জুমবাংলা ডেস্ক : চাঁদাবাজি-সিন্ডিকেট বন্ধ থাকার কারণে নিত্যপণ্যের দাম অনেকটাই কমছে। এভাবে চলতে থাকলে আর কিছুদিনের মধ্যে নিত্যপণ্যের দাম সাধারণ মানুষর ক্রয়-ক্ষমতার মধ্যে চলে আসবে। এজন্য দরকার বাজার মনিটরিং। কোথাও কোথাও নতুন করে চাঁদাবাজরা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার চেষ্টা করলেও মাঠে থাকা শিক্ষার্থীরা ব্যবসায়ীদের সহায়তায় এসব প্রতিহত করছে। ফলে সড়কে-সড়কে, বাজারে-বাজারে চাঁদাবাজি বন্ধ হয়ে গেছে। অনেকটাই স্বস্তিতে আছেন ব্যবসায়ীরা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সবজি, মাছ, ডিম ও মুরগির মতো পণ্য রাজধানীর বাজারে আনতে সড়কে ও বাজারে বেশ কয়েক দফা চাঁদা দিতে হতো। মূলত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কিছু অসাধু সদস্য ও ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা এ চাঁদা আদায় করতেন। বর্তমানে এদের কেউই আর না থাকায় চাঁদাবাজি অনেকটাই বন্ধ রয়েছে।
অপরদিকে সড়কের শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ ও পরিচ্ছন্নতার পাশাপাশি বাজার তদারকিতে নেমেছে শিক্ষার্থীরা। তারা বাজারে বাজারে ঘুরে ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলছেন। চাঁদাবাজি বন্ধে নানা প্রচার চালাচ্ছেন। ‘চাঁদাবাজি ও সিন্ডিকেটমুক্ত দেশ গড়ি’, ‘এখন থেকে কেউ চাঁদা দেবেন না’ মাইকে এমন ঘোষণা দিয়ে প্রচারও চালাচ্ছেন কেউ কেউ।
চাঁদাবাজি বন্ধ হওয়ার বড় প্রভাব পড়েছে সবজির বাজারে। ১০০ টাকা দরে বিক্রি হওয়া সবজির দাম কমে এখন ৫০ টাকার কাছাকাছি বিক্রি হচ্ছে। রাজধানীর কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা গেছে, করলা, বেগুন, বরবটি এখন ৮০ টাকার আশপাশে বিক্রি হচ্ছে। পেঁপে, ঢেড়স, ঝিঙা, ধুন্দল, চিচিঙ্গা ইত্যাদি সবজি ৪০-৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। কিছুদিন আগেও যে লাউ ৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, তা এখন ৬০ টাকায় নেমেছে। কাঁচামরিচের কেজি ৩৪০ টাকা থেকে নেমে হয়েছে ১৮০ টাকায়। ৬০ টাকা পেঁপের কেজি এখন বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। পটোল বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা কেজি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এ বাজারের একাধিক সবজি ব্যবসায়ী বলেন, বাজারে সবজির ট্রাক ঢুকলেই ৫০০ থেকে শুরু করে যার কাছ থেকে যতটুকু পারা যায় চাঁদা আদায় করত ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা। এখন সেটা বন্ধ বললেই চলে। যদিও মাঝে মধ্যে এখন আবার অন্য রাজনৈতিক দলের নেতার লোক পরিচয়ে কেউ কেউ চাঁদা আদায়ে চেষ্টা করেছে। কিন্তু ব্যবসায়ী ও মাঠে থাকা শিক্ষার্থীরা তা প্রতিহত করছে।
ডিমের ডজন ১৫৫ টাকা থেকে কমে ১৪৫ টাকা হয়েছে। ব্রয়লার মুরগির কেজিতেও ১০ টাকা কমে ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সোনালি মুরগির কেজিতেও ১০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত কমে ২৯০ টাকা হয়েছে। আলুর দাম অনেকটা অপরিবর্তিতই রয়েছে। অপরদিকে বাড়তে থাকা চালের দাম নতুন করে বাড়েনি। কোনো কোনো দোকানে কেজিতে ১-২ টাকা পর্যন্ত কমে বিক্রি হচ্ছে।
পেঁয়াজের দাম খুচরায় এখনো সেভাবে কমেনি। তবে শনিবার পাইকারি বাজারে কিছুটা কমেছে বলে জানান শ্যামবাজারের ব্যবসায়ীরা। শুক্রবার পাইকারিতে দেশি পেঁয়াজের কেজি ছিল ১০৫ টাকা। শনিবার তা কমে ১০০ থেকে ১০২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
চালের বাজারেও প্রভাব পড়েছে জানিয়ে কারওয়ানবাজারের চাটখিল রাইস এজেন্সির আড়তদার মো. বেলাল হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, বেশ খানিকটা সময় ধরে মিলগেটে চালের দাম বাড়তি। সড়কে চাঁদাবাজির কারণে দাম আরও বাড়তি ছিল। এখন চাঁদাবাজি বন্ধ থাকায় বস্তাপ্রতি ৫০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত দাম কম রয়েছে। চাঁদাবাজি বন্ধ হওয়ায় ট্রাক ভাড়া আরও কমার কথা।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান মনে করেন, বর্তমানে পণ্যের দাম কমলেও তা আরও কমা উচিত। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে ব্যবসায়ীদের হিডেন কস্টগুলো কমে যাওয়ায় দাম কমতে শুরু করেছে। কিন্তু বাস্তবে এর প্রভাব আরও বেশি পড়ার কথা, দাম আরও কমার কথা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।