সাইফুল ইসলাম : অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্যে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী বলেছেন, ‘সমস্ত গণতন্ত্রকামী মানুষ আপনাদের সমর্থন দিয়েছে। কিন্তু কনস্টিটিউশনালি বা আইনগতভাবে অন্তর্বর্তী সরকারের কোন ভিত্তি নেই। যারা গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছে তারা প্রত্যেকেই আপনাদের সমর্থন করেছে, সে অনুযায়ী আপনারা দেশ চালাচ্ছেন। এখন আওয়ামী লীগ কিভাবে রাজনীতি করবে সে দায়িত্ব অন্তর্বর্তী সরকারের। কারণ প্রশাসন আপনাদের হাতে, অন্য সব স্টেট মেশিনারি আপনাদের হাতে। আওয়ামী লীগকে নিয়ে আপনারা কি করবেন সেটা আপনাদেরই ঠিক করতে হবে।’
বুধবার (২৩ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার চিত্রশিল্পী মানবেন্দ্র ঘোষের অগ্নিদগ্ধ বাড়ি পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এসব কথা বলেন।
চিত্রশিল্পী মানবেন্দ্র ঘোষের বাড়িতে অগ্নিকাণ্ডের সাথে স্বৈরাচারের দোসররাই জড়িত উল্লেখ করে রুহুল কবীর রিজভী বলেন, ‘এ বছর পহেলা বৈশাখে শান্তি ও স্বস্তির সাথে, যেহেতু ফ্যাসিবাদ ছিল না এই কারণে আন্দোলন সংগ্রামের নানা প্রতীক তৈরি করে আনন্দ শোভাযাত্রা করেছে। এতে ঈর্ষান্বিত হয়ে আমার মনে হয় স্বয়ং যিনি পালিয়ে আছেন তাদের প্রধান প্রতিভূ (পলাতক শেখ হাসিনা) তার নির্দেশেই এখানে ঘাপটি মেরে থাকা আওয়ামী দোসররাই এই কাজটি করেছে।’
বিএনপির সিনিয়র এই নেতা বলেন, ‘আওয়ামী লীগের দোসরদের অনুসারীরা বিভিন্ন তৃণমূলে সমাজের নানা জায়গায় ঘাপটি মেরে আছে। ওদের কাছে পেট্রোল কিনে বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার যে অর্থ, মানুষকে হত্যা করার জন্য যে অস্ত্র লাগে তার অর্থ তাদের কাছে আছে। দোসরদের অনেকেই পালিয়ে গেছে পার্শ্ববর্তী দেশসহ অনেক জায়গায়। কিন্তু যারা নৈরাজ্য ছড়াচ্ছে তারা প্রশ্রয় পাচ্ছে কার দ্বারা। প্রশাসনের ব্যক্তিবর্গের তো এটা জানার কথা। যারা ১৫ বছর যাবৎ শেখ হাসিনাকে পাহারা দিয়েছে, ব্যাংক লুট করেছে, অন্যের সম্পদ লুট করেছে, টাকা পাচার করেছে তারা আজ এই জনসমুদ্রের ভিতর কোথায় লুকিয়ে আছে অন্তর্বর্তী সরকার যদি খুঁজে বের করতে না পারে তাহলে তো এই সরকারকে মানুষ ব্যর্থ সরকার বলবে।
রিজভী আরও বলেন, ‘এই সরকার নির্বাচন নিয়ে কি তালবাহানা করছে তা আমরা দেখছি। এই সরকার তো গণতন্ত্র সংগ্রামের ফসল। তারতো প্রতিটা ক্ষেত্রে জবাবদিহিতা থাকতে হবে। জনগণের কাছে জবাবদিহিতা করতে হবে যে মানবেন্দ্র ঘোষের বাড়িতে আগুন লাগলো কি করে। যে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে তার চিত্রকর্ম দিয়ে, শৈল্পিক চেতনা দিয়ে সে সেটাকে প্রতিবাদ করেছে। মানবেন্দ্র ঘোষের মতো আরো কত লোক যে সামনে ক্ষতিগ্রস্ত হবে যারা গণতন্ত্রের কথা বলেছে, বহুদলীয় গণতন্ত্রের কথা বলেছে, যারা লড়াই করেছে, গুলির সামনে বুক চেতিয়ে দাঁড়িয়েছে, এখনো যারা ক্ষত বয়ে বেড়াচ্ছে তারা প্রত্যেকেই আওয়ামী ফ্যাসিস্ট দোসরদের টার্গেটে পরিণত হয়ে আছে। তারা এক-এক করে তাদের উপর আক্রমণ করবে।’
এ সময় মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির আহবায়ক আফরোজা খানম রিতা, আহ্বায়ক কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট আজাদ খান, গোলাম আবেদীন কায়সার, জেলা কৃষক দলের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া সাইদ, সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম বাদল, বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রফিক উদ্দিন ভূঁইয়া হাবু, জেলা যুবদলের সদস্য সচিব তুহিনুর রহমান তুহিন, যুগ্ম আহবায়ক মোহাম্মদ মাসুদ পারভেজ, স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক জিন্নাহ খান, ছাত্রদলের সভাপতি আব্দুল খালেক শুভ, সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম খান সজীবসহ বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।