সাইফুল ইসলাম : মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার দক্ষিণ চারিগ্রামের উজ্জ্বল হোসেন একজন ভূমিহীন। ঘর পেয়েছেন সরকারের আশ্রয়ণ প্রকল্পে। তার একমাত্র ছেলে সজল আলী বাকপ্রতিবন্ধী। ছেলেকে বিয়েও করিয়েছিলেন তিনি। ছয় বছরের এক নাতি আছে তার। স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় পড়াশোনা করে সে। তবে দুঃখের বিষয় প্রতিবন্ধী হওয়ায় বউ তার ছেলেকে ছেড়ে চলে গেছে। ফলে সংসারের ঘানি টানতে ভিক্ষাবৃত্তির পথ বেছে নেন সজল। তবে ভিক্ষার আয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয় তাকে।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) জেলা সমাজসেবা কার্যালয় থেকে সজল আলীকে ব্যাটারিচালিত একটি অটোরিকশা দেওয়া হয়েছে। শুধু সজল আলী নয়, তার মতো আরও ছয়জনকে ভিক্ষুক পুনর্বাসন কর্মসূচির আওতায় কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হয়। এদের মধ্যে পাঁচজনকে মুদি দোকান ও একজনকে গবাদী পশু খাদ্যের দোকানের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়।
মুদি দোকানপ্রাপ্ত পাঁচজন হলেন- সিংগাইর পৌরসভার নয়াডিঙ্গি এলাকার রুকমানের মেয়ে ফাতেমা বেগম, জামশা ইউনিয়নের উত্তর জামশা এলাকার গৈজুদ্দিনের ছেলে সমসের আলী, জয়মন্টপ ইউনিয়নের ভূমদক্ষিণ এলাকার সোবহান মোল্লার মেয়ে সালেহা খাতুন, পূর্ব ভাকুম এলাকার মঙ্গল মোল্লার মেয়ে গোনাই বিবি ও চান্দইর ইউনিয়নের পাড়াগ্রাম এলাকার নবীব মিয়ার মেয়ে মোমেনা। এছাড়া বলধারা ইউনিয়নের বড়বাকা এলাকার সিদ্দিক আলীর ছেলে আজমত আলীকে দেওয়া হয় গবাদী পশু খাদ্যের দোকান।
রিকশা পেয়ে খুশি সজল ও তার পরিবার। তার বাবা উজ্জ্বল হোসেন বলেন, সরকার আমার ছেলেকে একটি রিকশা কিনে দিয়েছে। আমার ছেলে এখন আর ভিক্ষা করবে না। আমি বাবা হিসেবে এখন বলতে পারব, আমার ছেলে এখন রিকশা চালায়।
জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আব্দুল বাতেন বলেন, সরকারি নির্দেশনায় ভিক্ষুকদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দেওয়া হচ্ছে। এর অংশ হিসেবে সিংগাইর উপজেলার ৭ জন ভিক্ষুককে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হলো।
জেলা প্রশাসক ড. মানোয়ার হোসেন মোল্লা বলেন, সমাজে কেউ যেন অবহেলিত না থাকে সেই লক্ষে ভিক্ষুকদের পুনর্বাসন এবং কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দেওয়া হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় আজ সিংগাইর উপজেলায় ৭ জন ভিক্ষুককে পুনর্বাসন করা হয়েছে। ৬ জনকে বিভিন্ন ধরনের দোকান দেয়া হয়েছে এবং একজনকে অটোরিকশা দেয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে আরও ভিক্ষুককে পুনর্বাসন করার পরিকল্পনা রয়েছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমদ চৌধুরী। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন- অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আলী, সিংগাইর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুল হাসান সোহাগ, সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো. হাবেল উদ্দিন ও উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মো. মনজুরুল ইসলাম প্রমুখ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।