জুমবাংলা ডেস্ক : নির্বাচন কমিশন অফিসের কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীর সহায়তায় অবৈধভাবে জন্মনিবন্ধন সনদ ও জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) তৈরি হচ্ছে। একটি চক্র এ কাজে তাদের সহায়তা করে। তারা রোহিঙ্গা ও অপরাধীদের এনআইডি কার্ড সরবারাহ করে আসছিল। শুধু নতুন আইডি কার্ড নয়, অপরাধীদের চাহিদা মতো নাম-পরিচয় পরিবর্তন ও সংশোধন করে দেয় তারা। একটি এনআইডি করার জন্য চক্রকে দিতে হয় ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা।
গত বুধবার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে ভুয়া জন্মনিবন্ধন সনদ এবং এনআইডি তৈরি চক্রের ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) এসব তথ্য জানিয়েছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলো– সাইফুল ইসলাম ওরফে সোহেল, মো. তারেক, সবুজ মিয়া, টিপু সুলতান, রিয়াজ খান ও শামসুল করিম। তাদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সিআইডির মুখপাত্র বিশেষ পুলিশ সুপার আজাদ রহমান বলেন, এ চক্রের সহায়তায় ভুয়া জন্মসনদ, এনআইডি ও পাসপোর্ট পেয়েছে রোহিঙ্গা ও দাগি আসামিরা। চট্টগ্রামের কৃষক ওমর ফারুককে টার্গেট করে চক্রটি। এর পর তাঁর এনআইডি কার্ড সংগ্রহ করে ছবি, ঠিকানা ও এনআইডি কার্ড দিয়ে কক্সবাজারে থাকা ওমর ফারুক নামে এক রোহিঙ্গার পাসপোর্ট তৈরি করে দেয়। ওই রোহিঙ্গা নাগরিকের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নেয় চক্রটি। ওমর ফারুকের মতো সাধারণ মানুষের এনআইডি সংগ্রহে সক্রিয় রয়েছে দালাল চক্র। সংগ্রহের পর অন্যজনের নামে অবৈধভাবে তৈরি করা হয় এনআইডি। চক্রটি ভুয়া এনআইডি তৈরির পর বিভিন্ন ব্যাংকের সঙ্গে লিয়াজোঁ করে ব্যাংক ঋণ পেতে সহায়তা করত তারা।
আজাদ রহমান বলেন, ভুয়া এনআইডি তৈরির মাধ্যমে প্রবাসে থাকা এমন অনেক ব্যক্তির অজান্তেই নিজের পৈতৃক সম্পত্তি তার ভাইবোনরা রেজিস্ট্রেশন করে নেয়। নতুনভাবে নিবন্ধিত ভোটারদের কাছে ফোন দিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পরিচয় দিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া ছিল চক্রটির কাজ। বায়োমেট্রিক আপলোড দ্রুত করার জন্য অর্থ গ্রহণসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নাম ব্যবহার করে সাধারণ সেবাগ্রহীতার সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিল চক্রটি। সাধারণ আবেদনকারীদের কাছ থেকে বেশি টাকার বিনিময়ে অবৈধভাবে এনআইডির সংশোধনের কাজ করে আসছিল। নির্বাচন কমিশন অফিসে কর্মরত অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রত্যক্ষ সহায়তায় আবেদনকারীদের প্রকৃত বয়স কমিয়ে জন্মসনদ ও এনআইডির তথ্য পরিবর্তনের জন্য মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিত।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের নামে শেরেবাংলা নগর থানায় জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইনে মামলা করেছেন এক ভুক্তভোগী। তাদের আদালতে তুলে রিমান্ড আবেদন করে সিআইডি। পরে আদালত তিনজনকে রিমান্ডে পাঠিয়েছেন। বাকি তিনজনকে করাগারে পাঠানো হয়েছে বলে জানান সিআইডির মুখপাত্র।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।