জুমবাংলা ডেস্ক : ভরা মৌসুমেও কাঙ্খিত ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে না নদী কিংবা সাগরে। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় নদী-সাগর উত্তাল থাকায় জেলেরা জাল ফেলে মাছ ধরতে না পাড়ায় বাজারে ইলিশের সরবরাহ কম বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। স্মরণকালে ভরা মৌসুমে ইলিশের এত আকাল দেখেননি আড়তদাররা।
সরবরাহ কম থাকায় ইলিশের গায়ে আগুন লেগেছে। রবিবার দেড় কেজি সাইজের এক মণ ইলিশ পাইকরী বিক্রি হয়েছে ৭৫ হাজার টাকায়। তবে বৈরী আবহাওয়া কেটে গেলে নদ-নদীতে প্রচুর ইলিশ আহরিত হবে এবং তখন দামও নাগালের মধ্যে আসবে বলে প্রত্যাশা মৎস্য বিভাগের।
নদ-নদীতে সারা বছর কম বেশি ইলিশ পাওয়া যায়। তবে শ্রাবন-ভাদ্র-আশ্বিন এই ৩ মাসকে ইলিশের ভরা মৌসুম হিসেবে ধরা হয়। প্রতি বছর এই সময়ে নদী ও সাগরের হাজার হাজার মন ইলিশে সয়লাব থাকতো বরিশালের পোর্ট রোডের ইলিশ মোকাম। কিন্তু গত কয়েক দিন ধরে ইলিশের খড়া চলছে নদী এবং সাগরে।
রবিবার বরিশাল পাইকরী বাজারে দেড় কেজি সাইজের প্রতি মণ ইলিশ ৭৫ হাজার, ১ কেজি ২শ’ গ্রাম সাইজের ইলিশ ৬২ হাজার, ১ কেজি সাইজের ইলিশ ৫৮ হাজার এবং রপ্তানিযোগ্য এলসি সাইজ (৬শ’ গ্রাম থেকে ৯শ’ গ্রাম) প্রতি মণ বিক্রি হয়েছে ৪৯ হাজার টাকা মন দরে। ইলিশ আড়তদার আবুল কালাম এই তথ্য জানিয়েছেন।
জেলা মৎস্য আড়তদার এসোসিয়েশনের সদস্য নাসির উদ্দিন জানান, বৈরী আবহওয়ার কারণে নদী এবং সাগর উত্তাল। জেলেরা উত্তাল নদী-সাগরে জাল ফেলতে পারে না। ইলিশের আহরণ কম থাকায় বাজারে সরবরাহও কম। গত ৩ দশকেও ভরা মৌসুমে ইলিশের এমন আকাল কিংবা চড়া দাম দেখেননি তিনি।
ইলিশ আড়তদার শেখ রিপন বলেন, অন্য বছর এই সময়ে মোকামে স্থানীয় নদীর ২ থেকে আড়াই হাজার মণ ইলিশ পাওয়া যেত। রবিবার সর্বসাকুল্যে ৫০ মন ইলিশ এসেছে আড়তে। এর আগের দিন এসেছিলো প্রায় দেড়শ’ মন ইলিশ। ইলিশ সরবরাহ কম থাকায় দাম সাম্প্রতিক সময়ের রেকর্ড ভেঙেছে বলে তিনি জানান।
খুচরা মাছ বিক্রেতা আব্দুল হালিম জানান, ইলিশের দাম চড়া হওয়ায় এর প্রভাব পড়েছে অন্যান্য মাছে। সব ধরনের মাছের দাম বেড়েছে গত কয়েকদিনে। আগে যারা ৫ কেজি মাছ কিনতে এখন তারা আঁধা কেজি মাছ কেনেন। কেউ মাছ না কিনে খালি হাতে ফিরে যান। এতে ব্যবসায় মন্দা দেখা দিয়েছে।
বরিশাল জেলা মৎস্য বিভাগের ইলিশ বিশেষজ্ঞ ড. বিমল চন্দ্র দাস বলেন, নদী-সাগরে প্রচুর ইলিশ আছে। কিন্তু সাগর ও নদী উত্তাল থাকায় জেলেরা মাছ আহরণ করতে পারছে না। বৈরী আবহাওয়া কেটে গেলে নদী-সাগরে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়বে এবং তখন দামও সাধারণের নাগালের মধ্যে আসবে বলে প্রত্যাশা তাদের।
মৎস্য বিভাগের হিসেব মতে, গত বছর বরিশাল জেলায় ৪১ হাজার মেট্রিক টন ইলিশ আহরিত হয়েছিল। এ বছর ৪৫ হাজার মেট্রিক টন ইলিশ উৎপাদনের আশা মৎস্য বিভাগের।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।