দেখে ধারণা করেন, তার স্বামী বাইরে গেছে। বিশ্রাম রুমের একটি চাবি ভিকটিমের কাছে এবং অপর একটি চাবি তার স্ত্রীর কাছে থাকত। এরপর ফার্মের কাজের লোক গরুর ওষুধ নেওয়ার জন্য রুমের চাবি নিয়ে দরজা খুলে ভেতরে প্রবেশ করলে ভিকটিমের গলাকাটা নিথর দেহ ঘরের বিছানার ওপরে দেখতে পায়। হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে লতিফ গ্রেফতার এড়াতে আশুলিয়া এলাকায় আত্মগোপন করে। আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় র্যাব তাকে গ্রেফতার করে।
তাক লাগিয়ে দেবার মত আবিষ্কারের পথে বিজ্ঞানীরা, থামিয়ে দেয়া যাবে শুক্রাণুর সাঁতার
র্যাব জানায়, নিহত কাজিম উদ্দিন স্থানীয় ওয়াজ উদ্দিনের ছেলে। তিনি পেশায় ব্যবসায়ী ও ঢাকা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর ঠিকাদার ছিলেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।